শেবাচিম হাসপাতালে ঠাণ্ডাজনিত রোগে ১ সপ্তাহে ৭ শিশুর মৃত্যু

শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে অসুস্থ সন্তানকে নেবুলাইজ করছেন মা। ছবি: টিটু দাস/স্টার

তীব্র শীতে বরিশাল বিভাগে শিশুদের মধ্যে ঠাণ্ডাজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। এতে বিভাগের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি শিশুর সংখ্যা বাড়ছে। গত ৭ নভেম্বর থেকে দুই মাসে ঠাণ্ডা ও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৩ হাজার ৩২১ শিশু ভর্তি হয়েছে।

গত এক সপ্তাহে নিউমোনিয়া ও ঠাণ্ডাজনিত রোগে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে ৭ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

এ তথ্য নিশ্চিত করে হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, শিশু ওয়ার্ডের ৩টি ইউনিটে ৩৬ শয্যা থাকলেও, সেখানে গড়ে ভর্তি আছে শতাধিক শিশু। পরিস্থিতি সামলাতে শিশুদের জন্য আরও ৭১ শয্যা যুক্ত করা হয়েছে। 

পরিচালক আরও জানান, প্রতিদিন হাসপাতালে ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত শিশু ভর্তি সংখ্যা বাড়ছে। ৫ জন চিকিৎসক ও ১৫ জন নার্স পরিস্থিতি সামলাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন। অনেক সময় এক সিটে দুই রোগীকে সেবা দিতে হচ্ছে।

ডা. সাইফুল ইসলাম বলেন, 'চিকিৎসক সংকটের কারণে আরও ১০০ বেড যুক্ত করা যাচ্ছে না। তবে অচিরেই এ সমস্যার সমাধান হবে।'

ভোলা থেকে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি হওয়া এক শিশুর বাবা ডেইলি স্টারকে জানান, শীতে ঠাণ্ডা পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় হাসপাতালে জরুরি চিকিৎসার জন্য আসতে হচ্ছে।

আরেক শিশুর মা বলেন, 'এক বিছানায় দুই শিশুকে রেখে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। আর কোনো উপায় না থাকায় বাধ্য হয়েই এটি মেনে নিতে হচ্ছে।'

এ প্রসঙ্গে হাসপাতাল পরিচালক বলেন, 'প্রতিদিন কয়েকশ শিশুকে আউটডোরে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বরিশাল জেলার অন্যান্য হাসপাতালগুলোতে সুযোগ-সুবিধা না বাড়ানোয় এই হাসপাতালের ওপরে প্রচণ্ড চাপ পড়ছে। এর ফলে হাসপাতালে স্থান সংকুলান হচ্ছে না।'

বরিশালের স্বাস্থ্য বিভাগীয় পরিচালক ডা. হুমায়ুন শাহীন খান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ ছাড়া বিভাগে গত রোববার ৪৫ জন শিশু ঠাণ্ডাজনিত কারণে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। গত ৭ নভেম্বর থেকে দুই মাসে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে বিভাগে ৩ হাজার ৩২১ শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। তাদের মধ্যে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে।' 

তিনি আরও বলেন, 'প্রতি বছর এ সময়ে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পেলে হাসপাতালে শিশু ভর্তির হার বৃদ্ধি পায়, বৃদ্ধি পায় মৃত্যুর সংখ্যাও।'

এদিকে, গত এক সপ্তাহে বরিশাল বিভাগের তাপমাত্রা ১০ থেকে ১৩ ডিগ্রির মধ্যে থাকায় শিশুরা ঠাণ্ডায় বেশি আক্রান্ত বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। 
আবহাওয়া বিভাগ সূত্র জানিয়ে মৃদু এই শৈত্যপ্রবাহ আরও একমাস চলবে।

Comments

The Daily Star  | English

Why landscape-based knowledge is critical for Bangladesh

How will we build the country without landscaping knowledge?

15h ago