যুদ্ধবিরতির মধ্যেই লেবাননে ইসরায়েলের হামলা

ইসরায়েল-লেবানন সীমান্তের মানারা নামক এলাকায় একটি পুড়ে যাওয়া গাড়ি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। ছবি: রয়টার্স
ইসরায়েল-লেবানন সীমান্তের মানারা নামক এলাকায় একটি পুড়ে যাওয়া গাড়ি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। ছবি: রয়টার্স

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের উদ্যোগে ইসরায়েল ও লেবাননের সশস্ত্র বাহিনী হিজবুল্লাহর মধ্যে বহুল প্রতীক্ষিত যুদ্ধবিরতি চালু হয়েছে। কিন্ত লেবানন অভিযোগ করেছে, এই চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করে অন্তত ছয়টি জায়গায় ইসরায়েল হামলা করেছে।

বুধবার স্থানীয় সময় সকাল চারটা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে লেবাননের গৃহহীন মানুষ ঘরে ফিরতে শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে ইসরায়েল হামলা অব্যাহত রাখায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির লঙ্ঘন হয়েছে বলে দাবি করেছে লেবানন।

যুদ্ধবিরতি শুরু, হামলা অব্যাহত

যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় দিনে লেবাননের এক দম্পতি তাদের ধ্বংস হয়ে যাওয়া বাড়ির সামনে বসে আছেন। ছবি: রয়টার্স
যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় দিনে লেবাননের এক দম্পতি তাদের ধ্বংস হয়ে যাওয়া বাড়ির সামনে বসে আছেন। ছবি: রয়টার্স

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, সীমান্ত অঞ্চলে তারা গুলি চালিয়েছে এবং রকেট ছুড়েছে, কারণ সেখানে সন্দেহভাজনদের দেখা গেছিল।

দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লাহর সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়েছে বলে তারা জানিয়েছে। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ওই অঞ্চল থেকে হিজবুল্লাহর সামরিক উপস্থিতি সরিয়ে নেওয়ার কথা।  

এর আগে, আইডিএফ সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে হুশিয়ারি জানিয়েছে, দক্ষিণ লেবাননে বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটা থেকে শুক্রবার সকাল সাতটা পর্যন্ত কারফিউ থাকবে। সে সময় যেন কোনো ব্যক্তি বাইরে বের না হন। ওই সময় হিজবুল্লাহর ঘাঁটিতে আক্রমণ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

লেবাননের সরকারি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে সমস্ত তথ্য দেওয়া হবে।

যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের মধ্যস্থতায় হিজবুল্লাহ এবং ইসরায়েলের যে চুক্তি হয়েছে, তার শর্ত অনুযায়ী, ৬০ দিনের মধ্যে ইসরায়েলী সেনাকে লেবানন ছেড়ে চলে যেতে হবে।

অপরদিকে, হিজবুল্লাহ অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোতে লেবাননের সেনা ও জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন থাকবে। কোনো পক্ষই অন্যপক্ষের ওপর আক্রমণ চালাতে পারবে না।

গাজায় আক্রমণ অব্যাহত

যুদ্ধবিরতি চালুর পর ইরাকে পালিয়ে যাওয়া লেবানিজরা দেশে ফিরছেন। ছবি: রয়টার্স
যুদ্ধবিরতি চালুর পর ইরাকে পালিয়ে যাওয়া লেবানিজরা দেশে ফিরছেন। ছবি: রয়টার্স

মধ্য গাজায় বৃহস্পতিবার লাগাতার হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। একের পর এক বোমাবর্ষণ করা হয়েছে। ফিলিস্তিনের সংবাদসংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, ঘটনায় অন্তত নয় জনের মৃত্যু হয়েছে। নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে বোমাবর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। বহু মানুষ সেখানে আহত হয়েছেন।

সংবাদসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, উত্তর, মধ্য এবং দক্ষিণ গাজায় একাধিক জায়গায় বৃহস্পতিবার হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। গাজার মানুষ ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে আছেন। তারা ঠিক মতো খাবার পর্যন্ত পাচ্ছেন না। তারই মধ্যে সংবাদমাধ্যমের কাছে তারা বলেছেন, লেবাননের মতো গাজাতেও যুদ্ধবিরতি চুক্তি হোক। জাতিসংঘের প্রতিবেদন বলছে, গাজার একাধিক জায়গায় প্রবল খাদ্য সংকট শুরু হয়েছে। তাদের কাছে ওষুধও পৌঁছাচ্ছে না।

জাতিসংঘের ফিলিস্তিন সংক্রান্ত সংস্থা জানিয়েছে, উত্তর গাজার একাধিক জায়গা এখনো বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। সেখানে জাতিসংঘের ত্রাণও পৌঁছাচ্ছে না। ওই অঞ্চলে ৬৫ থেকে ৭৫ হাজার মানুষ আটকে আছেন। প্রবল খাদ্য সংকটে ভুগছেন তারা। জাতিসংঘের দাবি, গত কয়েক মাসে সেখানে তারা ৯১ বার যাওয়ার চেষ্টা করেছে কিন্তু ৮২ বার তাদের আটকে দিয়েছে ইসরায়েলের সেনা।

রয়টার্স, এপি, এএফপি

Comments

The Daily Star  | English
Unhealthy election controversy must be resolved

Unhealthy election controversy must be resolved

Just as the fundamental reforms are necessary for the country, so is an elected government.

9h ago