সবজির বাজারও চড়া

‘দাম বেশি হওয়ায় মানুষ এখন সবজি কেনাও কমিয়ে দিয়েছে।’
ছবি: স্টার

মিরপুর-১৪ নম্বরের বাসিন্দা আজিজুল হক গতকাল সকালে সবজি কিনতে পাশের কাঁচাবাজারে যান।

দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, 'সবজির দাম বাড়ার কারণে আমার সার্মথ্য অনুযায়ী শুধু পেঁপে কিনতে পেরেছি। তবে গত ১০ দিনে পেঁপের দামও কেজিপ্রতি ১০-১৫ টাকা থেকে প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে ৩০-৩৫ টাকা হয়েছে।'

'বেশিরভাগ সবজির দাম এখন প্রতি কেজি ১০০ টাকার বেশি। আমরা আর সবজি কিনতে পারি না। আমার সন্তানরা আমাকে কিছু তাজা শাকসবজি আনতে বলেছিল। কিন্তু আমি কিনতে পারিনি।'

কারওয়ান বাজারের কাঁচাবাজারে আসা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী হাবিবুর রহমান বলেন, শাকের দামও বেড়েছে।

'সবজির দাম চড়া দেখে শাক কেনার কথা ভাবছিলাম। তবে লালশাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়, যা আগে ছিল ২০ টাকা।'

তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের রাস্তার পাশের একটি হোটেলের মালিক আমানউল্লাহ বলেন, 'আমি আমার হোটেলের জন্য নিম্নমানের সবজি কিনতাম। কিন্তু সেগুলোর দামও এখন বেড়ে গেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দাম বাড়লেও আমাদের বেশিরভাগ গ্রাহক দিনমজুর হওয়ায় আমরা খাবারের দাম বাড়াতে পারছি না।'

তিনি আরও বলেন, আগে কিছুটা মুনাফা করতে পারতাম। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি এমন যে পরিবারের সদস্যদের জন্য খাবার জোগাড় করতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে।

মাছ-মাংসের দাম বেশি হওয়ায় সবজির ওপর নির্ভর করা নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষেরা এখন সেই সুযোগও পাচ্ছেন না। কারণ সম্প্রতি সবজির দামও বেশ বেড়েছে।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, কচুক্ষেত, শেওড়াপাড়া, সেনবাগ, মিরপুর-১১ ও ১৪ নম্বর কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, সবজি ও শাকের দাম বেড়েছে ২০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত।

ওইদিন পুঁই শাক ৪০ টাকা, পালং শাক ৫০ টাকা, কলমি শাক ৩৫ টাকা, সরিষাপাতা ৪০ টাকা, ঢেঁকি শাক ৫০ টাকা, পাটের শাক ৩০ টাকা, শোলা কচু ৩০ টাকা, মূলা শাক ৩৫ টাকা, কুমড়ো পাতা ৪০ টাকা, লাউ ৪৫ টাকা ও ডাটা শাক ৪০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

এ ছাড়া, প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হয়েছে ১২০-১৩০ টাকায়, যা ছিল ৮০ টাকা। শিমের কেজি ২০০ টাকা থেকে বেড়ে ২৪০ টাকায়, পটল ৬০ টাকা থেকে বেড়ে ৮০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা থেকে বেড়ে ১২০ টাকা, চিচিঙ্গা ৮০ টাকা থেকে বেড়ে ১০০ টাকা, ঝিঙ্গে ৬০ টাকা থেকে বেড়ে ৮০ টাকা, ধুন্দুল ৭০ টাকা থেকে বেড়ে ১০০ টাকা, করলা ৭০ টাকা থেকে বেড়ে ১০০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা থেকে বেড়ে ৮০ টাকা, কাঁচাকলার জোড়া ১০ টাকা থেকে বেড়ে ২০ টাকা, কুমড়া ৪০ টাকা থেকে বেড়ে ৬০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ৩৫ টাকা থেকে বেড়ে ৬০ টাকা ও লাউ ৭০ টাকা থেকে বেড়ে ৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

কচুক্ষেত কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ী বাবুল মিয়া বলেন, প্রতি বছর এই সময়ে সবজির দাম একটু বেশি থাকে। তবে সাম্প্রতিক ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে এ বছর দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।

দাম বেশি হওয়ায় মানুষ এখন সবজি কেনাও কমিয়ে দিয়েছে বলে জানান তিনি।

Comments