ফাটা-আধপচা সবজির দাম বেড়েছে প্রায় ৩ গুণ

আগে আধপচা-ফাটা সবজি কিনতেন ১০-১২ টাকা কেজি দরে, এখন তার দাম কমপক্ষে ৪০ টাকা।
ফাটা-আধপচা সবজির দাম বেড়েছে প্রায় ৩ গুণ
কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা আছিয়া খাতুন | ছবি: শাহীন মোল্লা/স্টার

দফায় দফায় বেড়েই চলেছে সবজির দাম। ফলে একশ্রেণির ক্রেতা ফাটা-আধপচা সবজি কিনতে শুরু করেছিলেন।

চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় পাইকারি ব্যবসায়ীর কাছে পড়ে থাকা এসব সবজির দামও বেড়ে গেছে প্রায় তিন গুণ। এখন ফাটা-আধপচা সবজির দামও টাটকা সবজির প্রায় সমান।

চলতি সপ্তাহে রাজধানীর কারওয়ান বাজার, তেজগাঁও রেলওয়ে কলোনি বাজার, তেজকুনিপাড়া ফকিন্নি বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, তাজা সবজির মূল্যের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ফাটা-আধপচা সবজির দাম।

এসব বাজারগুলোতে কমেছে সরবরাহ।

ফাটা-আধপচা সবজির দাম বেড়েছে প্রায় ৩ গুণ
তেজকুনিপাড়া ফকিন্নি বাজারের সবজি বিক্রেতা জাহানারা বেগম | ছবি: শাহীন মোল্লা/স্টার

ব্যবসায়ীরা জানান, সাধারণত হোটেল বা মেসে এ ধরনের সবজির চাহিদা বেশি থাকে। আলু, করলা, পেঁয়াজ, কুমড়া, গাজর, শসার কিছু অংশ নষ্ট বা পচে গেলে আড়তদাররা বাজার মূল্যের এক চতুর্থাংশ দামে ছেড়ে দেন।

তারা জানান, কিছু ছোট ব্যবসায়ী সবজিগুলো কিনে খারাপ অংশটুকু কেটে ফেলে দিয়ে বিক্রি করেন।

কারওয়ান বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ফাটা-আধপচা সবজি কিনে বিক্রি করেন দুই বোন রুবিয়া খাতুন (৫৫) ও আছিয়া বেগম (৫৮)।

তারা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আগে এসব সবজি খুঁজে খুঁজে জমিয়ে বিক্রি করতাম। এখন আড়তদারদের কাছ থেকে কিনে বিক্রি করি। কিছু দিন আগেও কিনে এনে বিক্রি করলে ১০০-১৫০ টাকা রাখতে পারতাম। এখন আরও সম্ভব হচ্ছে না।'

'রোববার কিছু ভাঙা-পচা টমেটো, গাজর, কচুর লতি কিনেছিলাম। আগের মাসেও দাম ছিল ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। রোববার সেগুলো কিনতে হলো এক হাজার টাকায়। এখন এসব ভাঙা-পচা সবজিও খুব কম পাওয়া যাচ্ছে। ফলে দাম আরও বেড়েছে,' বলেন তারা।

তারা জানান, আগে আধপচা-ফাটা সবজি কিনতেন ১০-১২ টাকা কেজি দরে, এখন তার দাম কমপক্ষে ৪০ টাকা। যেমন, দুই মাস আগেই ভাঙা বেগুন কিনতেন ১২-১৫ টাকা কেজি দরে। এখন তার দাম কমপক্ষে ৪০ টাকা। ভাঙা মুলা কিনতেন ১২-১৫ টাকা কেজি দরে। এখন এই মুলা কিনছেন ৪০-৫০ টাকা কেজি দরে।

ফাটা-আধপচা সবজির দাম বেড়েছে প্রায় ৩ গুণ
কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা রুবিয়া খাতুন | ছবি: শাহীন মোল্লা/স্টার

এই দুই বোন বলেন, 'গত কয়েক দিন ধরে সবজি বিক্রি করে লাভ করতে পারছি না। কমে গেছে বিক্রিও। আমরা যেহেতু বেশি দামে কিনছি, তাই বিক্রির দামও বেশি চাইতে হচ্ছে। হোটেল-মেসের ক্রেতারা দাম শুনে সবজি কিনতে চাচ্ছে না। এগুলো এমনিতেই পচা। একদিনে বিক্রি করতে না পারলে তা আর বিক্রির অবস্থায় থাকে না। এভাবে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আমাদের ক্ষতি ছাড়া লাভ হচ্ছে না।'

নাজমা বেগম তেজকুনিপাড়ায় একটি মেস চালান। তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আগে যে নষ্ট সবজি ২০ টাকা দিয়ে কিনতাম, এখন তা ৮০ টাকার কমে কিনতে পারি না। এটা তো তাজা সবজির দামের কাছাকাছি। মেসের জন্য এখন আর এসব না দেখে কম দামি যেমন পেঁপে, কচু ও বাসি সবজি; যা পাচ্ছি তাই কিনে মেসে খাওয়াচ্ছি।'

জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের কাঁচামাল-আড়ত মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান চৌধুরী সুজন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সবজির সরবরাহ একেবারে কম। তাই দাম অনেক বেড়ে গেছে। ব্যাপারীদের অনেক বেশি দামে মাল কিনতে হচ্ছে। তাই এখানেও দাম বাড়তি।

'আমার নিজের ক্ষেত্রেও এমন হচ্ছে। আগে যেখানে প্রতিদিন আমার ব্যাপারীরা চার ট্রাক কাঁচামাল আনতে পারতো, এখন সেখানে এক থেকে দেড় ট্রাকের বেশি মাল আনতে পারছে না,' যোগ করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Transport strike in Ctg: Passengers suffer amid heatwave

Sidratul Muntaha, a student, went to the port city's Natunpara bus stand area this morning in order to catch a bus to Chawkbazar, where she was scheduled to attend class at a coaching centre

36m ago