চট্টগ্রামে বনের জমি দখল করে মাটি-টা রিসোর্টের স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ

কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বন বিভাগের মামলা
মাটি-টা রিসোর্ট | ছবি: ফেসবুক পেজ থেকে সংগৃহীত

চট্টগ্রামের ভাটিয়ারী এলাকায় বনভূমির সীমানা নির্ধারণ নিয়ে বন বিভাগ ও মাটি-টা রিসোর্টের মালিকের মধ্যে বিরোধ দেখা দিয়েছে।

বনের জমিতে স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগে বন বিভাগ রিসোর্ট মালিকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছে। অন্যদিকে, রিসোর্টের মালিক তাসনীম মাহমুদ দাবি করেছেন, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অসত্য। আদালতে তিনি মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেছেন।

বন বিভাগের তথ্য অনুসারে, বিরোধপূর্ণ জমিটি চট্টগ্রাম বন বিভাগের (উত্তর) কুমিরা ফরেস্ট রেঞ্জের অধীনে দক্ষিণ জঙ্গল সোনাইছড়ি রক্ষিত বনের অংশ। ২০১১-১২ অর্থবছরে এই জমিতে রোপণ বন বিভাগ।

মামলার এজাহার অনুসারে, জমি নিয়ে বিরোধ নিরসনে বন বিভাগ ২০২১ সালের মার্চে তাসনীম মাহমুদকে একটি চিঠি পাঠিয়েছিল। রিসোর্ট মালিক দুই দফা সময় নিয়েও জমির সীমানা নির্ধারণ করেননি।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারী ইউনিয়নে ২০১৯ সালে মাটি-টা রিসোর্ট যাত্রা শুরু করে। পাহাড় ও সমতল ভূমি মিলিয়ে এই উপজেলাটি।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, বন বিভাগের একটি টহল দল ২০২১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পায়, বনায়নের অন্তত ২৫টি পরিপক্ক গাছ কেটে বনভূমির একটি অংশ দখল করার চেষ্টা করেছে রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ। এর পরিপ্রেক্ষিতে রিসোর্ট মালিকের বিরুদ্ধে বিদ্যমান বন আইনের ৩৩ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়।

চট্টগ্রাম বন বিভাগের (উত্তর) সহকারী বন কর্মকর্তা সফিউল করিম মজুমদার মামলাটি পরিচালনা করছেন। তিনি বলেন, 'চট্টগ্রামের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ষষ্ঠ আদালত ইতোমধ্যে মাটি-টা রিসোর্টের মালিকের বিরুদ্ধে বনভূমি দখলের অভিযোগে দায়ের করা মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছেন।'

তাসনীম মাহমুদ ডিসচার্জ পিটিশনে বলেছেন, তিনি রিসোর্ট তৈরির জন্য বনভূমি দখল করেননি। বন বিভাগ তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে এবং তারা আদালতে একটি মিথ্যা তদন্ত প্রতিবেদনও জমা দিয়েছে।

আবেদনে তিনি আরও বলেন, ঘটনার দিন তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তিনি কাউকে বন দখলের নির্দেশ দেননি।

উল্লেখ্য, তাসনীম মাহমুদ ব্যবসায়ী শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সাবেক সভাপতি মাহবুবুল আলমের জামাতা।

অভিযোগপত্র গ্রহণের পর তাসনীম মাহমুদ মামলা থেকে অব্যাহতি প্রথমে বিচারিক আদালতে আবেদন করেছিলেন। আদালত সেই আবেদন বাতিল করে দিলে গত এপ্রিলে তিনি চট্টগ্রাম জজ আদালতে আবেদন করেন।

এই বিষয়ে মতামত জানতে তাসনীম মাহমুদের মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও প্রতিবারই বন্ধ পাওয়া যায়।

তবে তার আইনজীবী ইএম রকিবুল আলম চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার মক্কেল নির্দোষ। তিনি আইনকে শ্রদ্ধা করেন। তাই আমরা উর্ধ্বতন আদালতে আবেদন করেছি। ইতোমধ্যে জজ আদালত আমাদের আপিল গ্রহণ করে শুনানি তারিখ নির্ধারণ করেছেন।

চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) জয়নুল আবেদীন ডেইলি স্টারকে বলেন, নথিপত্র অনুসারে রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ বনভূমির একটি অংশে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে তাদের দখলে নিয়েছে।

বনভূমিতে নির্মিত স্থাপনাগুলো কেন এখনো উচ্ছেদ করা হচ্ছে না জানতে চাইলে এসিএফ বলেন, তারা জমি চিহ্নিত করে স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করবেন।

'আমরা জমির সীমানা নির্ধারণে কাজ করছি,' যোগ করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Khaleda leaves London for Dhaka in air ambulance

Fakhrul urges BNP supporters to keep roads free, ensure SSC students can reach exam centres

7h ago