স্ট্রোক আক্রান্তদের দ্রুত হাসপাতালের নেওয়ার তাগিদ বিশেষজ্ঞদের

পুরো বিশ্বে প্রতি দুই সেকেন্ডে একজন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয় এবং প্রতি ছয় সেকেন্ডে একজন মারা যায়।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে গতকাল বিশ্ব স্ট্রোক দিবস আয়োজন করা হয়। ছবি: সংগৃহীত

কেউ স্ট্রোক করলে দ্রুত হাসপাতালের যাওয়ার তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, কেউ স্ট্রোক করলে দেরি না করে সরকারি হাসপাতাল কিংবা স্ট্রোক সেন্টারে নিয়ে যেতে হবে। কারণ স্ট্রোক পরবর্তী প্রতি মিনিটে ব্রেনের ১৯ লাখ কোষ মারা যায়। এতে মস্তিষ্কের স্থায়ী ক্ষতি হয়। 

পুরো বিশ্বে প্রতি দুই সেকেন্ডে একজন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয় এবং প্রতি ছয় সেকেন্ডে একজন মারা যায়।

'একসাথে আমরা স্ট্রোকের চেয়ে বড়' প্রতিপাদ্য নিয়ে সারা বিশ্বের সঙ্গে একযোগে গতকাল রোববার সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে 'বিশ্ব স্ট্রোক দিবস' উপলক্ষে এক সেমিনার হয়।

এতে স্ট্রোক ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন কার্যক্রম বিষয়ক মূল বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নিউরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. হাসানুজ্জামান। 

তিনি বলেন, 'অনেকে মনে করেন যে স্ট্রোকের কোনো চিকিৎসা নেই। এটি আসলে ভুল ধারণা। স্ট্রোকের চিকিৎসা যত আগে শুরু করা যায়, রোগীরা তত বেশি উপকৃত হবেন। বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনা করলে অদূর ভবিষ্যতে স্ট্রোক রোগী কমবে না বরং বাড়বে।'

ডা. হাসানুজ্জামান বলেন, 'কেউ স্ট্রোক আক্রান্ত হলে দেরি না করে সরকারি হাসপাতাল কিংবা স্ট্রোক সেন্টারে নিয়ে যেতে হবে। স্ট্রোক রোগীর পুনর্বাসন প্রক্রিয়া নিয়েও আমাদের ভাবতে হবে।'

'স্ট্রোকের চিকিৎসা খুবই দীর্ঘমেয়াদী' উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'তবে বর্তমানে আমাদের নিউরোলজি ওয়ার্ডে আধুনিক চিকিৎসা শুরু করেছি। স্ট্রোকের লক্ষণ শুরু হওয়ার ৩ ঘণ্টার মধ্যে আমাদের ওয়ার্ডে থ্রম্বোলাইটিক থেরাপির মাধ্যমে স্ট্রোক সম্পূর্ণ নিরাময় করা সম্ভব। ইতোমধ্যে আমরা ৮ জন রোগীকে আইভি থ্রম্বোলাইসিস দিয়েছি। রোগীরা সুস্থ জীবন যাপন করছেন।'

চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান বলেন, 'চমেক হাসপাতালের নিউরোলজি ওয়ার্ডের চিকিৎসা আগের চেয়ে অনেক উন্নত হয়েছে। এখানে আইভি থ্রম্বোলাইসিস পদ্ধতির জন্য ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়। গরীব রোগীদের পক্ষে এই অর্থ ব্যয় করা খুব কঠিন। আমরা এক্ষেত্রে রোগী কল্যাণ সমিতির কাছ থেকে গরীব রোগীদের জন্য চিকিৎসা ব্যয়ভার বহনের উদ্যোগ নেবো।'

চমেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. আবদুস সাত্তারের সভাপতিত্বে ও সহকারী অধ্যাপক ডা. জাহেদুল ইসলামের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. অংসুইপ্রু মারমা ও নিউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. শিউলি মজুমদার। 

এর আগে নিউরোলজি বিভাগের আয়োজনে চমেকের শহীদ শাহ আলম বীর উত্তম মিলনায়তনে বৈজ্ঞানিক সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা চমেক হাসপাতালের আশপাশের এলাকা প্রদক্ষিণ করে।

Comments