সুনামগঞ্জের ৫ খাল রক্ষার নির্দেশ উচ্চ আদালতের
সুনামগঞ্জ শহরের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত পাঁচটি খাল রক্ষায় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরকে বিভিন্ন আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট বেঞ্চ।
রোববার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের বেঞ্চ এসব আদেশ দেন।
সুনামগঞ্জের তেঘরিয়া, বড়পাড়া, কামার, বলাইখালী ও নলুয়াখালী খাল রক্ষায় বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) জনস্বার্থে করা একটি মামলার প্রাথমিক শুনানি শেষে বেঞ্চ আদেশ দেন।
আদেশে খালগুলোর প্রকৃত প্রবাহ অনুযায়ী সীমানা নির্ধারণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে খালগুলোর দখলদারদের পূর্ণ তালিকা প্রস্তুত ও তাদের খালের জায়গা থেকে উচ্ছেদ করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এসব নির্দেশ বাস্তবায়ন করে ৬ মাসের মধ্যে প্রতিবেদন প্রস্তুত করে আদালতে কমা দেওয়ার নির্দেশের পাশাপাশি এই ৫ খাল রক্ষায় বিবাদীদের ব্যর্থতাকে কেন বেআইনি এবং জনস্বার্থ পরিপন্থী বলা হবে না, তা জানতে রুলও জারি করেন আদালত।
উচ্চ আদালত খালগুলোতে থাকা সকল দখলদার ও ক্ষতিকর স্থাপনা উচ্ছেদ করে কেন খালগুলোকে রক্ষা, পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণের নির্দেশ দেওয়া হবে না, তাও জানতে চেয়েছেন।
ভূমি মন্ত্রণালয়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন, পরিবেশ অধিদপ্তর ও পানি উন্নয়ন বোর্ডর মহাপরিচালকদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এছাড়াও বিবাদী হিসেবে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসন, পুলিশ সুপার, পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেটের পরিচালক, সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র, সুনামগঞ্জ সদরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী, সুনামগঞ্জ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ও সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সহকারী কমিশনারের (ভূমি) নামও উল্লেখ করা হয়েছে আদেশে।
বেলার পক্ষে মামলার শুনানি করেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ আশরাফ আলী এবং তাকে সহযোগী ছিলেন আইনজীবী এস হাসানুল বান্না।
সুনামগঞ্জ শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত এসব খাল শহরের পানি নিষ্কাশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এ খালগুলো বেদখল করে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা ও রাস্তা গড়ে উঠেছে।
এতে খালগুলো সরু নালায় পরিণত হয়ে নাব্যতা সংকটে ভুগছে এবং কোথাও কোথাও সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে। এতে বর্ষা মৌসুমে শহরে মারাত্মক জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।
এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে খালগুলো সংরক্ষণে বেলা জনস্বার্থে এ মামলা করেছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটির আইনজীবী ও সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট এ হাসানুল বান্না জানিয়েছেন।
Comments