এয়ার ইন্ডিয়ার বিধ্বস্ত উড়োজাহাজের ফুয়েল সুইচ বন্ধ করা হয়েছিল

আহমেদাবাদে বিধ্বস্ত এয়ার ইন্ডিয়ার উড়োজাহাজটির লেজ একটি ভবনের উপর আটকে আছে। ছবি: রয়টার্স

এয়ার ইন্ডিয়ার বিধ্বস্ত উড়োজাহাজটির দুটি ইঞ্জিনের ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচ দুর্ঘটনার ঠিক আগমুহূর্তে 'রান' (চালু) অবস্থান থেকে 'কাটঅফ' (বন্ধ) অবস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। শনিবার সকালে ভারতের এয়ারক্রাফট অ্যাকসিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরোর প্রকাশিত প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে।

১৫ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদনে দুর্ঘটনার জন্য কাউকে দোষারোপ বা চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো হয়নি। তবে ফুয়েল কনট্রোল সুইচের এই ব্যাপারটিকে দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত হিসেবে ধরা হচ্ছে।

গত ১২ জুন ভাগের গুজরাট রাজ্যের আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনের উদ্দেশে যাত্রা করার পরপরই বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। এতে উড়োজাহাজে থাকা ২৪২ জনের মধ্যে ২৪১ জন এবং মাটিতে থাকা আরও ১৯ জন নিহত হন।

ককপিটের শেষ মুহূর্ত

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উড়োজাহাজটি সর্বোচ্চ গতিতে পৌঁছানোর পর দুটি ইঞ্জিনেরই ফুয়েল কাটঅফ সুইচ দুটি এক সেকেন্ডের ব্যবধানে 'রান' থেকে 'কাটঅফ' পজিশনে চলে আসে'।

ককপিট ভয়েস রেকর্ডিং থেকে পাওয়া তথ্যের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, একজন পাইলটকে অন্যজনকে জিজ্ঞাসা করতে শোনা যায়, তিনি কেন (ফুয়েল) কাটঅফ করেছেন। জবাবে অন্য পাইলট বলেন যে তিনি তা করেননি।'

এই ঘটনার পরপরই বিমানটি দ্রুত উচ্চতা হারাতে শুরু করে। এরপর সুইচ দুটি আবারও 'রান' পজিশনে ফিরিয়ে আনা হয় এবং ইঞ্জিনগুলো শক্তি ফিরে পেতে শুরু করে বলে মনে হচ্ছিল। কিন্তু ঠিক তখনই একজন পাইলট 'মে-ডে মে-ডে মে-ডে' বলে জরুরি বিপদ সংকেত পাঠান।

এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলাররা পাইলটদের কাছে সমস্যা জানতে চান, কিন্তু এর মধ্যেই তারা বিমানটিকে বিধ্বস্ত হতে দেখেন।

প্রতিবেদনে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) ২০১৮ সালে একটি বুলেটিন জারি করে এই মডেলের উড়োজাহাজের 'ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচের লকিং সিস্টেম খুলে যাওয়ার সম্ভাবনা' সম্পর্কে সতর্ক করেছিল।

এয়ার ইন্ডিয়া তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, তারা ওই বুলেটিনের ব্যাপারে অবগত ছিলেন। কিন্তু বুলেটিনের পরামর্শ অনুযায়ী সুইচগুলো পরীক্ষা করেনি, কারণ নির্দেশনাটি 'বাধ্যতামূলক ছিল না, কেবল পরামর্শমূলক ছিল'।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিমানটির জন্য সব বাধ্যতামূলক নির্দেশনা এবং সতর্কতা এয়ার ইন্ডিয়া মেনে চলেছিল।

ভারতের তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, তদন্ত এখনো চলছে এবং সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর কাছ থেকে আরও তথ্য ও প্রমাণ চাওয়া হয়েছে। বোয়িং এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা তদন্তে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। এই তদন্তে মার্কিন ও ব্রিটিশ তদন্তকারীরাও অংশ নিয়েছেন।

উল্লেখ্য, দুর্ঘটনাকবলিত বিমানটিতে ১২ জন ক্রুসহ মোট ২৩০ জন যাত্রী ছিলেন। তাদের মধ্যে ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, সাতজন পর্তুগিজ এবং একজন কানাডার নাগরিক ছিলেন। বেঁচে যাওয়া একমাত্র যাত্রী একজন ব্রিটিশ নাগরিক, যাকে বিমানটির ধ্বংসস্তূপ থেকে হেঁটে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়। তিনি ইতিমধ্যে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন।

Comments

The Daily Star  | English
corruption-extortion-illustration-biplob-chakroborty

‘Now it’s our turn’ mindset fuelling abuse of power: TIB

While reforms are publicly touted, an ongoing culture of dominance, illegal occupation, and extortion resulting from "power abuse" by certain political parties is undermining public aspirations to build a democratic "New Bangladesh", it says

38m ago