ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ: নিবন্ধন ছাড়াই এক বছর ধরে চলছে চিকিৎসা কার্যক্রম

ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ: নিবন্ধন ছাড়াই এক বছর ধরে চলছে চিকিৎসা কার্যক্রম
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লোগো | সংগৃহীত

নিবন্ধন ছাড়াই প্রায় এক বছর ধরে চলছে ঢাকার সাতারকুলের ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম।

এই হাসপাতালটিতেই গত ৩১ ডিসেম্বর খৎনা করতে আসা এক শিশুকে অ্যানেস্থেশিয়া দেওয়া হয়। পরবর্তীতে শিশু আয়ান আহমেদকে গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হলে গত ৭ জানুয়ারি তার মৃত্যু হয়।

নিবন্ধন ছাড়া চিকিৎসা সেবা দেওয়ায় ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল) আবুল হোসেন মো. মঈনুল আহসান বলেন, ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল গত বছরের আগস্টে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করলেও ত্রুটি থাকায় আবেদনটি অনুমোদিত হয়নি।

নিবন্ধন না করেও এতদিন হাসপাতালটি কীভাবে চিকিৎসা কার্যক্রম চালাচ্ছে, জানতে চাইলে তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'হাসপাতালটি আমাদের ডেটাবেজে না থাকায় আমরা এ বিষয়ে অবগত ছিলাম না। একটি নির্দিষ্ট হাসপাতাল নিবন্ধিত হওয়ার পরেই তত্ত্বাবধানে আসে।'

'হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নিবন্ধনের জন্য পুনরায় আবেদন করতে হবে', বলেন তিনি।

অন্যদিকে আয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার দাবিতে গতকাল দুপুরে রাজধানীর মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেন তার পরিবারের সদস্যরা।

এ ঘটনায় গত ৯ জানুয়ারি রাজধানীর বাড্ডা থানায় আয়ানের বাবা শামীম আহমেদ বাদী হয়ে ইউনাইটেড হাসপাতাল ও ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দুই চিকিৎসক, অজ্ঞাতনামা কর্মকর্তা-কর্মচারী ও একজন পরিচালককে আসামি করে মামলা করেন।

ওই দুই চিকিৎসক হলেন—ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অ্যানেস্থেসিওলজিস্ট সাঈদ সাব্বির আহমেদ ও সার্জন তাসনুভা মাহজাবীন।

ওই দিনই স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এ ঘটনা তদন্তে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে।

শামীম আহমেদ গতকাল ডেইলি স্টারকে জানান, গত ৩১ ডিসেম্বর তার ছেলের খৎনার জন্য ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। অ্যানেস্থেশিয়া দেওয়ার পর আয়ানের চেতনা ফিরে না আসায় তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।

'ইউনাইটেড হাসপাতাল আমাদের পাঁচ লাখ ৭৭ হাজার টাকার বিল দিয়েছে। চিকিৎসকরা আয়ানকে চিকিৎসা দিতে অবহেলা করেছেন। আমি আমার সন্তানের মৃত্যুর জন্য দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই', বলেন শামীম।

বিষয়টি নিয়ে ইউনাইটেড হাসপাতালের জনসংযোগ বিভাগের ব্যবস্থাপক আরিফুল হক জানান, গত ৩১ ডিসেম্বর আয়ানের চিকিৎসার জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, কমিটি ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে এবং দায়িত্বে অবহেলার জন্য কেউ দায়ী হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবন্ধনের বিষয়ে আরিফুল বলেন, আমরা ইউনাইটেড হেলথ কেয়ার সার্ভিসেস নামে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা আবেদনটি ত্রুটিপূর্ণ বলে মনে করেছেন।

তিনি বলেন, মেডিকেল কলেজটি ২০২০ সালে কার্যক্রম শুরু করে এবং কলেজ হাসপাতালটি প্রায় এক বছর আগে সেবা চালু করে।

তবে এই মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রতিদিন কতজন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন, তার সংখ্যা জানাতে পারেননি এই কর্মকর্তা।

Comments

The Daily Star  | English
US attack on Iran nuclear sites

Iran denounces US attack as ‘outrageous’

Iran says 'no signs of contamination' after US attacks on key nuclear sites

8h ago