যমুনায় অসময়ের ভাঙন, বিলীন অর্ধশতাধিক বাড়ি

যমুনায় ভাঙন
সিরাজগঞ্জের চৌহালি উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের বিনানাইয়ে যমুনার অসময়ের ভাঙন। ছবি: সংগৃহীত

সিরাজগঞ্জের চৌহালি উপজেলার মানুষের জন্য নদীভাঙন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। বছরের বেশিরভাগ সময় ভাঙনের ঝুঁকি থাকলেও শীতকালে শান্ত থাকে যমুনা, ঝুঁকিমুক্ত থাকেন নদীর পাড়ের বাসিন্দারা।

তবে এ বছর হঠাৎ করেই শীতে যমুনা অশান্ত হয়ে উঠেছে, ভাঙনের কবলে পড়েছেন নদীর পাড়ের মানুষ।

চৌহালির বাঘুটিয়া ইউনিয়নের বিনানাই, চর সলিমাবাদ, চর নাকালিয়ায় গত ৩ সপ্তাহ ধরে চলেছে নদীভাঙন। ইতোমধ্যে এসব এলাকার অর্ধশতাধিক বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙনের ঝুঁকিতে আছে আরও অনেক বাড়িঘর, ফসলি জমি ও বেশ কয়েকটি স্থাপনা।

বিনানাই গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল করিম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ভাঙনের সঙ্গে লড়াই করেই আমাদের বেঁচে থাকতে হয়। প্রতি বছর বর্ষায় ভাঙনের তীব্রতা বাড়ে। শীতে নদীর পানি অপেক্ষাকৃত শান্ত থাকে। কিন্তু এ বছর নদী হঠাৎ করেই অশান্ত হয়ে উঠেছে। হঠাৎ করেই ভাঙন শুরু হয়েছে। প্রতিদিনই নদী পাড়ের বিভিন্ন অংশ ভাঙছে।'

যমুনায় ভাঙন
চৌহালির বাঘুটিয়ার ইউনিয়নে যমুনার ভাঙন। ছবি: সংগৃহীত

প্রায় ২ সপ্তাহ আগে নদীতে বাড়িঘর হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে তার পরিবারকে।

একই অবস্থা ওই গ্রামের গৃহবধূ সাজেদা বেগমের। আকস্মিক ভাঙন থেকে বাঁচতে ঘরবাড়ি তুলে নিয়ে অন্যের জমিতে রেখেছেন তিনি। নিজেও আশ্রয় নিয়েছেন সেখানে।

ঘরবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়লেও এখনো কারো সাহায্য পাননি বলে জানান তিনি।

বাঘুটিয়া ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও বিনানাই গ্রামের বাসিন্দা বাবুল সরকার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শীতের এ সময় আকস্মিক ভাঙনে দিশেহারা নদী পাড়ের মানুষ। তারা কারো সাহায্য-সহযোগিতা পাচ্ছে না।'

বাঘুটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিনানাই থেকে চর সলিমাবাদ পর্যন্ত প্রায় ১ কিলোমিটার এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে অর্ধশত বাড়ি ও অনেক পরিমাণ ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙনের ঝুঁকিতে আছে আরও শতাধিক বাড়িঘর ও ৭ প্রতিষ্ঠান।'

যমুনায় ভাঙন
যমুনায় অসময়ে ভাঙন। ছবি: সংগৃহীত

তিনি জানান, ভাঙনরোধে এর আগে সেখানে জিও ব্যাগ ফেলা হলেও, আকস্মিক ভাঙনে সে সব ভেসে গেছে। স্থায়ী ব্যবস্থার জন্য প্রকল্প নেওয়া হলেও এখনো কাজ শুরু হয়নি।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মিলটন হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ইতোমধ্যে নদীর বাম তীরে স্থায়ী সংরক্ষণ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য ৪৬ কোটি টাকার প্রকল্প জমা দেওয়া হয়েছে। এখনো তা অনুমোদন পায়নি।'

তিনি আরও বলেন, 'যমুনার ভাঙন পানি বাড়া-কমার সময়েই হয়। এবার শুষ্ক মৌসুমে উজানের পানি দ্রুত কমে যাওয়ায় নদীর উজানে বাম তীরের মাটি সরে আকস্মিক ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে।'

'ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে' উল্লেখ করে তিনি জানান, ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Comments

The Daily Star  | English

Iran says 'main target' of attack that hit Israel hospital was military site

Iran and Israel traded further air attacks on Thursday as Trump kept the world guessing about whether the US would join Israel's bombardment of Iranian nuclear facilities.

14h ago