তিতাস ও বাখরাবাদে গ্যাসকূপ খননে চীনা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি

ছবি: সংগৃহীত

তিতাস ও বাখরাবাদ গ্যাসক্ষেত্রে দুটি গভীর অনুসন্ধানমূলক গ্যাসকূপ খননের জন্য চীনা প্রতিষ্ঠান সিসিডিসির (সিএনপিসি চংচিং ড্রিলিং ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড) সঙ্গে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেড (বিজিএফসিএল)। 

দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো উচ্চচাপ ও উচ্চ তাপমাত্রার এই গ্যাসকূপদ্বয় খননের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ গভীর স্তর থেকে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের নতুন দিগন্ত উন্মোচনের প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় পেট্রোবাংলা সদর দপ্তরের বোর্ডরুমে অনুষ্ঠিত চুক্তি সই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান ও সরকারের অতিরিক্ত সচিব মো. রেজানুর রহমান। অনুষ্ঠানে পেট্রোবাংলা, বিজিএফসিএল, বাপেক্স ও চীনা প্রতিষ্ঠান সিসিডিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

চুক্তিতে বিজিএফসিএলের পক্ষে সই করেন কোম্পানির সচিব মো. মোজাহার আলী এবং সিসিডিসির পক্ষে সই করেন কোম্পানির সিইও লি জিয়াওমিং।

চুক্তি অনুযায়ী, তিতাস-৩১ ডিপ (৫,৬০০ মিটার) এবং বাখরাবাদ-১১ ডিপ (৪,৩০০ মিটার) কূপ দুটি খননে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৯ দশমিক ৫২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫৯৪ কোটি ২৫ লাখ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সময়কাল নির্ধারণ করা হয়েছে ২০২৫ সালের জুলাই থেকে ২০২৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।

প্রকল্পের আওতায় কূপ খনন ছাড়াও ভূমি অধিগ্রহণ, গ্যাস গ্যাদারিং পাইপলাইন নির্মাণসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক কার্যক্রমও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। সম্পূর্ণ প্রকল্পের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৯৮ কোটি টাকা, যার মধ্যে সরকারি ঋণ ৫৫৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা এবং বিজিএফসিএলের নিজস্ব অর্থায়ন ২৩৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা।

চুক্তি অনুসারে খননযোগ্য কূপ দুটি দেশের গ্যাস অনুসন্ধানে এক নতুন মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে। কূপগুলোতে রিজার্ভারের চাপ প্রায় ১৫ হাজার পিএসআই এবং তাপমাত্রা প্রায় ৩৯০ ডিগ্রি ফারেনহাইট—যা বাংলাদেশের জন্য একেবারেই নতুন অভিজ্ঞতা। এর আগে, বাংলাদেশে ওভারপ্রেশার জোনের নিচে এত উচ্চচাপ ও তাপমাত্রায় কূপ খনন করা হয়নি।

উল্লেখ্য, বাপেক্স কর্তৃক ২০১১-১২ সালে পরিচালিত থ্রিডি সাইসমিক জরিপ এবং ২০১৯-২০ সালে সিএনপিসি-বিজিপি দ্বারা ডেটা পুনর্মূল্যায়নের ভিত্তিতে এই অনুসন্ধান প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। ভূতাত্ত্বিক ও ভূ-ভৌতিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে তিতাসে চারটি এবং বাখরাবাদে দুটি স্তরে ড্রিলিংয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

খনন সম্পন্ন হলে তিতাস-৩১ ডিপ কূপ থেকে দৈনিক প্রায় ১৫ মিলিয়ন ঘনফুট এবং বাখরাবাদ-১১ ডিপ কূপ থেকে দৈনিক প্রায় ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এই প্রকল্প সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে দেশের বিদ্যমান গ্যাস সংকট মোকাবিলায় উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

Comments

The Daily Star  | English

Students’ unions: Legal bars, admin delays stall polls in many universities

Of 56 public universities across the country, only seven have the legal provision for a central students' union

9h ago