সবজির বাজারে স্বস্তি

‘এক মাসে আগে ৫০০ টাকা নিয়ে বাজারে এলে ব্যাগের অর্ধেক ভর্তি হতো না। এখন ২০০-৩০০ টাকায় ব্যাগ ভরে যাচ্ছে। চালের দাম একটু বেশি। সবজির দাম কম।...’
সবজির দাম
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সবজি দোকান। ছবি: সুমন আলী/স্টার

'এক মাসে আগে ৫০০ টাকা নিয়ে বাজারে এলে ব্যাগের অর্ধেক ভর্তি হতো না। এখন ২০০-৩০০ টাকায় ব্যাগ ভরে যাচ্ছে। চালের দাম একটু বেশি। সবজির দাম কম। তাই ভাতের চেয়ে এখন সবজি বেশি খাচ্ছি,' কথাগুলো বলছিলেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মো. রাকিব।

আজ শুক্রবার অফিস ছুটি থাকায় কারওয়ান বাজারে এসেছেন তিনি। স্ত্রী ও ২ ছেলে-মেয়ে নিয়ে থাকেন রাজধানীর বাংলামোটরে।

কী কী কিনলেন—জানতে চাইলে রাকিব তার ব্যাগ দেখান। তাতে দেখা যায় বেগুন, ফুলকপি, মূলা, গাজর ও নতুন আলু।

দাম জানতে চাইলে মুচকি হাসি তার মুখে। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শীতের সবজি বাজারে আসায়, সবকিছুর দাম কম। সাধ্যের মধ্যে।'

রাকিবের ভাষ্য, সবজির দাম এতটা কমবে তা তিনি আশা করেননি।

একই কথা ব্যবসায়ী আনিসুর রহমানের। তার মতে, এক মাসের ব্যবধানে বাজারে সবজির দাম প্রায় অর্ধেকে নেমেছে। এখন অল্প টাকায় অনেক বেশি বাজার করা যাচ্ছে।

আনিসুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নভেম্বরে সবকিছুর দাম আকাশচুম্বী ছিল। ৫০০ টাকা নিয়ে বাজারে এসে আগে কয়েকটা দোকান ঘুরতাম। এরপর যেখানে ২-১ টাকা কম পেতাম সেখান থেকে কিনতাম। এখন মন ভরে সব কিনতে পারছি।'

আনিসুরের কথার প্রমাণ পাওয়া যায় গত ১৫ নভেম্বরে করা ডেইলি স্টারের 'কোনো কিছুই নেই সাধ্যের মধ্যে' শিরোনামের প্রতিবেদনের সঙ্গে।

নভেম্বরের মাঝামাঝি কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকায়। করলার দামও ছিল একই রকম। এ ছাড়াও, পটল, শিম ও ঢেঁড়স ৫০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে এবং মূলা ৩০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

সবজির দাম
কারওয়ান বাজারে সবজি দোকান। ছবি: সুমন আলী/স্টার

আকারভেদে প্রতি পিস বাঁধাকপি ও ফুলকপি বিক্রি হয়েছে ৫০-৬০ টাকায়। লাউ ৬০-৭০ টাকা, প্রতি কেজি চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, গাজর ১৬০ টাকা, টমেটো ১০০-১২০ টাকা ও শসা ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

আজ কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হয়েছে ৩০-৪০ টাকায়। প্রতি কেজি শসা ৪০-৫০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা, শিম ৩০-৪০ টাকা, মূলা ১৫-২০ টাকা, টমেটো ৪০-৫০ টাকা ও করলা ৪০ টাকা।

প্রতি পিস ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৩০-৪০ টাকা, লাউ ৪০-৫০ টাকা। প্রতি কেজি নতুন আলু ২০ টাকা, পুরাতন আলু ১৬ টাকা, কচুরলতি ৫০ টাকা, বরবটি ৪০-৫০ টাকা ও শালগম বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২০ টাকায়।

কারওয়ান বাজারে আজ প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা, পিঁয়াজ মান ভেদে ৩৫-৫০ টাকায়।

বাজারে আসা নাজিফা সুলতানা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দাম বেশি থাকায় কয়েকদিন আগে ১-২ পদের বেশি তরকারি খেতে পারতাম না। এখন ৩-৪ পদের খাই। সবজির দাম অনেক কমেছে। চালের দামটা একটু কমলে ভালো হতো।'

সবজি বিক্রেতা মো. রনি বলেন, 'শীতের সবজি বাজারে আসায় সবকিছুর দাম কমেছে। উৎপাদনের পাশাপাশি সরবরাহ ভালো আছে।'

আজ কারওয়ান বাজারে প্রতি ডজন মুরগির ডিম (লাল) বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। হাঁসের ডিম ১৯০ টাকা। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ১৫০ টাকা ও লেয়ার মুরগির দাম ২৫০ টাকা।

ডিম বিক্রেতা আনোয়ার আলী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এক মাসে আগে প্রতি ডজন মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছে ১৪০-১৫০ টাকা ও হাঁসের ডিম বিক্রি হয়েছে ২১০ টাকায়। বাজারে সরবরাহ ভালো। প্রতি ডজনে দাম ২০ থেকে ৩০ টাকা কমেছে।'

কারওয়ান বাজারে আজ প্রতি কেজি আটাশ চাল ৫৬ টাকা (নতুন) ও ৫৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মিনিকেট চালের দাম ৭২-৭৬ টাকা ও নাজিরশাইল চালের দাম ৭৬-৮৪ টাকা।

Comments