ইজারা বাতিল করে যাদুকাটা নদী রক্ষায় বেলার আইনি নোটিশ

নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ফিরিয়ে আনতে এবং নদীর জীববৈচিত্র সংরক্ষণে যাদুকাটা নদীকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে নোটিশে।
অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে যাদুকাটা নদীর পাড় ভাঙছে। ছবি: দ্বোহা চৌধুরী/স্টার

ইজারা প্রথা বাতিল করে সুনামগঞ্জের যাদুকাটা নদী রক্ষায় তিন মন্ত্রণালয়ের সচিব, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ও সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসকসহ ১৩ সরকারি কর্মকর্তাকে আইনি নোটিশ দিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)।

আজ মঙ্গলবার বেলার আইনজীবী জাকিয়া সুলতানা তাদের 'নোটিশ অব ডিমান্ড ফর জাস্টিস' পাঠান। নোটিশে নদীর বালুমহাল বিলুপ্ত ঘোষণার দাবি জানিয়ে নদীর অস্তিত্ব সংকটে ফেলে ধ্বংসাত্মক, অননুমোদিত ও অবৈধ বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।

এছাড়া, নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ফিরিয়ে আনতে এবং নদীর জীববৈচিত্র সংরক্ষণে যাদুকাটা নদীকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।

সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার, পরিবেশ অধিদপ্তর ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুই মহাপরিচালক, সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার, পরিবেশ অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় পরিচালক এবং তাহিরপুর ও বিশ্বম্ভরপুরের দুই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদেরও নোটিশে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

নোটিশে আগামী ৭ দিনের মধ্যে নেওয়া ব্যবস্থা সম্পর্কে বেলাকে অবহিত করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে এবং একইসঙ্গে এর অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।

নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, যাদুকাটা নদী একটি সীমান্ত নদী এবং এ নদীতে দুটি বালুমহাল রয়েছে যা সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন থেকে ইজারা নিয়ে ইজারাগ্রহীতারা বালুমহালের ভেতরে ও বাইরে যত্রতত্র যান্ত্রিক উপায়ে বালু উত্তোলন করেন।

এতে এশিয়ার বৃহত্তম শিমুলবাগানসহ বারেক টিলা, নবনির্মিত সেতু ও আশেপাশের অসংখ্য গ্রাম হুমকির সম্মুখীন। বালু উত্তোলনের ফলে নদীভাঙনের শিকার হচ্ছে অসংখ্য ঘরবাড়ি।

এলাকাবাসী বালুমহাল বন্ধের দাবিতে নানা কর্মসূচি পালন করেছে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়।

নোটিশে বলা হয়, জেলা প্রশাসন এ নদীতে বালুমহাল ইজারা দেওয়ার আগে বালুমহাল ঘোষণা ও ইজারা সংক্রান্ত আইন ও বিধি অনুযায়ী কোনো হাইড্রোগ্রাফিক জরিপ পরিচালনা করা হয়নি এবং পরিবেশ ও প্রতিবেশগত প্রভাব নিরূপণ করা হয়নি যা স্পষ্টত আইনের লঙ্ঘন।

সার্বিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসককে যাদুকাটা নদীর ইজারা বাতিল ও বালুমহাল বিলুপ্তের দাবি জানানো হলেও, তা না করে জেলা প্রশাসক গত ২৫ জানুয়ারি পুনরায় বালুমহাল ইজারা দেওয়ার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।

Comments