ডেঙ্গু: দেরিতে হাসপাতালে ভর্তি, দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হওয়ায় বাড়ছে মৃত্যু

এ বছর মোট ২৮ হাজার ৪৪৩ জন ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে পুরুষ ১৮ হাজার ৫৬ জন এবং নারী ১০ হাজার ৩৮৭ জন।
ছবি: সংগৃহীত

একদিকে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় রোগীদের শয্যা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে শহরের হাসপাতালগুলো। অন্যদিকে গত বছরের তুলনায় এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুহারও দ্রুত বাড়ছে।

বিশেষজ্ঞরা ও চিকিৎসকরা বলছেন, এ বছর মৃত্যুর হার বাড়ার পেছনের মূল কারণ দেরিতে হাসপাতালে ভর্তি ও মশাবাহিত এই ভাইরাসের দ্বিতীয়বার সংক্রমিত হওয়া।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এ বছর মোট ডেঙ্গু রোগীর প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই পুরুষ। তবে মৃতদের মধ্যে নারীর সংখ্যা বেশি।

গতকাল সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় একজন ডেঙ্গু রোগী মারা গেছেন এবং হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অন্তত ৮৯৬ জন। এ নিয়ে এ বছর মোট মৃত্যু হয়েছে ১৫৬ জনের। এর মধ্যে ৮৯ জন নারী ও ৬৭ জন পুরুষ বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

অন্যদিকে এ বছর মোট ২৮ হাজার ৪৪৩ জন ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে পুরুষ ১৮ হাজার ৫৬ জন এবং নারী ১০ হাজার ৩৮৭ জন।

২০১৯ সালে দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ছিল। সেই বছর আক্রান্ত হয়েছিলেন ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন এবং মৃত্যুর হার ছিল দশমিক ১৭ শতাংশ। এ বছর মৃত্যুর হার দশমিক ৫৪ শতাংশ, যা এর আগের চেয়ে বেশি।

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক তাহমিনা শিরিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রোগীর সংখ্যা বাড়লে মৃত্যুও বাড়ে। ডেঙ্গুর দুটি ভিন্ন ধরন নিয়ে দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হওয়া এ বছর মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ার অন্যতম কারণ।'

বিশেষজ্ঞদের মতে, ডেঙ্গু ভাইরাসের ৪টি ধরন রয়েছে: ডেন ১-৪, যা সেরোটাইপ ১-৪ নামেও পরিচিত। এই ৪টি ভ্যারিয়েন্টই বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে পাওয়া গেছে। এ বছর ডেন ১ ও ৩ বাংলাদেশে সক্রিয় রয়েছে।

তাহমিনা শিরিন জানান, আগে একবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন, এমন ব্যক্তি যখন দ্বিতীয়বার অন্য ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হচ্ছেন, তার মৃত্যুঝুঁকি বেশি। তবে শুরুতেই ডেঙ্গু শনাক্ত হলে এবং তাৎক্ষণিক হাসপাতালে ভর্তি হলে তা মৃত্যুঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে সহায়তা করতে পারে।

শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক এইচ এম নাজমুল আহসান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ বছর ডেঙ্গুতে মৃত্যুর হার বেশি হওয়ার প্রধান কারণ হাসপাতালে দেরিতে ভর্তি হওয়া।'

'আবার অনেকে রাজধানীর বাইরের হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিতে গেছেন। কিন্তু সেখানে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা না পেয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় শহরের হাসপাতালে এসে ভর্তি হচ্ছেন। এ ধরনের রোগীর মৃত্যুঝুঁকিও বেশি।'

অনেক বেসরকারি হাসপাতাল ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসায় বাধ্যতামূলক করা জাতীয় গাইডলাইন অনুসরণ করে না বলেও উল্লেখ করেন নাজমুল আহসান।

সংক্ষেপিত: ইংরেজিতে পুরো প্রতিবেদন পড়তে ক্লিক করুন Dengue Outbreak: Deadlier than ever

Comments