ক্যাপাসিটি চার্জকে ‘লুটেরা মডেল’ বলল সরকারি নিরীক্ষা সংস্থা

স্টার ফাইল ফটো

বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়ার প্রথা এক ধরনের 'লুটেরা মডেল' এবং তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত চুক্তির ফল বলে এক প্রতিবেদনে বলেছে পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)।

'এ ধরনের ব্যবস্থা টেকসই নয়', প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

সরকার গত ১৪ বছরে ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ ৯০ হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করেছে, যা প্রতি বছরই ক্রমান্বয়ে বাড়ছে।

গত ১২ বছরে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) লোকসান হয়েছে এক লাখ ৫৪ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। তবে শুধুমাত্র ২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ অর্থবছরে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে এক লাখ ১৩ হাজার ৫৩২ কোটি টাকা। অর্থাৎ আগে এক বছরে যে লোকসান হতো, এখন প্রতি ২ মাসে সেই পরিমাণ লোকসান হবে পিডিবির।

ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধের ব্যবস্থা না থাকলে বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগ আসবে না, এটা দাবিটি 'মিথ্যা' বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য কেবল ২টি শর্তই যথেষ্ট—বেসরকারি বিদ্যুৎ উত্পাদনকারীদেরকে স্থানভেদে ২৫ থেকে ৫০ শতাংশ বেশি দামে বিদ্যুৎ বিক্রির অনুমতি দেওয়া এবং উত্পাদিত বিদ্যুতের এক-চতুর্থাংশ বা অর্ধেকের ন্যূনতম বিক্রির নিশ্চয়তা দেওয়া।

প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দেশে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতার মাত্র ৫৬ শতাংশ ব্যবহার করা হচ্ছে।

এতে বলা হয়, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের জন্য উচ্চমূল্য পরিশোধ, ক্যাপাসিটি চার্জ, জ্বালানি সরবরাহ ও স্বল্প মূল্যে জমি বিক্রি, সহজ ব্যাংক ঋণ, শুল্কমুক্ত আমদানির সুযোগ ইত্যাদি বন্ধ না করা পর্যন্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে তহবিল সংকটের কোনো সমাধান হবে না।

প্রতিবেদনে বিদ্যুৎ খাতের এই অবস্থার পেছনে ২০১০ সালের ইনডেমনিটি অ্যাক্টকেও দায়ী করা হয়েছে।

'এটি জবাবদিহিতার ক্ষেত্রে একটি বাধা—কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্রের ইউনিট প্রতি উৎপাদন খরচ ১০০ টাকা ছাড়িয়ে যায়। এ ধরনের অপকর্ম অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।'

প্রতিবেদনে পিডিবি, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ, ডেসকো, ডিপিডিসি, নেসকো, স্রেডা, ইজিসিবি, পাওয়ার সেল, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড, আরপিসিএলসহ ২০১৩ সাল থেকে নেওয়া ৬৭টি বিদ্যুৎ বিভাগের প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়।

সেগুলো পর্যালোচনা করে বর্তমান পরিস্থিতি 'হতাশাজনক' বলে উল্লেখ করা হয়েছে আইএমইডির প্রতিবেদনে।

৭ বছর পেরিয়ে গেলেও কিছু কিছু প্রকল্পের বাস্তবায়ন মাত্র ১০ শতাংশ। প্রথম বছরে কোনো প্রকল্পেরই অগ্রগতি হয়নি।

বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণ অবকাঠামো বাস্তবায়নের জন্য আলাদা সংস্থা থাকলেও তাদের মধ্যে সমন্বয় না থাকায় সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থার অভাবে কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্রকে নির্মাণ শেষেও অলস বসে থাকতে হয়।

Comments

The Daily Star  | English

3 die of dengue as daily hospitalisations hit record high this year

Nearly 500 patients admitted in 24 hours as total cases rise to 12,763

1h ago