টেক্সাসে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬৮

টেক্সাসের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত একটি বাড়ি। ছবি: এএফপি
টেক্সাসের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত একটি বাড়ি। ছবি: এএফপি

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে আকস্মিক বন্যায় মৃত্যু বেড়ে ৬৮ জনে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় এখনো নিখোঁজ আছেন অনেকে।

আজ রোববার সিএনএন ও এএফপির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। কারণ ওই এলাকার অন্যান্য কাউন্টি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সিএনএনের প্রতিবেদনে মৃতের সংখ্যা ৬৭ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৫৯ জনই কের কাউন্টিতে প্রাণ হারিয়েছেন। পাশাপাশি ট্রাভিস, বারনেট ও কেনডাল কাউন্টিতে যথাক্রমে ৪, ৩ ও ১ জন মারা গেছেন।

টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের উদ্ধারকর্মীরা ঘড়ির কাঁটার সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিশুসহ বেশ কয়েকজন নিখোঁজ মানুষকে খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

টেক্সাসের স্থানীয়রা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে উদ্ধারকাজে সহায়তা করছেন। পাশাপাশি, হেলিকপ্টারে করেও খোঁজাখুঁজি চলছে।

নদীর ধারে অবস্থিত সামার ক্যাম্প থেকে অন্তত ১১টি মেয়ে শিশু ও ১ জন কাউন্সেলর নিখোঁজ হয়েছেন।  'ক্যাম্প মিস্টিক' নামের ওই ক্যাম্প থেকে এর আগে নিখোঁজ মেয়েদের সংখ্যা ২৭ বলে জানানো হয়েছিল।

দুর্যোগে আক্রান্ত হওয়ার আগে ওই ক্যাম্পে ৭৫০ জন অবস্থান করছিলেন বলে জানা গেছে।

প্রবল বৃষ্টির পর গুয়াদালুপে নদীর পানি গাছ-সমান উচ্চতা পৌঁছে যায়। শুক্রবার রাতে ক্যাম্পের বাসিন্দারা যখন ঘুমাচ্ছিলেন, তখন বন্যার পানি সেখানকার ছাদ পর্যন্ত উঠে যায়। এতে অনেকেই ঘুমের মধ্যে পানিতে ভেসে যায়। 

পানি নেমে যাওয়ার পর ক্যাম্পে কাদা-মাখা কম্বল, বাচ্চাদের খেলনা ভল্লুক (টেডি বিয়ার) ও অন্যান্য ব্যবহারের জিনিস পড়ে থাকতে দেখা যায়। কেবিনের জানালোগুলো পানির দমকে ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। সব মিলিয়ে, এক মর্মান্তিক ও ভুতুড়ে পরিবেশ তৈরি হয় ক্যাম্পে। 

ক্যাম্প মিস্টিকের ভেতর শিশুদের খেলনা ও অন্যান্য ব্যবহারের জিনিস পাওয়া যায়। ছবি: এএফপি
ক্যাম্প মিস্টিকের ভেতর শিশুদের খেলনা ও অন্যান্য ব্যবহারের জিনিস পাওয়া যায়। ছবি: এএফপি

লেফটেন্যান্ট গভর্নর ড্যান প্যাট্রিক জানান, আজ রোববারও ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত ছিল। যার ফলে বন্যার প্রকোপ আরও বাড়তে পারে।

'দুর্ভাগ্যজনকভাবে, আমরা আশংকা করছি, পানির উচ্চতা আরও বেড়ে যাবে', যোগ করেন তিনি। 

তিনি ক্যাম্পের এক কাউন্সেলর বীরত্বের কথা বর্ণনা করেন। ওই কাউন্সিলের বন্যার মধ্যেই জানালার কাঁচ ভেঙে ফেলেন, যাতে শিশুরা সাঁতার কেটে বা গলা সমান পানিতে বের হয়ে যেতে পারে।

ড্যান বলেন, 'এই ছোট ছোট মেয়েরা ১০ থেকে ১৫ মিনিট সাঁতার কেটে বের হয়ে এসেছে। কল্পনা করুন, চারপাশে অন্ধকার। প্রবল বেগে পানি ঢুকে পড়ছে আর তাদের উপর গাছ-পাথর ভেঙে পড়ছে, আর ঐ অবস্থায় তারা কোনোমতে মাটিতে নেমে আসতে পেরেছে।'

কর্মকর্তারা এর আগে জানিয়েছিলেন, ক্যাম্প মিস্টিক থেকে ২৭টি মেয়ে নিখোঁজ আছে। তবে রোববার সকালে কেরভিলের নগর ব্যবস্থাপক ডালটন রাইস এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, নিখোঁজের সংখ্যা এখন ১১। তবে কীভাবে সংখ্যাটি কমে এলো, তা ব্যাখ্যা করেননি ডালটন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ৪৫ মিনিটের মধ্যে গুয়াদালুপে নদীর উচ্চতা প্রায় ৮ মিটার পর্যন্ত পৌঁছে যায়, যা একটি দোতলা বাড়ির সমান। 

অপরদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্র্যাম্প অঙ্গরাজ্যে আর্থিক সহায়তা সহজ করার একটি নির্দেশনায় সই দিয়েছেন।

Comments

The Daily Star  | English

3 die of dengue as daily hospitalisations hit record high this year

Nearly 500 patients admitted in 24 hours as total cases rise to 12,763

1h ago