ইরানের হামলায় ইসরায়েলি তেল পরিশোধনাগারের কার্যক্রম বন্ধ

টানা পাঁচ দিন ধরে চলছে ইরান ও ইসরায়েলের হামলা, পাল্টা হামলা। ইতোমধ্যে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বন্ধ হয়ে গেছে ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ শহর হাইফার তেল পরিশোধনাগারের কার্যক্রম।
আজ মঙ্গলবার এই তথ্য জানিয়েছে ইসরায়েলি গণমাধ্যম জেরুজালেম পোস্ট।
ইসরায়েলি সংস্থা বাজান গ্রুপ সোমবার সন্ধ্যায় জানিয়েছে, রোববার রাতভর হামলায় তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন তেল পরিশোধনাগার ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।
তেল পরিশোধনাগারের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সেখানে একটি বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছিল। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ক্ষতির শিকার হয়েছে। যার ফলে, পরিশোধনাগারে কমপ্লেক্সের সব ধরণের কার্যক্রম চালাতে প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ ও জলীয় বাষ্পের সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। অন্যান্য স্থাপনাও ওই হামলায় ক্ষতির শিকার হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, তারা ইসরায়েল ইলেকট্রিক করপোরেশনের সহযোগিতায় যত দ্রুত সম্ভব কমপ্লেক্সে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
তেল পরিশোধন ও পেট্রোকেমিকেল উপকরণ উৎপাদনের প্রতিষ্ঠানটি এখন ক্ষয়ক্ষতি যাচাই করছে এবং পরিস্থিতির উন্নয়নে সবচেয়ে উপযোগী উদ্যোগগুলো বেছে নেওয়ার চেষ্টা করছে।
এক বিবৃতিতে বাজান গ্রুপ জানায়, ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় তাদের তিন কর্মী নিহত হয়েছেন। প্রতিষ্ঠানটি নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা ও শোক প্রকাশ করেছে।
বাজান গ্রুপের ঘোষণার পর ইসরায়েলের জ্বালানি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হামলা সত্ত্বেও দেশটির জ্বালানি চাহিদা পূরণে কোনো সমস্যা হবে না।

জ্বালানি মন্ত্রী ইলাই কোহেন গতকাল তেল পরিশোধনাগার পরিদর্শন করেন। এ সময় তার সঙ্গে ওই খাতের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ছিলেন। তিনি মেরামতের কাজকে প্রাধান্য দেওয়ার নির্দেশনা দেন।
হামলার পর তেল আবিবের পুঁজিবাজারে বাজান করপোরেশনের শেয়ারের লেনদেন স্থগিত রাখা হয়।
বুধবার থেকে আবারও পুঁজিবাজারে বাজানের লেনদেন শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এর আগে, প্রতিষ্ঠানটি হামলার বিস্তারিত ক্ষয়ক্ষতির তথ্য নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করবে।
গত দুই দিনে দ্বিতীয়বার হামলার শিকার হয় পরিশোধনাগারটি।
এর আগে রোববার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় পরিশোধনাগারের পাইপলাইন ও ট্রান্সমিশন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এর আগে, গতকাল সোমবার ইরানের পাল্টা হামলার অংশ হিসেবে ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলের স্থানীয় বিদ্যুৎ গ্রিড।
ইসরায়েল ইলেকট্রিক কর্পোরেশন জানায়, ইরানের হামলার জেরে বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে পড়েছে। যার ফলে যে কেউ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
এই নিরাপত্তা ঝুঁকি দূর করতে সংশ্লিষ্টরা কাজ করে যাচ্ছেন।
পাশাপাশি অবকাঠামো মেরামত ও বন্ধ হয়ে যাওয়া বিদ্যুৎ সরবরাহ আবারও চালুর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলেও নিশ্চিত করে সংস্থাটি।
টানা পাঁচ দিনের সংঘাতে ক্ষতির শিকার হয়েছে উভয় পক্ষ।
ইরানে ২২৪ জন নিহত ও এক হাজার ২০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।
ইসরায়েলে ২৪ জন নিহত ও প্রায় ৫৯২ জন আহত হয়েছেন।
Comments