কিট না থাকায় ডেঙ্গু পরীক্ষা বন্ধ নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে

কিট না থাকায় ডেঙ্গু পরীক্ষা বন্ধ নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে
ছবি: স্টার

দেশব্যাপী চলমান ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপের মধ্যে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে গত আড়াই মাস ধরে বন্ধ আছে ডেঙ্গু পরীক্ষা।

এ কারণে জ্বরে আক্রান্ত রোগীরা এ হাসপাতালে ভর্তি হলেও ডেঙ্গু পরীক্ষার জন্য যেতে হয় বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে।

সরকার সম্প্রতি দেশের সব সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৫০ টাকায় ডেঙ্গু পরীক্ষার নির্দেশ দিলেও, কিট না থাকায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষা করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

সম্প্রতিকালে সরেজমিনে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, সাধারণ রোগীদের সঙ্গে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

১১ নম্বর মেডিসিন ওয়ার্ডের কর্মরত মেডিকেল অফিসার ডা. ফাহিমা আক্তার দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, এ ওয়ার্ডে জুনে ২০ ও জুলাইয়ে ৮ জন ডেঙ্গুজ্বর নিয়ে ভর্তি হয়েছেন। ১০ জুলাই ডেঙ্গু রোগী ছিল ৭ জন।

প্রতিদিনই ওয়ার্ডে ডেঙ্গু রোগীর চাপ বাড়ছে বলে জানান তিনি।

তিনি জানান, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের একটি কক্ষ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তদের জন্য নির্ধারণ করা হয়। সেখানে মাত্র ৭টি শয্যা আছে। কিন্তু রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় রোগীদের মেডিসিনের বিভিন্ন ওয়ার্ডে সাধারণ রোগীদের সঙ্গে চিকিৎসা সেবা দিতে হচ্ছে।
 
৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইনচার্জ সিনিয়র স্টাফ নার্স কামরুন নাহার লাভলী দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, তার ওয়ার্ডে ৪ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছে।

কবিরহাট উপজেলার রামবল্লবপুর গ্রামের কাঠমিস্ত্রী মো. সেলিম (৩০) দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, ৭ জুলাই তিনি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। জ্বর ভালো না হওয়ায় সোমবার তিনি ২০০ টাকা দিয়ে ডেঙ্গু পরীক্ষা করিয়েছেন।

সুবর্ণচর উপজেলার চেউয়্যাখালী গ্রামের বাসিন্দা আবদুল হান্নান (২৩) জানান, জ্বরে আক্রান্ত হয়ে তিনি ৫ দিন আগে জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ওয়ার্ডের স্টাফদের পরামর্শ অনুযায়ী তিনি একটি বেসরকারি ডায়গনস্টিক সেন্টারে ৩০০ টাকা দিয়ে ডেঙ্গু পরীক্ষা করেছেন।

ডেঙ্গু রোগীর বিষয়ে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. হেলাল উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোনো তথ্য দিতে পারেননি। তিনি পরিসংখ্যানবিদের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।

ডেঙ্গু পরীক্ষার বিষয়ে ডা. হেলাল বলেন, 'মে মাস থেকে হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার কিট নেই। তাই ডেঙ্গু পরীক্ষা করা যাচ্ছে না। হাসপাতালে প্রতিদিন ২৫-৩০ জন রোগী ডেঙ্গু পরীক্ষার জন্য আসেন। কিন্তু তাদের ডেঙ্গু পরীক্ষা করতে পারি না আমরা।'

তিনি বলেন, 'ডেঙ্গু পরীক্ষার জন্য প্রাথমিক দুটি পরীক্ষা করতে হয়। এগুলো হচ্ছে আইজিজি ও আইজিএম। এই দুটি পরীক্ষা ৩০০ টাকা করে এবং সিবিসি ৪০০ টাকা করে নেওয়ার নিয়ম থাকলেও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে আরো বেশি টাকা আদায় করছে।'

'ডেঙ্গু পরীক্ষার কিটের জন্য নোয়াখালী সিভিল সার্জনের মাধ্যমে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিট এলে পরীক্ষা শুরু হবে,' বলেন তিনি।

যোগাযোগ করা হলে নোয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'জেলার ৯টি উপজেলায় চলতি ডেঙ্গু মৌসুমে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৬১ জন। হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিয়ে বাড়ি গেছেন ৫০ জন। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১১ জন।'

ডেঙ্গু কিটের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ডেঙ্গু পরীক্ষার কিটের সংকট নেই।'
 

Comments

The Daily Star  | English

A budget without illusions

No soaring GDP promises. No obsession with mega projects. No grand applause in parliament. This year, it’s just the finance adviser and his unemotional speech to be broadcast in the quiet hum of state television.

7h ago