বিপন্ন বনছাগল উদ্ধার, ছেড়ে দেওয়া হবে রাজকান্দি বনে

বিপন্ন বনছাগল রেড সেরো। ছবি: সংগৃহীত

সিলেট বন বিভাগের সুনামগঞ্জ রেঞ্জের অধীন শক্তিয়ারখলা বিটের ঢুলারা বিজিবি ক্যাম্প এলাকা থেকে উদ্ধার হওয়া বন্য ছাগলটিকে ( রেড সেরো) মৌলভীবাজার লাউয়াছড়া রেসকিউ সেন্টারে হস্তান্তর করা হয়েছে।

বন বিভাগের সহায়তায় উদ্ধার হওয়া এ বনছাগলটি 'আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন)'-এ বিশ্বে বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী হিসেবে তালিকাভূক্ত।

বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞদের মতে, এ প্রজাতির বনছাগল বা সেরো বাংলাদেশে বিরল।

মৌলভীবাজারের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা মির্জা মেহেদী সরোয়ার জানান, প্রথমে সবাই বলছিল এটি হরিণের বাচ্চা। কিন্তু বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করে এটিকে রেড সেরো হিসেবে চিহ্নিত করি।

উদ্ধার হওয়া বনছাগল ছানাটি রেড সেরো। বাসস্থানের ক্ষতি এবং শিকারের জন্যে এ প্রজাতির বনছাগলের অস্তিত্ব পুরো পৃথিবীতে হুমকির মুখে।

উদ্ধারকৃত রেড সেরো। ছবি: সংগৃহীত

মৌলভীবাজারের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা মির্জা মেহেদী সরোয়ার জানান, 'বনছাগল বা সেরো সন্ধ্যা ও খুব ভোরে খেতে বের হয়। সারাদিন লুকিয়ে থাকে বা গর্তে বসে জাবর কাটে। ঝোপ-ঝাড়ে কিংবা পাথুরে ঢালে পালিয়ে থাকে বলে এদের দেখা পাওয়া মুশকিল। এরা এক ধরনের গন্ধগ্রন্থির সাহায্যে গন্ধ ছড়িয়ে টেরিটোরি মার্ক করে রাখে। বনছাগল বাংলাদেশে অত্যন্ত বিপন্ন ও দুর্লভ প্রাণী।

মৌলভীবাজার বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কমকতা ড. জাহাঙ্গীর আলম, জানান, উদ্ধার হওয়া বনছাগলটি গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে লাউয়াছড়া রেসকিউ সেন্টারে স্থানান্তর করা হয়েছে। আমাদের তত্ত্বাবধানে বনছাগল ছানাটি আছে। রাজকান্দি রিজার্ভ ফরেস্টের ছেড়ে দেওয়ার পরিকল্পনা আছে। সব ঠিকঠাক থাকলে আজকেই ছেড়ে দেওয়া হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুনতাসির আকাশ বলেন, আমাদের মৌলভীবাজারেই বনছাগলের চমৎকার বুনো পরিবেশ আছে। এবছরেই আমরা বাচ্চাসহ ছবি পেয়েছি। আশা করি এটাকে সেখানেই ছেড়ে দেওয়া হবে। ক্ষুরযুক্ত প্রাণীদের সহজেই ক্যাপচার স্ট্রেস মায়োপ্যাথি হয়ে মারা যাবার আশঙ্কা থাকে। যথাসম্ভব সহজ করে বাঁধা ও কম নাড়াচাড়া করতে পারলে ভালো। নাকের ডগা থেকে লেজ পর্যন্ত প্রাণীটি ১৭০ সেন্টিমিটার হতে পারে। কাঁধ পর্যন্ত উচ্চতা ৯৫ সেন্টিমিটার।

পুরুষ সেরো প্রায় ১২০ কেজি পর্যন্ত হতে পারে। ২০১৫ সালে আইইউসিএন বাংলাদেশের মূল্যায়ণ অনুযায়ী সেরো বাংলাদেশে বিপন্ন, বিশ্বব্যাপী সংকটাপন্ন। বাংলাদেশে দুই ধরনের সেরো থাকতে পারে, লাল সেরো আর ইন্দো–চায়নিজ সেরো। তবে এ নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন।

Comments

The Daily Star  | English

Govt publishes gazette of 1,558 injured July fighters

Of them, 210 have been enlisted in the critically injured "B" category, while the rest fall under the "C" category of injured fighters

1h ago