আফগানিস্তানে ভূমিকম্প

নিহত ১,১২৪, আহত ৩,২৫১

কুনার প্রদেশের নুরগাল জেলার মাজার দারা গ্রামের বাসিন্দারা ভূমিকম্পে নিহতদের জানাজায় অংশ নিচ্ছে। ছবি: এএফপি
কুনার প্রদেশের নুরগাল জেলার মাজার দারা গ্রামের বাসিন্দারা ভূমিকম্পে নিহতদের জানাজায় অংশ নিচ্ছে। ছবি: এএফপি

আফগানিস্তানের ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা এক হাজার ১০০ ছাড়িয়েছে। পাশাপাশি আহত হয়েছেন তিন হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ।

আজ মঙ্গলবার এই তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স। 

আফগান রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি জানিয়েছে, অন্তত এক হাজার ১২৪ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন তিন হাজার ২৫১ জন। পাশাপাশি, আট হাজারেরও বেশি ঘড়বাড়ি ধ্বংস হয়েছে। 

মানবিক সংস্থাটি জানায়, আরও অনেক মানুষ ধ্বংসস্তুপের নিচে চাপা পড়ে আছে।  

জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র মোহাম্মাদ হামাদ এএফপিকে বলেন, 'হতাহতদের বেশিরভাগই কুনার প্রদেশে অবস্থান করছিলেন। পাশের প্রদেশ নানগারহারে কয়েকশ মানুষ আহত ও ১২ জন নিহত হয়েছেন।

'হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে', যোগ করেন তিনি।

গত রোববার রাতে স্থানীয় সময় ১১টা ৪৭ মিনিটে শক্তিশালী এই ভূমিকম্প জালালাবাদ এলাকায় আঘাত হানে।

পাকিস্তান সীমান্তের দুর্গম ও পার্বত্য অঞ্চলে রিখটার স্কেলে ৬ মাত্রার ওই ভূমিকম্প আঘাত হানে। এরপর অল্প সময়ের ব্যবধানে সেখানে আরও পাঁচবার ভূকম্পন অনুভূত হয়।

আজ মঙ্গলবারও উদ্ধার কার্যক্রম অব্যাহত ছিল।

কুনার প্রদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের প্রধান এহসানউল্লাহ এহসান এএফপিকে বলেন, 'রাতভর উদ্ধার কার্যক্রম চলেছে।'

তিনি জানান, এখনো 'দূর-দূরান্তের গ্রামগুলোতে অনেক আহত মানুষ আছেন। তাদেরকে সেখান থেকে বের করে এনে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে।'

গ্রামবাসীরা উদ্ধারকাজে যোগ দেন। তারা খালি হাতে ধ্বংসস্তুপ পরিষ্কার করে উদ্ধারকর্মীদের সহায়তা দেন। 

ভূমিকম্পের পর থেকে বন্ধুর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না ওবায়দুল্লাহ স্টোমান (২৬)। বন্ধুর খোঁজে ওয়াদির গ্রামে এসে ধ্বংসযজ্ঞের মাত্রা দেখে হতবাক হয়েছেন তিনি।

কুনার প্রদেশের নুরগাল জেলার মাজার দারা গ্রামের বাসিন্দারা ভূমিকম্পে নিহতদের জানাজায় অংশ নিচ্ছে। ছবি: এএফপি
কুনার প্রদেশের নুরগাল জেলার মাজার দারা গ্রামের বাসিন্দারা ভূমিকম্পে নিহতদের জানাজায় অংশ নিচ্ছে। ছবি: এএফপি

'আমি তাকে খুঁজে বেড়াচ্ছি। কিন্তু সে কোথাও নেই। এখানকার পরিস্থিতি দেখে আমি অনেক কষ্ট পাচ্ছি', বলেন তিনি।

হাহাকার করে ওবায়দুল্লাহ বলেন, 'এখন এখানে ভাঙা পাথর ছাড়া আর কিছুই নেই।'

মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস)জানিয়েছে, নানগারহার প্রদেশের জালালাবাদ শহর থেকে প্রায় ২৭ কিলোমিটার দূরে, ভূপৃষ্ঠ থেকে আট কিলোমিটার গভীরতায় ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।

বিশ্বের দরিদ্রতম দেশের তালিকায় নিচের দিকে আফগানিস্তানের অবস্থান। ২০২১ সালে তালেবান গোষ্ঠী দেশটির ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই চরম দুর্দশা ও দুর্ভোগের মধ্যে দিন কাটছে আফগানদের।

তালেবান সরকার প্রতিষ্ঠার পর দেশটিতে বিদেশি ত্রাণের প্রবাহ শূন্যের কোঠায় নেমেছে।

২০২৫ সাল পর্যন্ত কাবুলের সবচেয়ে বড় দাতা ছিল ওয়াশিংটন।

কিন্তু দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর ওই ত্রাণের সিংহভাগ বন্ধ হয়ে গেছে। যার ফলে নতুন এই দুর্যোগে আফগানদের দুর্ভোগ আরও অনেক বেড়ে যাবে বলে মত দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।

Comments