যে কারণে মেকআপ ছাড়া ‘মিস ইংল্যান্ড’ ফাইনালে মেলিসা

মেলিসা রাউফ। ছবি: মিস ইংল্যান্ডের ইনস্টাগ্রাম পেজ থেকে নেওয়া

সুন্দরী প্রতিযোগিতা মানেই প্রায় প্রতিটি রাউন্ডে বিভিন্ন ঢংয়ের ভারী গাউন আর চোখ ধাঁধানো মেকআপ। এতদিন এই ছিল প্রতিযোগিতার হালচাল। কিন্তু ৯৪ বছর পর 'মিস ইংল্যান্ড' এর প্রতিযোগীর মাধ্যমে পৃথিবী দেখতে পেল অন্য এক চিত্র।

প্রায় এক শতাব্দীর দীর্ঘ ইতিহাসে চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় প্রথম কোনো বিউটি কুইন মেকআপ ছাড়াই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেন ফাইনালে যাওয়ার লড়াইয়ে।

মেলিসা রাউফ, পুরো নাম মেলিসা নাজাফি রাউফ। জন্ম ২০০১ সালের ২৮ নভেম্বর লন্ডনের হাস্টিংস শহরে। বর্তমানে রাজনীতি নিয়ে পড়ছেন লন্ডনের কিংস কলেজে। মাত্র বিশ বছর বয়সী, সাউথ লন্ডনের অধিবাসী এই কলেজ ছাত্রীই প্রথম নারী প্রতিযোগী যিনি সম্পূর্ণরূপে কোনো মেকআপ ছাড়াই 'মিস ইংল্যান্ড' প্রতিযোগিতার সেমিফাইনালে অংশগ্রহণ করেছেন এবং ফাইনালে পৌঁছেছেন।

মেলিসা রাউফ। ছবি: মিস ইংল্যান্ডের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া

তিনি মনে করেন, একজন নারীকে কোনো অনুষ্ঠানের জন্য বা সাধারণভাবে বাইরে যাওয়ার সময় মেকআপ, মাসকারা কিংবা লিপস্টিক দেওয়ার একটি অলিখিত নিয়ম মানতে হয়। সেমিফাইনালে রানওয়েতে মেকাপবিহীন হেটেছিলেন এই আশায় যে নারীরা যাতে অনুপ্রেরণা পান তাদের চেহারার নিজস্ব বৈশিষ্ট্যগুলো সহজভাবে ধারণ করতে এবং মেনে নিতে।

বিচারকদের স্তম্ভিত করে দিয়ে এবং এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্তের ফলস্বরূপ পান ফাইনালে যাওয়ার সুযোগ এবং অসংখ্য ভক্ত অনুরাগীর শুভেচ্ছা বার্তা, যেখানে তারাও এই সহজ সংস্কারে প্রভাবিত হওয়ার কথা অকপটে স্বীকার করেন।

গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাউফ জানান, 'এটি আমার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আমি অনুভব করি বিভিন্ন বয়সের অনেক মেয়েরাই মেকআপ করে থাকেন এক ধরনের চাপ থেকে।'

মেলিসা রাউফ। ছবি: মিস ইংল্যান্ডের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া

তিনি আরও বলেন, 'যদি কেউ তাদের নিজেদের ত্বক বা গায়ের রঙ নিয়ে খুশি থাকেন, তাহলে মেকআপ দিয়ে আলাদা করে তাদের ত্বক ঢেকে রাখার প্রয়োজন নেই। বরং আমাদের খুঁতগুলোই আমাদের পরিচয় দেয় এবং একজন ব্যক্তিকে অনন্য করে তোলে। আমি এভাবেই এই মেলিসাকে প্রকাশ করতে চেয়েছি।'

সাক্ষাৎকারে তিনি এটিও ব্যাখ্যা করেন, 'আমি কখনই অনুভব করিনি আমি সৌন্দর্য্যের মানদণ্ড পূরণ করেছি। আমার নিজের এই ত্বকেই সুন্দর এবং সেই কারণে আমি কোনো মেকআপ ছাড়াই প্রতিযোগিতা করার আত্মবিশ্বাস পেয়েছি এবং এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।'

রাউফের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে মিস ইংল্যান্ড প্রতিযোগিতার পরিচালক, অ্যাঞ্জি বিসলে শুক্রবার একটি বিবৃতিতে সিএনএনকে বলেন 'আমরা ২০১৯ সালে বেয়ার ফেস টপ মডেল রাউন্ড চালু করেছি। কারণ বেশিরভাগ প্রতিযোগী প্রচুর মেকআপ এবং অতিরিক্ত সম্পাদনাসহ ছবি জমা দিচ্ছিল এবং আমরা মেকআপের পেছনে আসল ব্যক্তিকে দেখতে চেয়েছিলাম। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে মেক আপ করা সমর্থন করি। কিন্তু, তা যেনো এতো পুরু না হয় যে মাস্কের মতো মনে হয়।'

এমন সিদ্ধান্তের জন্য রাউফকে মিস ইংল্যান্ড হবার দৌঁড়ে এগিয়ে যাবার জন্য শুভকামনা জানান। বিশেষত অন্য সবাই যখন মেকআপ নিয়ে থাকছেন তখন এটি খুব দুঃসাহসী কাজ এবং অন্য নারীদের জন্য অনুপ্রেরণার।

আগামী অক্টোবরে হবে 'মিস ইংল্যান্ডের' চূড়ান্ত আসর। মেলিসা ঐ আসরে মিস ইংল্যান্ড ক্রাউনের জন্য লড়বেন। সম্পূর্ণ মেকআপবিহীন অবস্থায় আরও ৪০ জন প্রতিযোগীর সঙ্গে 'মিস ইংল্যান্ড' তকমা পেতে প্রসাধনীবিহীন ত্বকেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

Comments

The Daily Star  | English

UK govt unveils 'tighter' immigration plans

People will have to live in the UK for 10 years before qualifying for settlement and citizenship

1h ago