‘২০% মার্কিন শুল্ক পোশাক শিল্পের জন্য সুসংবাদ’

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনার ফলাফলকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ। এই আলোচনার মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জারি করা নির্বাহী আদেশের অধীনে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক নিশ্চিত করা হয়েছে

এই আদেশে ৭০টি দেশের ওপর সর্বোচ্চ ৪১ শতাংশ পর্যন্ত আমদানি শুল্ক আরোপ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।

বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, 'আজ আমরা সম্ভাব্য ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক এড়াতে সক্ষম হয়েছি। এটা আমাদের পোশাক খাত ও এর ওপর নির্ভরশীল লাখ লাখ মানুষের জন্য একটি সুসংবাদ।'

তিনি ওয়াশিংটনে বাণিজ্য আলোচনায় বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্য ছিলেন।

তিনি জানান, আমরা আমাদের বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার অবস্থানও ধরে রাখতে পেরেছি এবং বিশ্বের বৃহত্তম ভোক্তা বাজারে প্রবেশের নতুন সুযোগ তৈরি হলো।

ফলে বাংলাদেশ পোশাক রপ্তানি বাজারে প্রতিযোগী দেশ শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান ও ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে সমান অবস্থানে থাকছে। এই দেশগুলোর ওপরও ১৯ থেকে ২০ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।

বিপরীতে, ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি পূর্ণাঙ্গ চুক্তি করতে পারেনি।

তার ভাষ্য, 'আমরা আমাদের জাতীয় স্বার্থ ও সক্ষমতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সাবধানে আলোচনা করেছি।'

খলিলুর রহমান জানান, আমাদের পোশাক শিল্পকে সুরক্ষা দেওয়া ছিল শীর্ষ অগ্রাধিকার। তবে আমরা মার্কিন কৃষিপণ্যের ওপর আমাদের ক্রয় প্রতিশ্রুতিকেও গুরুত্ব দিয়েছি। এটি আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা লক্ষ্যকে সহায়তা করবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি রাজ্যগুলোর সঙ্গে সৌহার্দ্য তৈরি করবে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশটি দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে চলা দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পর এসেছে এবং তার প্রশাসনের শুরুর পর থেকে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন বলছে, দেশগুলোকে শুধু শুল্ক সমন্বয় নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ—যেমন নন-ট্যারিফ বাধা; অভ্যন্তরীণ নীতিমালা, যা বাণিজ্য ভারসাম্যে প্রভাব ফেলে তাও সমাধান করতে হবে।

হোয়াইট হাউসের মতে, প্রতিটি দেশের ওপর প্রয়োগ করা চূড়ান্ত শুল্ক হার কৌশলগত এবং অর্থনৈতিক ও নিয়ন্ত্রক বিভিন্ন ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রাধিকার বিষয়ক প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়েছে। যারা যুক্তরাষ্ট্রের চাহিদা যথাযথভাবে পূরণ করতে পারেনি, তারা সবচেয়ে উচ্চ শুল্কের সম্মুখীন হয়েছে, আর যারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নিজেদের সামঞ্জস্য করাতে রাজি হয়েছে, তারা আংশিক কমাতে পেরেছে।

বাংলাদেশের জন্য এ বিষয়ে ঝুঁকি ছিল অনেক বেশি। দেশের পোশাক শিল্প, যেখানে ৪০ লাখের বেশি মানুষ কর্মরত, তা যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতাদের ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল। ফলে বাংলাদেশ এমন এক পরিস্থিতি এড়াতে পেরেছে, যা তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাজারে রপ্তানি ব্যাহত করতে পারত।

ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের দূতাবাস থেকে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন বলেন, 'বাংলাদেশের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ফলে আমরা প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানে থাকব। আমাদের যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি ব্যাহত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে, আমরা আশা করেছিলাম, এই হার ২০ শতাংশের নিচে হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Healthcare reform begins, service yet to improve

The health administration initiated a series of reforms to improve medical care but struggled to implement them, say health experts

8h ago