লস অ্যাঞ্জেলেসে কারফিউ ও গণগ্রেপ্তার শুরু, পাল্টাপাল্টি অবস্থানে ট্রাম্প-নিউসাম

আংশিক কারফিউ জারি করা হয়েছে লস অ্যাঞ্জেলেসে। ছবি: এএফপি

ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর অভিবাসী বিরোধী অভিযানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে আংশিক কারফিউ ঘোষণা করা হয়েছে। সেইসঙ্গে বিক্ষোভকারীদের গণগ্রেপ্তার করা শুরু করেছে পুলিশ।

আজ বুধবার সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র সময় মঙ্গলবার রাত থেকে লস অ্যাঞ্জেলেসের বিক্ষোভপ্রবণ এলাকায় কারফিউ শুরু হয়।

শহরটির মেয়র ক্যারেন ব্যাস জানিয়েছেন, প্রতিদিন রাত ৮টা থেকে পরদিন সকাল ৬টা পর্যন্ত কার্যকর থাকবে এ কারফিউ। অন্তত আগামী কয়েকদিন স্থায়ী হবে কারফিউ। আপাতত কারফিউয়ের আওতায় রয়েছে শহরের প্রায় ১ বর্গমাইল এলাকা।

লস অ্যাঞ্জেলেস পুলিশ বিভাগ (এলএপিডি) জানিয়েছে, কারফিউ শুরুর পর তারা বিক্ষোভকারীদের গণগ্রেপ্তার শুরু করেছে। অবৈধভাবে সমাবেশ করায় ইতোমধ্যে ওই এলাকা থেকে কয়েক ডজন বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে।

মঙ্গলবার এলএপিডি জানিয়েছিল, তারা সর্বশেষ চার দিনে অন্তত ৩৭৮ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে।

পাল্টাপাল্টি অবস্থানে ট্রাম্প-নিউসাম

ন্যাশনাল গার্ডের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে মঙ্গলবার লস অ্যাঞ্জেলেস কয়েকশ মেরিন সদস্যও মোতায়েন করা হয়েছে। ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসাম একে 'গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি' হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। 

আজ বুধবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, বিক্ষোভ দমনে ন্যাশনাল গার্ড ও মেরিন মোতায়েন লস অ্যাঞ্জেলেসের পাঁচদিনের টানা বিক্ষোভকে আরও উসকে দিয়েছে। 

এক ভিডিও বার্তায় নিউসাম বলেন, 'একজন ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের এমন নির্লজ্জ ক্ষমতার অপব্যবহার একটি বিস্ফোরণযোগ্য পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করেছে, যা আমাদের নাগরিক, পুলিশ কর্মকর্তা, এমনকি ন্যাশনাল গার্ডদের ঝুঁকিতে ফেলেছে।'

'তিনি (ট্রাম্প) আবারও সংঘাতের পথই বেছে নিয়েছেন। আরও শক্তি প্রয়োগ করছেন। জননিরাপত্তার চেয়ে নাটককেই গুরুত্ব দিচ্ছেন। আমাদের গণতন্ত্র এখন হুমকির মুখে,' যোগ করেন এই গভর্নর।

২০২৮ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে দেখা হচ্ছে নিউসামকে। ট্রাম্পের এই সেনা মোতায়েনকে তিনি 'অবৈধ ও সম্পদের অপচয়' বলে আখ্যা দিয়েছেন। 
এই মোতায়েন ঠেকাতে সোমবার ক্যালিফোর্নিয়ার রাজ্য সরকার ট্রাম্প ও প্রতিরক্ষা দপ্তরের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছে। 

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল আইন, পোসে কমিট্যাটাস অ্যাক্ট অনুযায়ী, অভ্যন্তরীণ বেসামরিক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে মার্কিন সামরিক বাহিনী (সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, মেরিন কর্পস, বিমান বাহিনী, কেন্দ্রীয় দায়িত্বে থাকা ন্যাশনাল গার্ড) মোতায়েন অবৈধ। এই আইন ধরেই ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্য সরকার। 

এর জবাবে ট্রাম্প উল্টো ইঙ্গিত দিয়েছেন, নিউসামকেই গ্রেপ্তার করা উচিত।

অন্যান্য শহরে ছড়িয়ে পড়েছে বিক্ষোভ

ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেসের পর যুক্তরাষ্ট্রের আরও বেশকিছু বড় শহর—নিউইয়র্ক, শিকাগো, সিয়াটেল, ডেনভার, সান ফ্রান্সিসকো, আটলান্টায় একইরকম বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।

টেক্সাসের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভের পরিকল্পনার খবর পেয়ে ইতোমধ্যে সেসব অঞ্চলে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছেন রিপাবলিকান গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট।

গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) বাহিনীর লস অ্যাঞ্জলেসের লাতিন জনগোষ্ঠী–অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে অভিযান শুরুর খবর ছড়িয়ে পড়লে শহরে বিক্ষোভ শুরু হয়।

বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর থেকে আরও সক্রিয় হয়েছে আইসিই। তারা এরইমধ্যে কর্মস্থলসহ বিভিন্ন স্থান থেকে কয়েক ডজন অবৈধ অভিবাসীকে আটক করেছে।

সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানায়, তাদের মধ্যে অনেককে ইতোমধ্যে দেশছাড়া করা হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English
Can monetary policy rescue the economy?

Can monetary policy rescue the economy?

The question remains whether this policy can rescue the economy from the doldrums and place it firmly on the path of vibrancy.

7h ago