ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ১১ অবস্থানে ৩২০টি রকেট ছুঁড়েছে হিজবুল্লাহ

সশস্ত্র সংগঠনটি জানিয়েছে, প্রথম পর্যায়ের এই হামলার লক্ষ্য ছিল এমন সব ইসরায়েলি সামরিক অবস্থান, যেগুলো অকেজো হলে দ্বিতীয় পর্যায়ের হামলা প্রতিহত করতে ব্যর্থ হবে ইসরায়েল
লেবানন থেকে ধেয়ে আসা রকেট প্রতিহত করছে ইসরায়েলের আয়রন ডোম প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। ছবি: এএফপি (২৪ আগস্ট, ২০২৪)
লেবানন থেকে ধেয়ে আসা রকেট প্রতিহত করছে ইসরায়েলের আয়রন ডোম প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। ছবি: এএফপি (২৪ আগস্ট, ২০২৪)

বৈরুতে হিজবুল্লাহর এক শীর্ষ কমান্ডারকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার পর থেকেই লেবাননের এই সশস্ত্র সংগঠনটি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার সংকল্প করে আসছিল। আজ হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, তাদের এই প্রতিশোধমূলক হামলার 'প্রথম পর্যায়' সফল হয়েছে।

আজ রোববার এই তথ্য জানিয়েছে সিএনএন ও রয়টার্স। 

সশস্ত্র সংগঠনটি জানিয়েছে, প্রথম পর্যায়ের এই হামলার লক্ষ্য ছিল এমন সব ইসরায়েলি সামরিক অবস্থান, যেগুলো অকেজো হলে দ্বিতীয় পর্যায়ের হামলা প্রতিহত করতে ব্যর্থ হবে ইসরায়েল। দ্বিতীয় পর্যায়ের হামলা 'ইসরায়েলের অভ্যন্তরে হিজবুল্লাহর বেছে নেওয়া অবস্থানের' ওপর পরিচালনা করা হবে বলে সংগঠনটি জানালেও এই 'বেছে নেওয়া' অবস্থান সম্পর্কে আর কোনো তথ্য জানায়নি তারা।

হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের ১১টি সামরিক অবস্থানের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। সংগঠনটির দাবি, এসব অবস্থানে হামলা সফল হয়েছে। তারা আরও জানায়, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এই হামলায় মোট ৩২০টি কাতিউশা রকেট ও অসংখ্য ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে।  

এর আগে হিজবুল্লাহ জানিয়েছিল, এসব হামলার উদ্দেশ্য শীর্ষ সামরিক কমান্ডার ফুয়াদ শুকর ও অন্যান্য শহীদদের মৃত্যুর প্রতিশোধ নেওয়া।

রকেট-ড্রোন হামলার কিছুক্ষণ আগেই ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান লেবাননের কিছু জায়গায় বোমাবর্ষণ করে। সামরিক বাহিনীর দাবি, হিজবুল্লাহর আসন্ন হামলা টের পেয়ে তারা এই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেন। এই হামলার হতাহতের তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি।

হিজবুল্লাহর হামলা ও লক্ষ্যবস্তু সম্পর্কে প্রশ্নের জবাবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, লেবানন থেকে প্রায় ২১৫টি রকেট ছোড়া হয়েছে। তবে এগুলো কোথায় আঘাত হেনেছে, বা আদৌ হেনেছে কি না, সে বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য জানাতে পারেনি ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।

ইসরায়েলের আকাশে হিজবুল্লাহর ড্রোন। ছবি: এএফপি (২৫ আগস্ট, ২০২৪)
ইসরায়েলের আকাশে হিজবুল্লাহর ড্রোন। ছবি: এএফপি (২৫ আগস্ট, ২০২৪)

গত ৩০ জুলাই এক বিবৃতিতে ইসরায়েল নিশ্চিত করে, তারা হিজবুল্লাহর সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তা ফুয়াদ শুকরকে ড্রোন হামলার মাধ্যমে হত্যা করেছে। হামলার সময় শুকর বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলীর জনবহুল এলাকার একটি আবাসিক ভবনে ছিলেন। এই ভবনটি হিজবুল্লাহর ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার হচ্ছিল।

ইসরায়েল জানিয়েছে, গত মাসে গোলান মালভূমিতে অধিকৃত মাজদাল শামস শহরে হিজবুল্লাহর হামলার প্রতিশোধে তারা ফুয়াদ শুকরকে হত্যা করেছে। এই হামলায় ১২ জন ১০ থেকে ২০ বছর বয়সী শিশু ও তরুণ প্রাণ হারায়।

তবে এই হামলার দায় অস্বীকার করে হিজবুল্লাহ।

ইসরায়েলের আকাশে হিজবুল্লাহর ড্রোন ধ্বংস। ছবি: এএফপি
ইসরায়েলের আকাশে হিজবুল্লাহর ড্রোন ধ্বংস। ছবি: এএফপি

রয়টার্স ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল ক্যাটজের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, তারা যুদ্ধক্ষেত্রে হামলার মাত্রা অনুযায়ী প্রতিক্রিয়া দেখাবে, কিন্তু পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধে যেতে দেশটি আগ্রহী নয়।

অপরদিকে কট্টরপন্থি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়ুভ গ্যালান্ট বলেন, ইসরায়েল নিজেদের সুরক্ষা দিতে যা করা প্রয়োজন, তাই করবে।  

Comments