দ্রব্যমূল্য সহনশীল অবস্থায় আছে, অসন্তুষ্ট হওয়ার কোনো কারণ নেই: কৃষিমন্ত্রী

‘আমাদের দেশের নাগরিকদের অসন্তুষ্ট হওয়ার কোনো কারণ নেই। জনগণকে সন্তুষ্ট রাখার জন্য আমরা সব ব্যবস্থাই চালিয়ে যাচ্ছি।’
দ্রব্যমূল্য সহনশীল অবস্থায় আছে, অসন্তুষ্ট হওয়ার কোনো কারণ নেই: কৃষিমন্ত্রী
কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুস শহীদ | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

দ্রব্যমূল্য সহনশীল অবস্থায় আছে জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুস শহীদ বলেছেন, আমাদের দেশের নাগরিকদের অসন্তুষ্ট হওয়ার কোনো কারণ নেই।

আজ সোমবার দুপুর ১টার দিকে কৃষি মন্ত্রণালয়ে দ্রব্যমূল্য পর্যালোচনা ও নিয়ন্ত্রণে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে তিনি এ কথা বলেন।

এ সময় খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার ও বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু উপস্থিত ছিলেন।

দ্রব্যমূল্য সহনশীল অবস্থায় আছে জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, 'এতে কোনো সন্দেহ নেই। না হলে কিন্তু আপনারা দেখতেন দুদিন পরপর মিটিং-মিছিল এগুলো হতো। আর আমরা তো মিছিল করে করেই এত বড় হয়েছি।'

তিনি আরও বলেন, 'আমাদের দেশের নাগরিকদের অসন্তুষ্ট হওয়ার কোনো কারণ নেই। জনগণকে সন্তুষ্ট রাখার জন্য আমরা সব ব্যবস্থাই চালিয়ে যাচ্ছি।'

বৈঠকের সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'বোরোতে চালের উৎপাদন ভালো হয়েছে। চালের কোনো ঘাটতি নেই, দামও স্থিতিশীল আছে। আলুর উৎপাদন কিছুটা কম হয়েছে, আমদানি উন্মুক্ত আছে। পেঁয়াজ আমদানি উন্মুক্ত আছে, কোনো সমস্যা হবে না। ডিমের দাম কিছুটা বেশি। হিমাগারে ডিম মজুতের খবর পাওয়া যাচ্ছে। বিষয়টি তদারকি করা হবে।'

তিনি বলেন, 'আমরা কিন্তু বসে নেই। আমাদের জেলা প্রশাসক আছেন প্রত্যেক জেলায়, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে আমাদের। প্রত্যেক সচিব এগুলো মনিটরিং করেন। প্রত্যেক সচিব একবার হলেও ফোন করেন কোনো না কোনো ডিসিকে।'

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, বিশেষত কাঁচাবাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে কৃষিমন্ত্রী গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, 'সাপ্লাই চেইন যদি সঠিকভাবে কাজ করে, আজকের ঝড়-তুফান সাপ্লাই চেইনে প্রভাব ফেলছে। এটা তো আপনার-আমার হাতে নেই।'

কৃষি অধিদপ্তর নির্ধারিত মূল্য অনুযায়ী পেঁয়াজের যৌক্তিক মূল্য ৫৩ টাকা কিন্তু পাইকারি বাজারে ৬০-৬৮ টাকা। রসুন ৯৪ টাকা কিন্তু পাইকারি বাজারে ১৯৫-২০৫ টাকা। এই পার্থক্যের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে কৃষিমন্ত্রী বলেন, 'মন্ত্রণালয় একটা মিনিমাম প্রাইস ঠিক করে দেয় বা যেভাবে করা উচিত। কিন্তু বাজারে যেভাবে সাপ্লাই চেইন বা ডিমান্ড চেইন কাজ করে, সেখানে তো ভ্যারিয়েশন হতেই পারে। এটা তো সব সময়ই হয়!

'আপনার বাড়িতে দেখেন, আপনার পাঁচ সন্তান আছে, সবাইকে কিন্তু একই দামের কাপড় দিতে পারবেন না। কম-বেশি হতেই পারে,' বলেন তিনি।

মূল্য নির্ধারণের ব্যাপারটা ভুল কি না জানতে চাইলে শহীদ বলেন, 'না না, ভুল কেন! এটা পরিষ্কার।'

গণমাধ্যমকর্মীরা আবারও জানতে চান, সরকারি নির্ধারিত মূল্য আর বাজার মূল্য আলাদা কি না?

জবাবে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'উনি এভাবে বলেননি।'

দ্রব্যমূল্য সহনশীল অবস্থায় আছে, অসন্তুষ্ট হওয়ার কোনো কারণ নেই: কৃষিমন্ত্রী
আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে কথা বলছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুস শহীদ, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু ও সাধন চন্দ্র মজুমদার | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, 'আপনারা যদি না বোঝেন, প্রশ্ন করবেন না। আপনারা সব যেভাবে বলছেন, বোঝা গেল আপনারা...।'

এ সময় আহসানুল ইসলাম কৃষিমন্ত্রীর কথার জের ধরে বলেন, 'আপনারা যদি শুনতে চান, আমার কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের ডিজি আছেন, ওনার কাছে যাবেন; কীভাবে করছেন ওনি বলবেন।'

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, 'যৌক্তিক মূল্য মানে প্রোডাকশন মূল্য। তার পরে কত হাত বদলায় বাজারে আসতে!'

খাদ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে কৃষিমন্ত্রী বলেন, 'ওনারা বাজার করেন না?'

আজকের কাঁচা মরিচের দরের ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে কৃষিমন্ত্রী গণমাধ্যমকর্মীদের পাল্টা প্রশ্ন করেন—আপনি কয়টা কাঁচা মরিচ খান একবেলায়? আমি তো খাই কাঁচা মরিচ। আমি তো একটাও খাইতে পারি না, অর্ধেক খেয়ে রাখি।'

গণমাধ্যমকর্মীরা আবারও প্রশ্ন করেন, সাধারণ মানুষের কাছে কি সত্যি এটা সহনীয় মূল্য? জবাবে তিনি বলেন, 'অতীতে একটু দাম বাড়লেই রাস্তা গরম হয়ে যেত। এখন এগুলো তো নেই।'

তার মানে বাজার সহনীয় পর্যায়ে আছে কি না জানতে চাইলে কৃষিমন্ত্রী বলেন, 'আপনাদের ইরিলেভেন্ট প্রশ্ন করার কোনো প্রয়োজন নেই। আমি সাংবাদিক না হলেও আই নো হোয়াট ইজ দ্য জার্নালিজম।'

গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে চান, বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে কৃষিমন্ত্রী নিজে সন্তুষ্ট কি না—জবাবে তিনি বলেন, 'সব কাজে সন্তুষ্ট হতে হবে এমন তো কোনো কথা নেই।'

গণমাধ্যমকর্মীরা আবারও জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমি সন্তুষ্টির কথা বলবো কেন! চেঞ্জিং, ভ্যারিয়েশন অ্যাটিচিউড থাকতে পারে।'

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'আমরা এখানে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে বসেছি যাতে বাজার স্থিতিশীল থাকে, ভোক্তারা যেন যৌক্তিক মূল্যে পণ্য পায়, পণ্যের সরবরাহ ঘাটতি না হয়।'

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

4h ago