সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজ, ডিম, মুরগিতে বাড়তি খরচ

এক কেজি পেঁয়াজ ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে শুনে কারওয়ান বাজারের দোকানদারের দিকে অবাক চোখে তাকালেন মোহাম্মদ শহীদ।

দুই দিনও হয়নি রাজধানীর একই বাজার থেকে তিনি পেঁয়াজ কিনেছিলেন ৯০ টাকায়।

যেহেতু বেশিরভাগ বাড়িতে রান্নায় পেঁয়াজ লাগেই তাই দরকষাকষি খুব একটা কাজে আসবে না ভেবে শহীদ গতকাল আদা কেজি পেঁয়াজ কেনেন, যদিও তার আরও বেশি পেঁয়াজ কেনার কথা ছিল।

তিনি বলেন, 'গত এক বছর ধরে এভাবেই কম-বেশি কিনে সমন্বয়ের চেষ্টা করছি।'

শহরের একটি মাছের বাজারে কাজ করেন শহীদ। তিনি বলেন, 'মাঝেমধ্যে আমি আমার কেনাকাটার তালিকা কাটছাঁট করে ফেলে দিই।'

তার স্ত্রী নিলুফার বেগমও দরদাম করে জিনিসপত্র কিনছিলেন।

তিনি বলেন, 'আমাদের মতো মানুষের জন্য খাবার যোগানো দিন দিন কঠিন হয়ে যাচ্ছে।'

গতকাল কচুক্ষেত, ইব্রাহিমপুর ও শেওড়াপাড়ার কাঁচাবাজারে শহীদ-নিলুফারের মতো এমন অনেককে জিনিসপত্রের দাম নিয়ে হতাশ হতে দেখেন এই প্রতিবেদকেরা।

এক ডজন ফার্মের ডিমের জন্য খরচ হচ্ছে ১৪০-১৫০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১৩৫-১৪০ টাকা; এক কেজি ব্রয়লার মুরগির জন্য ১৯০-২০০ টাকা খরচ করতে হচ্ছে, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১৮০-১৯০ টাকা; আর এক কেজি সোনালী মুরগির দাম গত সপ্তাহের ২৯০-৩২০ টাকা থেকে বেড়ে ৩০০-৩৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এক সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁপে, শিম, ঢেঁড়স, লাউ ও করলার দাম ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। তবে আলু, কাঁচা মরিচ ও টমেটোর দাম ৫ থেকে ১০ টাকা কমেছে।

চাল, ভোজ্যতেল, মসুর ডাল, মসলা, মাছ, গরু ও খাসির মাংসের দাম প্রায় এক মাস ধরে কমেনি, একই অবস্থায় আছে।

কারওয়ান বাজারের মুদি দোকান মালিক কামাল হোসেন বলেন, কয়েকটি বড় বড় কোম্পানি পণ্য মজুদ করে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে।

'সরকার যদি এই সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারে, তাহলে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমবে না,'

তিনি বলেন, 'আমরা চড়া দামে পণ্য কিনছি বলে আমাদের চড়া দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।'

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, 'ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন, মূল্যস্ফীতি ও আমদানি শুল্কের কারণে দাম বেড়েছে।'

বাংলাদেশে কোভিড-১৯ মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সরবরাহ চেইন ব্যাহত হওয়ার কারণে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। পরবর্তীতে ২০২২ সালে যখন বিশ্বব্যাপী পণ্যের দাম কমতে শুরু করে, তখন বাংলাদেশের কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স এবং সার্বিক ব্যালেন্স অব পেমেন্টে উল্লেখযোগ্য ঘাটতির কারণে টাকার উল্লেখযোগ্য অবমূল্যায়ন ঘটে।

তাই, সাম্প্রতিক বিশ্বব্যাপী পণ্যমূল্য হ্রাস সত্ত্বেও, বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্য অভ্যন্তরীণ মুদ্রার অবমূল্যায়নের কারণে লাভবান হতে পারেনি, যা পরবর্তীতে আমদানি মূল্য বৃদ্ধি বাড়িয়ে তোলে এবং মুদ্রাস্ফীতির চাপ বাড়ে।

গত দুই বছরে টাকার মান কমেছে প্রায় ৩০ শতাংশ, যা দেশের জন্য আমদানি ব্যয়বহুল করে তুলেছে।

(সংক্ষেপিত: ইংরেজিতে মূল প্রতিবেদনটি পড়তে ক্লিক করুন এই লিংকে)

Comments

The Daily Star  | English

Threat of fresh Rohingya influx looms as clashes erupt in Myanmar

Gunfire and explosions were heard late Friday night from villages across the border in Myanmar opposite Whykong union in Teknaf upazila of Cox’s Bazar. Residents, gripped by panic, reported that this was the most intense gunfire they had heard in months.

3h ago