গাজায় যুদ্ধবিরতিতে রাজি নেতানিয়াহু: ব্লিঙ্কেন

নেতানিয়াহু ব্লিঙ্কেনকে জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র যে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে তা তিনি মেনে নিচ্ছেন। এখন হামাসও যেন তা মেনে নেয়।
ইসরায়েলে সংবাদ সম্মেলনে ব্লিঙ্কেন। ছবি: রয়টার্স (১৯ আগস্ট, ২০২৪)
ইসরায়েলে সংবাদ সম্মেলনে ব্লিঙ্কেন। ছবি: রয়টার্স (১৯ আগস্ট, ২০২৪)

সোমবার তেল আবিবে পৌঁছে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টন ব্লিঙ্কেন জানিয়েছেন, নেতানিয়াহুর সঙ্গে তার খুবই কার্যকর বৈঠক হয়েছে।

নেতানিয়াহু তাকে জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র যে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে তা তিনি মেনে নিচ্ছেন। এখন হামাসও যেন তা মেনে নেয়।

ব্লিঙ্কেন বলেন,  'ইসরায়েলের বন্দিদের মুক্তি দিয়ে গাজায় ফিলিস্তিনিদের স্বস্তি ফেরানোর বিষয়টি এখন হামাসের ওপর নির্ভর করছে।'

হামাসকে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে ইইউ, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলসহ কয়েকটি দেশ।

ব্লিঙ্কেন বলেছেন, 'এখন সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়। যুদ্ধবিরতি চালু করে বন্দিদের ঘরে ফেরানোর এবং দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার এর থেকে ভালো সুযোগ সম্ভবত আর পাওয়া যাবে না।'

গতকাল ব্লিঙ্কেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা শেষে মন্তব্য করেন, চলমান আলোচনা 'খুব সম্ভবত যুদ্ধ বন্ধের চুক্তি বাস্তবায়নের শেষ সুযোগ'।

ইসরায়েল সফরশেষে ব্লিঙ্কেন কাতারের পথে রওনা হবেন। কাতারও যুদ্ধবিরতি আলোচনায় মধ্যস্থতার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। কাতারের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ও পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করবেন ব্লিঙ্কেন। 

মধ্যস্থতাকারীদের একাংশ মনে করছেন, যুদ্ধবিরতি চুক্তি চূড়ান্ত হতে বাধ্য। তবে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে উত্তেজনার ফলে এই সংঘাত আরো বেড়ে যেতে পারে, এমন আশংকাও করছেন অনেকে।

এ সপ্তাহের শেষদিকে মিশরে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আবারও আলোচনা হবে। ইসরায়েল-হামাস সংঘাত শুরুর পর ১০ মাসে এই নিয়ে নয়বার মধ্যপ্রাচ্য সফর করলেন ব্লিঙ্কেন।

ব্লিঙ্কেনের হোটেলের বাইরে ইসরায়েলিরা জিম্মি মুক্তির দাবি জানাচ্ছেন। ছবি: রয়টার্স (১৯ আগস্ট, ২০২৪)
ব্লিঙ্কেনের হোটেলের বাইরে ইসরায়েলিরা জিম্মি মুক্তির দাবি জানাচ্ছেন। ছবি: রয়টার্স (১৯ আগস্ট, ২০২৪)

নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, তার সঙ্গে ব্লিঙ্কেনের বৈঠক কার্যকর হয়েছে। তিনি অনুরোধ করেন, এ সময় কোনো পক্ষ যাতে এমন কোনো কাজ না করে, যাতে যুদ্ধবিরতির চলমান প্রক্রিয়া বানচাল হয়ে যায়।

দায় স্বীকার করল হামাস, ইসলামিক জিহাদ

রোববার তেল তেল আবিবে বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করল হামাস ও ইসলামিক জিহাদ। এই বিস্ফোরণে একজন পথচারীর মৃত্যু হয়েছে।

হামাস ও ইসলামিক জিহাদ জানিয়েছে, তারা এই আত্মঘাতী হামলা করেছে।

ইসরায়েল সরকারের মুখপাত্র সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, 'ব্যাকপ্যাক ভর্তি বিস্ফোরক নিয়ে একজন ফিলিস্তিনি যাচ্ছিলেন। জনবহুল জায়গায় যাওয়ার আগেই বিস্ফোরণ হয়।'

ব্লিঙ্কেন তেল আবিবে পা রাখার ঘণ্টাখানেক আগে এই বিস্ফোরণ হয়।

দক্ষিণ লেবাননে সহিংসতা বেড়েছে

দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলের হামলায় দুইজন হিজবুল্লাহ সদস্যর মৃত্যু হয়েছে।

ইসরায়েল জানিয়েছে, হিজবুল্লাহ তাদের সেনাকে লক্ষ্য করে একাধিক আক্রমণ করে। তার ফলে একজন সেনার মৃত্যু হয়েছে এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলেও তারা জানিয়েছে।

৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামলা চালায় হামাস। এই হামলায় প্রায় এক হাজার ২০০ মানুষ নিহত হন এবং হামাসের হাতে জিম্মি হন ২৫০ জন। সেদিনই গাজায় নির্বিচার ও প্রতিশোধমূলক হামলা শুরু করে ইসরায়েল, যা আজও অব্যাহত রয়েছে। গত ১০ মাসে নিহতের সংখ্যা ৪০ হাজারের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। আহত হয়েছেন ৯০ হাজারেরও বেশি মানুষ। হতাহতের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

এপি, এএফপি, রয়টার্স

Comments