চিত্রা নদীতে ধরা পড়ল বিরল প্রজাতির কুমির

নড়াইলের কালিয়া উপজেলায় চিত্রা নদীতে ধরা পড়েছে বিরল প্রজাতির প্রায় ৬ ফুট লম্বা একটি কুমির। ছবি: ইউএনবি

নড়াইলের কালিয়া উপজেলায় চিত্রা নদীতে ধরা পড়েছে বিরল প্রজাতির প্রায় ৬ ফুট লম্বা একটি কুমির।

সোমবার বিকেলে কালিয়া উপজেলার খড়রিয়া গ্রামের জোবায়ের বিশ্বাসের ইটভাটা সংলগ্ন চিত্রা নদী থেকে গ্রামবাসী জাল দিয়ে কুমিরটি ধরেন।

এর আগে চিত্রা নদীতে কুমির ভাসতে দেখা গেছে বলে এলাকায় গুঞ্জন ছড়িয়েছিল।

কুমিরটিকে জালে আটকে ডাঙায় তুলে পেড়লী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চত্ত্বরে রাখা হয়। এসময় কুমির দেখতে সেখানে শতশত উৎসুক জনতা ভিড় করেন।

পরে বনবিভাগে খবর দিলে সন্ধ্যায় এসে কুমিরটি নিয়ে যান কর্মীরা। 

জানা গেছে, ১৩ অক্টোবর কুমিরটি স্থানীয়দের নজরে আসার পর চিত্রা নদীতে কুমিরের আগমনের খবরে স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক চাঞ্চল্যের পাশাপাশি আতঙ্কও তৈরি হয়। কুমিরটিকে বিরক্ত না করতে এবং অহেতুক আতঙ্কিত না হওয়ারও পরামর্শ দেয় কর্তৃপক্ষ। অনেকে সেটি দেখতে ছুটে যান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার দুপুরে জনৈক জোবায়ের বিশ্বাসের ইটভাটা সংলগ্ন নদীর পাড়ের চরে শ্রমিকরা বৃহৎ আকৃতির কুমির দেখতে পেয়ে আৎকে ওঠেন। এরপর গ্রামবাসী সবাই মিলে জাল দিয়ে ঘেরাও করে কুমিরটিকে আটক করে।

এসময় কুমিরের কামড়ে খড়রিয়া গ্রামের সরোয়ার বিশ্বাস (৬০), আমিনুর রহমান (৪৫), টুলু শিকদার (৩৫) সহ সাতজন জখম হয়।

আহতদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

তারা আরও জানান, কুমিরটি প্রায় ৫/৭ ফুট লম্বা হবে। চিত্রা নদীতে কয়েকমাস ধরে এটিকে বিভিন্ন স্থানে ভাসতে দেখা যায়।

ইতিমধ্যে নদীতে পানি কমতে থাকায় এবং শীতকাল হওয়ায় রোদ পোহাতে সেটি ডাঙার দিকে চলে এসেছিল।

এ ব্যাপারে পেড়লী ইউপি চেয়ারম্যান মো. জারজিদ মোল্যা বলেন, সোমবার দুপুর ১টার দিকে স্থানীয়রা কুমিরটি দেখতে পেয়ে অন্যদের খবর দেয়। এরপর খড়রিয়া গ্রামের আজিমুল মোল্যাসহ ১০/১২জন মিলে চারদিকে বড় জাল দিয়ে ঘেরাও করে কুমিরটিকে আটক করে। এরপর সেটি ইউপি চত্ত্বরে নিয়ে আসলে আমার হেফাজতে রাখা হয়। পরে সন্ধ্যার দিকে কালিয়া উপজেলা সামাজিক বন বিভাগের সহযোগিতায় বন্যপ্রাণি সম্প্রসারণ ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের খুলনা রেঞ্জ অফিসারের নিকট সন্ধ্যার পূর্বে লিখিতভাবে হস্তান্তর করা হয়।

কালিয়া উপজেলা সামাজিক বন বিভাগের ফরেস্টার আমজাদ হোসেন বলেন, 'কুমিরটিকে আটক করতে পারার খবর পেয়ে বন্যপ্রাণি সম্প্রসারণ এবং প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ খুলনার রেঞ্জ অফিসার মাহিনুর রহমান এসে কুমিরটি সন্ধ্যার আগে নিয়ে গেছেন।'

এটি মিঠাপানির বিরল প্রজাতির ঘড়িয়াল বলে মনে করছেন তারা।

কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ তাসমীম আলম বলেন, 'আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘড়িয়ালটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। এরপর কালিয়া উপজেলা সামাজিক বন বিভাগের সঙ্গে কথা বললে তারা বন্যপ্রাণী সস্প্রসারণ এবং প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের খুলনা অঞ্চলের কর্মকর্তাদের কাছে সেটি হস্তান্তর করা হয়।'

Comments

The Daily Star  | English
education in Bangladesh

As a nation, we are not focused on education

We have had so many reform commissions, but none on education, reflecting our own sense of priority.

15h ago