মাটির রাস্তা সংস্কার করতে কাটা হলো দেড় শতাধিক গাছ

মাটির রাস্তা পুনর্নির্মাণ করার কাজে রাস্তার দু’পাশের দেড় শতাধিক তালগাছ ও খেজুর গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। ছবি: সোহরাব হোসেন/স্টার

পটুয়াখালীর বাউফলে একটি মাটির রাস্তা পুনর্নির্মাণ করতে গিয়ে রাস্তার দু'পাশের দেড় শতাধিক তালগাছ ও খেজুর গাছ কেটে উপড়ে ফেলা হয়েছে।

শ্রমিক দিয়ে মাটি কেটে রাস্তা পুনর্নির্মাণের কথা থাকলেও, মাটিকাটা মেশিন দিয়ে রাস্তার কাজ করা হচ্ছে এবং ওই মেশিন দিয়েই গাছগুলো উপড়ে ফেলা হয়। 

গত শুক্রবার থেকে এসব গাছ কাটা হয় এবং আজ সোমবার ওই এলাকায় গিয়ে এসব গাছ মাটিতে পড়ে থাকতে দেখা যায়।

স্থানীয়রা জানান, বাউফল উপজেলার বাউফল ইউনিয়নের যৌতা গ্রামের আনছার বিশ্বাসের বাড়ি থেকে ইসমাইল ফকিরের বাড়ি পর্যন্ত ২ হাজার ৫০০ ফুট বা প্রায় ১ কিলোমিটার) রাস্তা পুনর্নির্মাণের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্যের বিশেষ বরাদ্দ থেকে কাবিখা প্রকল্পের আওতায় ১৪ মেট্রিক টন গম বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর সরকারি মূল্য ৫ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। 

প্রকল্পের নিয়মানুযায়ী, শ্রমিক দিয়ে মাটি কেটে রাস্তা নির্মাণের কথা। কিন্তু সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের সভাপতি ও সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান লিটু মোল্লা মাটিকাটার মেশিন দিয়ে মাটি কেটে রাস্তার কাজ করছেন। 

আর মাটি কাটতে গিয়ে মেশিন দিয়ে রাস্তার দুই পাশের ছোট-বড় দেড় শতাধিক তাল গাছ ও খেজুর গাছ উপড়ে ফেলা হয়। 

সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, রাস্তার দু'পাশে ৯২টি ছোট-বড় তাল গাছ ও ৫১টি খেজুর গাছ উপড়ে ফেলা হয়েছে এবং সেগুলো রাস্তার পাশে পড়ে আছে। 

প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি কামরুজ্জামান লিটু মোল্লা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কাবিখা প্রকল্পের মাধ্যমে রাস্তা পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে। আর এ কাজ বাস্তবায়ন করতে গিয়ে রাস্তার কিছু তাল গাছ ও খেজুর গাছ কাটতে হয়েছে।'

গাছ কাটা প্রসঙ্গে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন,' বিষয়টি আমি জানি না। কোনোভাবেই রাস্তার পাশের পরিবেশবান্ধব তাল গাছ ও খেজুর গাছ কাটা উচিত নয়। আমি সরেজমিনে গিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।' 

এ প্রসঙ্গে বাউফল উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) রাজিব বিশ্বাস ডেইলি স্টারকে বলেন, বাউফল ইউনিয়নের বাসিন্দা কামরুজ্জামান লিটু মোল্লা রাস্তার কাজটি করেছেন। তাকে রাস্তা পুনর্নির্মাণ করতে বলা হয়েছে, গাছ কাটতে বলা হয়নি।'

উপজেলা বন কর্মকর্তা বদিউজ্জামান সোহাগ বলেন,'কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া গাছ কাটার কোনো নিয়ম নেই। একান্ত প্রয়োজনে গাছ কাটতে হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়ে কাটতে হবে। আমার জানামতে এখানে গাছ কাটার কোনো অনুমোদন নেই।'

যোগাযোগ করা হলে বাউফল উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) বায়েজেদুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি কোনো গাছ কাটার অনুমতি দেইনি। আর আমি অনুমতি দিতেও পারি না। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Correction Before Election?

In recent times, the liberated and much-buoyed Bangladesh Nationalist Party (BNP) has filled the air with demands for an election as early as December 2025. According to the decision of the Interim Government (IG), the election was originally scheduled for April 2026.

29m ago