এবার আলোচনায় নিউইয়র্কের মেয়রপ্রার্থী জোহরানের স্ত্রী রামা

জোহরান মামদানি
দুবাইয়ে জোহরান মামদানি ও রামা দুয়াজি। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে নেওয়া

যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় শহর নিউইয়র্কের আসন্ন মেয়র নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে ডেমোক্র্যাটিক পার্টি অ্যাসেম্বলিম্যান জেহরান মামদানিকে মনোনীত করায় বিশ্বজুড়ে চলছে জোহরান-চর্চা। এমন পরিস্থিতিতে আলোচনায় এসেছেন তার স্ত্রী রামা দুয়াজি।

গত শুক্রবার বিবিসির এক প্রতিবেদনের শিরোনাম করা হয়—'রামা দুয়াজি: কে এই নিউইয়র্ক মেয়রপ্রার্থী জোহরান মামদানির স্ত্রী?'

এতে বলা হয়, স্বামী জোহরান মামদানি নিউইয়র্কের মেয়র পদে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির মনোনয়ন পাওয়ায় তার স্ত্রী ২৭ বছর বয়সী চিত্রশিল্পী ও অ্যানিমেটর রামা দুয়াজির ওপরও পড়ছে প্রদীপের আলো।

নিউইয়র্কের এই চিত্রশিল্পীর আদি বাসস্থান সিরিয়ায়। তার শিল্পকর্মে মধ্যপ্রাচ্যের বিষয়বস্তু উঠে আসে। তার কাজ নিয়ে বিবিসি নিউজে প্রতিবেদন হয়েছে। এ ছাড়াও, তাকে নিয়ে প্রতিবেদন হয়েছে দ্য নিউইয়র্ক টাইমস, দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট ও ভাইসে।

গত ১২ মে সমাজমাধ্যমে এক পোস্টে জোহরান মামদানি লিখেছিলেন, 'রামা শুধু আমার স্ত্রী নন, তিনি চমৎকার চিত্রশিল্পী। তিনি নিজেই নিজের পরিচয়ে পরিচিত।' তিনি জানান, এর তিন মাস আগে তারা বিয়ে করেছেন।

সেই পোস্টের মন্তব্যে রামা দুয়াজি লিখেন, 'ও মাই গড, শি ইজ রিয়েল।'

জোহরান মামদানি
রামা দুয়াজি। ছবি: রয়টার্স

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় শহরে নির্বাচনী প্রচারণায় জোহরানের পাশে রামা দুয়াজিকে খুব একটা দেখা যায়নি। বিরোধীদের অনেকে দাবি করেন, ৩৩ বছর বয়সী জোহরান তার স্ত্রীকে 'লুকিয়ে' রাখছেন।

নির্বাচনী প্রচারণায় রামা দুয়াজির অনুপস্থিতি অনেকের নজরে এসেছে। সাধারণত প্রার্থীরা তাদের সঙ্গী কিংবা সঙ্গিনীদের নির্বাচনী প্রচারণার সময় সঙ্গে রাখেন। ভোটারদের বোঝাতে চান যে তারা পারিবারিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।

তরুণ জোহরান নিজেকে ডেমোক্র্যাটিক সোশ্যালিস্ট বলে দাবি করেন। গত ২৪ জুন তিনি তার প্রধান দলীয় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ ও নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের সাবেক গর্ভনর অ্যান্ড্রু কুমোকে পরাজিত করে নিজেকে নতুন উচ্চতায় তুলে আনেন।

মে মাসের সেই পোস্টে জোহরান নির্বাচনী প্রচারণায় স্ত্রীর অনুপস্থিতি নিয়ে বিরোধীদের সমালোচনার জবাব দেন। তাদের বিয়ের অনেকগুলো ছবি প্রকাশ করেন। তারা নিউইয়র্ক সিটি ক্লার্ক কার্যালয়ে বিয়ে করেন। এ নিয়ে তিনি নোংরা রাজনীতির শিকার বলেও মন্তব্য করেন।

জোহরান বলেন, 'আমি সাধারণত এসব উড়িয়ে দিই। হোক না তা মৃত্যু হুমকি বা আমাকে দেশ থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি। তবে যখন প্রিয়জনকে নিয়ে কথা হয় তখন আর চুপ করে থাকা যায় না। আপনি আমার মতাদর্শের সমালোচনা করতে পারেন কিন্তু, আমার পরিবারকে নিয়ে নয়।'

ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রাথমিক বাছাইয়ের ফল প্রকাশের পর রামা দুয়াজি তার ইনস্টাগ্রামে স্বামীসহ বেশ কয়েকটি ছবি পোস্ট করেন।

জোহরান মামদানি
নিউইয়র্কে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির পক্ষ থেকে মেয়র প্রার্থী ঘোষণার দিনে জোহরান মামদানি ও রামা দুয়াজি। ছবি: রয়টার্স

পরিচয়-পরিণয়

এই দম্পতির পরিচয় হিনজ ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে। সম্প্রতি, এক সাক্ষাৎকারে জোহরান বলেন, 'ওইসব ডেটিং অ্যাপের ওপর এখনো আশা রাখা যায়।'

নিউইয়র্ক শহরে সামাজিক অনুষ্ঠানের আগে গত বছর দুবাইয়ে বিয়ে করেন তারা। সেখানে রামার পরিবার থাকেন। সেখানে পারিবারিক আয়োজনে ঘরোয়া পরিবেশে তাদের বিয়ের অনুষ্ঠান হয়।

রামা দুয়াজি ভার্জিনিয়া কমনওয়েলথ ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক শেষ করার পর নিউইয়র্ক শহরের স্কুল অব ভিজুয়্যাল আর্টস থেকে ইলাস্ট্রেশনের ওপর স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন।

রামার অধিকাংশ কাজ সাদা-কালো। তিনি আরব দুনিয়ার দৃশ্যপট তুলে ধরেন ক্যানভাসে। টেক্সাসে জন্ম নেওয়া এই নারী সিরীয় বংশোদ্ভূত।

২০২২ সালে তার কাজ বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের তথ্যচিত্র 'হু কিল্ড মাই গ্র্যান্ডফাদার'-এ দেখানো হয়। এই তথ্যচিত্রে ১৯৭৪ সালে এক ইয়েমেনি রাজনীতিকের হত্যার ঘটনার তদন্ত তুলে ধরা হয়।

ইনস্টাগ্রামে তার কয়েকটি শিল্পকর্মে 'মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ'র সমালোচনা করা হয়। তিনি ইসরায়েলি যুদ্ধাপরাধ ও ফিলিস্তিনে 'জাতিগত নিধন' নিয়ে কথা বলেছেন। এখন তিনি ব্রুকলিনে বসবাস করছেন।

Comments

The Daily Star  | English

Investment slump deepens

Imports of capital machinery have fallen to multi-year lows, dipping even below Covid-19 levels

3h ago