বাড়িতে উঠে আসা পদ্মার কুমিরের কামড়ে আহত নারী হাসপাতালে

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পারুলী বেগম। ছবি: স্টার

ফরিদপুরে কুমিরের কামড়ে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন পারুলী বেগম (৫৫) নামের এক নারী।

আজ শনিবার ভোরে ফরিদপুর সদর উপজেলার নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের মনসুরাবাদ গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

আহত পারুলী বেগম বর্তমানে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছে। তার হাতে ও পায়ে কামড়ের ক্ষত রয়েছে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নর্থচ্যানেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাকুজ্জামান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিষয়টি উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও বন বিভাগকে জানানো হয়েছে।'

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত পারুলী বেগম জানান, আজ ভোরে ফজর নামাজের সময় হাঁস-মুরগির ডাকে তার ঘুম ভাঙে। শেয়াল এসেছে ভেবে তিনি তা দেখতে যান। গিয়ে মুরগির খোপের বাইরে লাগানো জালে কিছু একটা আটকে থাকতে দেখেন তিনি। বুঝতে না পেরে সেটিকে জাল থেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতেই কুমির কামড়ে দেয় তাকে। তখনই তিনি চিৎকার করে অজ্ঞান হয়ে যান।

পারুলী বেগমের চিৎকারে ঘরের বাইরে এসে তার স্বামী রাজ্জাক শেখ (৬২) তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। কুমিরটি তখনো তার পাশেই ছিল। রাজ্জাক বলেন, 'এ সময় বাঁশ দিয়ে কুমিরটিকে বাড়ি দিলে সেটি পাশের পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে পড়ে।'

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এনামুল হক জানান, পারুলী বেগম এখন শঙ্কামুক্ত।

মনসুরাবাদ গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, গত বছরেও এই ইউনিয়নে হাঁস ধরে খাওয়ার সময় একটি কুমির মানুষের তাড়া খেয়ে একটি পুকুরে আশ্রয় নেয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি যশোর থেকে একটি দল এসে ৫ দিনের চেষ্টায় কুমিরটি উদ্ধার করে।

নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তাকুজ্জামানের ভাষ্য, পদ্মাবেষ্টিত ও চর অধ্যুষিত এই ইউনিয়নের বাসিন্দারা গত বছরেও কুমিরের আতঙ্কে ছিলেন।

এবারও পুকুরে লুকানো কুমিরটি উদ্ধারে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ফরিদপুরের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা গোলাম কুদ্দুস ভুঁইয়া বলেন, 'বিষয়টি খুলনার বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে । সেখান থেকে দ্রুত একটি প্রতিনিধি দল আসবে কুমিরটি নিয়ে যেতে ।'

এর পাশাপাশি যে পুকুরটিতে পারুলী বেগমকে কামড় দেওয়া কুমিরটি আশ্রয় নিয়েছে, সেখানে লাল পতাকা টানিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে জানান গোলাম কুদ্দুস। যাতে সেখানে গোসল করতে নেমে অন্য কেউ বিপদে না পড়েন।

এই বন কর্মকর্তা বলেন, 'পানিতে থাকা অবস্থায় কুমির ধরা একটি কঠিন ব্যাপার। কুমিরটি পাড়ে ওঠার অপেক্ষায় থাকতে হবে।'

গোলাম কুদ্দুসের ধারণা, এটি একটি নোনা পানির কুমির। তিনি আরও বলেন, 'বর্তমানে এই কুমিরের পরিমাণ বেড়েছে। এ জন্য নদীর পানিতে নামার ব্যাপারেও সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Israeli strike hits military base south of Tehran

An Israeli attack on Saturday in Iran's west killed at least five army personnel and wounded nine others, Iranian media reported

2h ago