পাখির নিরাপত্তা নিশ্চিতে কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া গাছ কাটা নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবি বেলার

পাখির নিরাপত্তা নিশ্চিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পূর্ব অনুমোদন ছাড়া গাছ কাটা নিষিদ্ধ ঘোষণা ও তা বহুল প্রচারণার উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানিয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রধান বন সংরক্ষক, ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, বরিশালের উপ বন সংরক্ষকের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)।
আজ রোববার এই চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
চিঠিতে পাখির বিচরণ আছে এমন বৃক্ষ চিহ্নিত করে সেগুলো সংরক্ষণে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে ঝালকাঠির সদর উপজেলার পূর্ব গুয়াটন গ্রামে তালগাছটি কেটে ফেলা বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি দেশের জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত 'বাবুই পাখির কান্না কেউ শুনল না, কেটে ফেলা হলো তালগাছটি' শীর্ষক সংবাদ বেলার দৃষ্টিগোচর হয়েছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী গত ২৭ জুন ঝালকাঠি জেলার সদর উপজেলার পূর্ব গুয়াটন গ্রামে একটি তালগাছ কেটে ফেলা হয়েছে, যেখানে বাসা বেঁধেছিল বেশ কয়েক জোড়া বাবুই পাখি। তালগাছটি বহু বছর ধরে সেই এলাকার বাবুই পাখিদের প্রধান আশ্রয়স্থল। গাছটি কেটে ফেলার ফলে অসংখ্য বাবুইছানা, ডিম ও বাসা মুহূর্তেই ধ্বংস হয়ে যায়। কেটে ফেলা গাছের নিচে পড়ে থাকে আহত ও মৃত পাখির ছানা ও ভাঙা বাসাগুলো।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তাল গাছটির মালিক গাছটি বিক্রি করলে ক্রেতা গাছটি কেটে ফেলে। গ্রামবাসীদের অনেকে গাছ কাটার বিরোধিতা করলেও কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে গাছটি কেটে ফেলে পাঁচ শতাধিক বাবুই পাখির বাচ্চা, ডিম ধ্বংস করে। সংশ্লিষ্ট বন বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি অবগত হলেও অদ্যাবধি কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
এর আগে ২০২৩ সালে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ফকিরহাটে বটগাছের ডালপালা কেটে আশ্রয়হীন করে দেয় হাজার হাজার চড়ুই আর শালিক পাখিদের এবং ২০২৪ সালে কুষ্টিয়া-মেহেরপুর মহাসড়ক প্রশস্ত করার কারণে অনেকগুলো ছোট বড় গাছ কেটে ফেলা হয়েছে, যার ফলে আশ্রয়হীন হয়ে পরে অনেক পাখি, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, অতীতে এভাবে অনুমোদনহীন গাছ কেটে পাখির আবাসস্থল ধ্বংসের ঘটনার সঠিক ও সুষ্ঠু তদন্তের অভাবে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে, যা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চরম উদাসীনতার পরিচায়ক। বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে পাখির নিরাপত্তা নিশ্চিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পূর্ব অনুমোদন ছাড়া গাছ কাটা নিষিদ্ধ ঘোষণা, বিচরণকৃত বৃক্ষ চিহ্নিতকরণ ও সংরক্ষণ এবং সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে এই চিঠিটি পাঠিয়েছে বেলা।
Comments