থেমে থেমে বৃষ্টি আবার গরম, সেপ্টেম্বরে বাড়তে পারে ডেঙ্গুর প্রকোপ

স্টার ফাইল ছবি

চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃত্যুর সরকারি পরিসংখ্যান গত ২৪ বছরের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী সেপ্টেম্বরজুড়ে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হতে থাকলে ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।  

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এখনই মশা বিরোধী অভিযান জোরদার করার আহ্বান জানিয়ে কীটতত্ত্ববিদরা বলছেন, বর্তমান ডেঙ্গু পরিস্থিতির উন্নতি এবং আগামী বছর ডেঙ্গু সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে হলে এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, সেপ্টেম্বরজুড়ে গরম ও আর্দ্র আবহাওয়ার মধ্যে থেমে থেমে বৃষ্টি হবে। আগামী ১৫ অক্টোবরের পর থেকে শুষ্ক মৌসুম শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আগামী ৩ দিনের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

এদিকে গতকাল শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে আরও ১৫ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে ৭০৬ জন মারা গেলেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৮৭৬ জন। এ নিয়ে চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ লাখ ৪২ হাজার ৫৮৭ জন।

জুলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি ও কীটতত্ত্ববিদ মঞ্জুর চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, থেমে থেমে বৃষ্টিপাত ও উচ্চ আর্দ্রতা এডিস মশার বংশবৃদ্ধির জন্য উপযুক্ত পরিস্থিতি তৈরি করে। থেমে থেমে বৃষ্টিপাতের ফলে ফেলে দেওয়া পাত্রে পানি জমতে পারে যেখানে এডিস মশা ডিম পাড়ে। এছাড়া, উচ্চ আর্দ্রতার সঙ্গে এডিস মশার কামড়ানোর শক্তিশালী যোগসূত্র রয়েছে।'

'ফলে চলতি মাসে ডেঙ্গু সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি,' বলেন তিনি।

বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও কীটতত্ত্ববিদ জিএম সাইফুর রহমান বলেন, '২০০০ সাল থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার কারণে ঢাকা শহরে ডেঙ্গুর হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হতে পারে। তবে, রাজধানীর বাইরে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

'আমরা যদি এডিস মশার বংশবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ না করি, তাহলে এই মৌসুমে এডিস মশার বিপুল সংখ্যক ডিম পাড়ার ঝুঁকি রয়েছে। এই ডিমগুলো পরের মৌসুমে ডিম ফুটে আরেকটি প্রাদুর্ভাব ঘটাতে পারে,' বলেন তিনি।

তিনি জানান, যে সময়টাতে ডেঙ্গু কম ছড়ায় অর্থাৎ নভেম্বর থেকে এপ্রিল মাসে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ডেঙ্গুর সক্রিয় ক্লাস্টারগুলো শনাক্ত করতে হবে।

এই সময়কালে এডিস মশার প্রজনন শৃঙ্খল ভেঙে না যাওয়া পর্যন্ত সোর্স রিডাকশন অর্থাৎ মশা ডিম পাড়তে পারে এমন জায়গা ধ্বংস করা, লার্ভিসাইডিং বা জলাশয়ে বা জলের পাত্রে নিয়মিত রাসায়নিক বা মাইক্রোবায়াল কীটনাশক প্রয়োগ করা এবং প্রাপ্তবয়স্ক মশা মারতে অ্যাডাল্টিসাইড অর্থাৎ কীটনাশক প্রয়োগ করাসহ ব্যাপকভাবে অভিযান চালাতে হবে।

Comments

The Daily Star  | English
Khaleda Zia calls for unity

‘Seize the moment to anchor democracy’

Urging people to remain united, BNP Chairperson Khaleda Zia has said the country must quickly seize the opportunity to institutionalise the democratic system.

7h ago