কলকাতায় নারী চিকিৎসক ধর্ষণ-হত্যা

অপরাধের কঠোরতম শাস্তি নিশ্চিত করা হবে: মোদি

এই ঘটনার দ্রুত তদন্ত ও বিচারের দাবিতে গত রাতে পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও ভারতের বিভিন্ন জায়গায় 'রাতের দখল নাও কর্মসূচি পালন করেন নারীরা
ভারতের স্বাধীনতা দিবসে ভাষণ দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ছবি: রয়টার্স
ভারতের স্বাধীনতা দিবসে ভাষণ দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ছবি: রয়টার্স

কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে এক জুনিয়র ডাক্তারের ধর্ষণ-হত্যার ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার চাপের মুখে আছে। এ পরিস্থিতিতে নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতায় রাজ্য সরকারগুলোকে আরও কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। 

আজ বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানিয়েছে এনডিটিভি।

আজ ভারতের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে দেওয়া ভাষণে মোদি বলেন, বিমানবাহিনী, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও মহাকাশ খাত সহ বিভিন্ন খাতে ভারতীয় নারীরা নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

'পাশাপাশি কিছু উদ্বেগজনক ঘটনাও বাড়ছে। আমি আজ লাল কেল্লা থেকে আমার বেদনা প্রকাশ করতে চাচ্ছি। একটি (ঐক্যবদ্ধ) সমাজ হিসেবে আমাদেরকে এ বিষয়গুলোকে আরও গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে', যোগ করেন মোদি।

'আমাদের মা-বোনদের বিরুদ্ধে নৃশংসতার ঘটনাগুলো নিয়ে জনমনে ক্ষোভ বিরাজ করছে। আমিও সেই ক্ষোভের আঁচ টের পাচ্ছি। দেশকে, সমাজকে এবং আমাদের রাজ্য সরকারগুলোকে এসব ঘটনা প্রতি আরও গুরুত্ব দিতে হবে। নারীর বিরুদ্ধে যেকোনো অপরাধের ক্ষেত্রে দ্রুততম সময়ে তদন্ত শেষ করতে হবে। যারা এসব পৈশাচিক কাজের সঙ্গে জড়িত, তাদেরকে শিগগির সবচেয়ে কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে। সমাজে আস্থা ফিরিয়ে আনতে এটা প্রয়োজন', যোগ করেন মোদি।

বিক্ষোভের খণ্ডচিত্র। ছবি: এএফপি

বিশ্লেষকদের মতে, পরোক্ষভাবে মোদি আর জি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিহত ডাক্তারের (৩১) প্রতি নৃশংসতার দিকে ইঙ্গিত করে এই বক্তব্য দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, যখনই নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা ঘটে, তখন গণমাধ্যমে অনেক আলোচনা হতে দেখা যাহ।

'কিন্তু যখন এসব বিকৃত চরিত্রের অপরাধীরা শাস্তি পান, সেটা আর গণমাধ্যমে সেভাবে প্রচার করা হয় না। এ সময়ের দাবি হল, (সম্ভাব্য) অপরাধীরা যাতে ভয়ে থাকে, সেজন্য শাস্তির বিষয়টিকেও ফলাও করে প্রচার করতে হবে। তাদের মনে ভয় তৈরি করা খুবই জরুরি', যোগ করেন মোদি।

এই ধর্ষণ ও হত্যার বিরুদ্ধে রাস্তার বিক্ষোভ গতকাল রাত ১১টা ৫৫ মিনিট থেকে ভারতের স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে শুরু হয়; যা কলকাতার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গাসহ অন্যান্য ছোট ও বড় শহরগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে।

এই ঘটনার দ্রুত তদন্ত ও বিচারের দাবিতে গত রাতে পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও ভারতের বিভিন্ন জায়গায় 'রাতের দখল নাও কর্মসূচি পালন করেন নারীরা। এই কর্মসূচির আওতায় রাত ১২টার আগেই হাজার হাজার মানুষ কলকাতার রাস্তায় নেমে আসে।

নারী চিকিৎসক ধর্ষণ-হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ। ছবি: ডয়চে ভেলে
নারী চিকিৎসক ধর্ষণ-হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ। ছবি: ডয়চে ভেলে

এর ভেতর বিক্ষোভকারীদের ভেতর থেকে একটি দল আর জি কর হাসপাতালে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা গতকাল বুধবার জানান, রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় সরকারের তদন্ত প্রক্রিয়ায় সব ধরনের সহযোগিতা করবে।

তিনি 'বাংলার অপমান' করার জন্য বিরোধীদলের সমালোচনা করেন।

তিনি বলেন, 'কেন্দ্রীয় সরকারের মদদে বিজেপি ও সিপিএম পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে বাংলাকে (পশ্চিমবঙ্গ) অবমাননা করার সমন্বিত উদ্যোগ হাতে নিয়েছে। তারা বাংলাদেশের শিক্ষার্থী আন্দোলনে উৎসাহিত হয়ে একইভাবে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু তারা সফল হবে না।'

Comments