পিরোজপুর

খালের অবৈধ বাঁধ অপসারণের পক্ষে-বিপক্ষে পাল্টাপাল্টি মানববন্ধন

মানববন্ধন
বাঁধ অপসারণের দাবিতে (বামে) ও বাঁধ রক্ষার (ডানে) দাবিতে মানববন্ধন। ছবি: সংগৃহীত

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার মিরুখালী ইউনিয়নের বাদুরা গ্রামে কয়েকটি খালের অবৈধ বাঁধ অপসারণের পক্ষে ও বিপক্ষে পাল্টাপাল্টি মানববন্ধন হয়েছে। 

বাঁধগুলো অপসারণের দাবিতে ৫টি গ্রামের ভুক্তভোগীরা গতকাল শনিবার গাজীরহাটে মানববন্ধন করেন। 

এরপর আজ রোববার সকালে বাঁধগুলো রক্ষার দাবিতে বাদুরা গ্রামে স্থানীয় একটি মাদ্রাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা আরেকটি পাল্টা মানববন্ধন করেন। 
 
শনিবার সকালে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বাদুরা, বড় শৌলা, ছোট শৌলা, ভগীরাথপুর ও গোপখালী গ্রামের ভুক্তভোগীরা অংশ নেন। 

তাদের অভিযোগ, স্থানীয় প্রভাবশালী আবুল কালাম শরীফ অবৈধভাবে বলেশ্বর ও বিষখালী নদীর সংযোগ খালে একাধিক বাঁধ দিয়ে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছে। এতে ওই এলাকার কয়েক হাজার হেক্টর জমিতে আমন মৌসুমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় কৃষকরা ফসল ফলাতে পারছেন না।

অবৈধ বাঁধ
ভাড়ানী খালে বেগম শেখ ফজিলাতুনন্নেসা মহিলা কামিল মাদ্রাসা সংলগ্ন এলাকায় বাঁধ দিয়ে খাল ভরাট করা হয়েছে। ছবি: স্টার

এছাড়া এতে ওই এলাকায় শুকনো মৌসুমে পানির চরম সংকট দেখা দিচ্ছে। এ অবস্থায় শিগগির খালের বাঁধগুলো খুলে দেওয়ার দাবি জানান তারা।
 
অন্যদিকে বাঁধগুলো রক্ষার দাবিতে মানববন্ধনে বেগম শেখ ফজিলাতুনন্নেসা মহিলা কামিল মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক অধ্যক্ষ আবুল কালাম শরীফ দাবি করেন, মাদ্রাসায় যাতায়াতের সুবিধার্থে খালে একটি বাঁধ দেওয়া হয়েছে। বাঁধটি না থাকলে শিক্ষার্থীদের মাদ্রাসায় যাতায়াত মারাত্মক বিঘ্নিত হয়। 

সরেজমিনে দেখা যায়, মাদ্রাসার সামনেই একটি লোহার পুল আছে। এছাড়া কাছেই আরেকটি সেতু আছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের অর্থায়নে নির্মাণ করা। এরপরেও বালু ও মাটি দিয়ে মাদ্রাসার সামনের খালটির পুরো অংশ ভরাট করা হয়েছে।

প্রায় দেড় যুগ আগে উপজেলার ধানীসাফা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মোশারেফ হোসেন আকন ভাঙ্গাপুল এলাকায় ভাড়ানী খালের প্রবাহ বন্ধ করে একটি স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করেন।

পরে ওই বাঁধের ওপর দিয়ে পাকা রাস্তা তৈরি করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ। 

প্রায় একযুগ আগে আমন ধান রক্ষায় বাদুরা গ্রামের ভূতার খালে স্বেচ্ছাশ্রমে একটি বাঁধ নির্মাণ করে স্থানীয়রা। তবে প্রতি বছর আমন ধান সংগ্রহের পর বাঁধটি কেটে দেওয়া হলেও, সেটি এখন আর অপসারণ করতে দেওয়া হয় না। বরং ভূতার খালের মুখে আরেকটি বাঁধ নির্মাণ করা হয়।

পরে সেই বাঁধের উপর দিয়েও পাকা সড়ক নির্মাণ করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। 

এভাবে ভাড়ানী খালের আশপাশে ডাক্তারবাড়ি, ধোপার খাল ও অহেদাবাদসহ বিভিন্ন স্থানে অন্তত ১১টি বাঁধ দেওয়া হয়েছে। 

স্থানীয়রা জানান, বাঁধগুলো অপসারণ করা না হলে তাদের দীর্ঘস্থায়ী ভোগান্তিতে পড়তে হবে। ভাড়ানী খালের বাঁধ অপসারণ করা হলে অন্য বাঁধগুলো অপসারণ করা সহজ হবে বলে জানান তারা।
 
সূত্র জানায়, বাদুরা গ্রামে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে এলেও আবুল কালামের বাঁধার মুখে মাদ্রাসা সংলগ্ন এলাকায় কোনো কাজ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। 

জানতে চাইলে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের পিরোজপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবে মাওলা মেহেদী হাসান দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, খালের অবৈধ বাঁধগুলো অপসারণের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। নির্দেশ পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 
 

Comments

The Daily Star  | English

How Chattogram built its economic legacy

Picture a crowded harbour where the salty seabreeze carries whispers of far-off lands, where merchants of all creed and caste haggle over silks and spices, and where towering ships of all varieties – Chinese junks, Arab dhows, and Portuguese carracks – sway gently in the waters of the Bay of Bengal.

14h ago