ঠোঁটের যত্নে যা করবেন

ঈদের আর বেশিদিন বাকি নেই। তাই আজই শুরু করুন ঠোঁটের যত্ন নেওয়া। সঙ্গে জেনে নিন লিপস্টিক ব্যবহারের বিশেষ পদ্ধতি।
ঠোঁটের যত্ন, রূপচর্চা, জীবনযাপন,ময়েশ্চারাইজার, লিপস্টিক, লিপ লাইনার,
স্টার ফাইল ফটো

ঈদের কেনাকাটা চলছে। ছুটিতে কী করবেন, কোথায় ঘুরতে যাবেন সেই পরিকল্পনাও ইতোমধ্যে করে ফেলেছেন। কিন্তু, আপনার ঠোঁট? উৎসবের আগে ঠোঁটেরও চাই পরিচর্যা। ঈদের আর বেশিদিন বাকি নেই। তাই আজই শুরু করুন ঠোঁটের যত্ন নেওয়া। সঙ্গে জেনে নিন লিপস্টিক ব্যবহারের বিশেষ পদ্ধতি।

ময়েশ্চারাইজ করা

শরীরের অন্যান্য অংশের তুলনায় ঠোঁটের ত্বক পাতলা হয়। ঠোঁটে সেনসেটিভ মেমব্রেনের একটি পাতলা আবরণ বা লেয়ার থাকে। একাধিক লেয়ার না থাকায় অতিরিক্ত গরম, রুক্ষ বা আর্দ্র আবহাওয়ায় ঠোঁটের যত্ন নেওয়া বেশি জরুরি। সূর্যের তাপ থেকে ঠোঁট রক্ষায় নিয়মিত ময়েশ্চারাজিং জরুরি। দিনে দুই বার এসপিএফ সমৃদ্ধ লিপবাম লাগান।

ঘন ঘন ঠোঁট ফাটার সমস্যা থাকলে গোলাপজল ও গ্লিসারিন মিশিয়ে ব্যবহার করুন। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এই মিশ্রণ ঠোঁটে লাগান। ঠোঁটে ঘন ঘন জিভ লাগাবেন না, তাহলে ঠোঁটের পাতলা মেমব্রেনের পিএইচ লেভেলে ভারসাম্য বজায় থাকবে না। এতে দ্রুত ঠোঁট ফাটতে শুরু করে। আবার খুব জোরে এক্সফোলিয়েট করবেন না, ঠোঁটের ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। আর লিপস্টিক লাগানোর ১৫ মিনিট আগে লিপবাম লাগিয়ে নিন। তাহলে ঠোঁটের ময়েশ্চার ও লিপস্টিকের স্থায়ীত্ব বাড়বে।

বাড়তি যত্ন

মুখের মতো ঠোঁটের মেকাআপও তুলে ফেলা জরুরি। প্রতিদিন রাতে ক্লিনজিং জেল দিয়ে লিপস্টিক তুলুন। অ্যালোভেরা সমৃদ্ধ ক্লিনজিং জেল ব্যবহার করতে পারলে ভালো। সাবান ব্যবহার করবেন না, ত্বক রুক্ষ হয়ে যাবে। ক্লিনজিং জেল ব্যবহারে ঠোঁটের ত্বক যেমন নরম থাকে তেমনি মেকআপ পুরোপুরি তুলে ফেলে। তাছাড়া অ্যালোভেরা ত্বকের জন্য খুবই উপকারী।

ঠোঁটের মেকআপ তোলার পর আমন্ড ক্রিম লাগান এবং সারারাত রেখে দিন। নিয়মিত ব্যবহারে ঠোঁটের কালো ভাব দূর হয়ে যাবে। নিয়মিত আমন্ড অয়েল বা দুধের সর লাগালে ঠোঁটের রঙ উজ্জ্বল হয়।

গোলাপের পাপড়ি পেস্ট করে ঠোঁটে লাগালে ঠোঁট নরম ও গোলাপি হবে। তাছাড়া নরম ঠোঁট পেতে রাতে শোওয়ার সময় নারকেল তেল, চন্দন বাটা ও গোলাপজল একসঙ্গে মিশিয়ে ঠোঁটে লাগাতে পারেন। সকালে উঠে আবার ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত এটি ব্যবহারে ঠোঁট নরম হবে।

লিপস্টিক শেড ও স্কিন টোন

ব্রাউন শেডের মধ্যে যেকোনো লিপস্টিক বেছে নেওয়ার সময় স্কিন টোনের কাছাকাছি শেডের লিপ শেড চেষ্টা করতে পারেন। চিকজের ওপর সামান্য লিপস্টিক লাগিয়ে দেখুন, তাহলে বুঝতে পারবেন ঠোঁটের ওপর দেখতে কেমন লাগবে। হাতের ত্বকে বা সরাসরি ঠোঁটে লিপস্টিক টেস্টার লাগাবেন না। পরিষ্কার ব্রাশ বা ইয়ার বাড দিয়ে লিপস্টিক টেস্টার লাগান। অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার ও এসপিএফ সমৃদ্ধ লিপস্টিক ব্যবহার করুন।

সন্ধ্যায় ঘুরতে বের হলে লিপ কালারের ওপর সামান্য গ্লস লাগান। চাইলে শুধু ব্রাইট লিপগ্লসও ব্যবহার করতে পারেন। শুধু ট্রেন্ডি বলেই কোনো বিশেষ লিপকালার ব্যবহার করতে হবে, এমন নয়। মন না চাইলে খুব বেশি ডার্ক কালার ব্যবহার করতে যাবেন না। গমরঙা বা ডার্ক স্কিন টোনে নিয়ন পিংক বা লাইট মভের মতো রঙ এড়িয়ে চলুন।

ঠোঁট মসৃণ না হলে লিপ কালার লাগানোর আগে সামান্য ফাউন্ডেশন লাগান। শুধু ফাউন্ডেশনে আবার ঠোঁট শুষ্ক মনে হতে পারে, তাই ফাউন্ডেশনের ওপর ওপর সামান্য লিপ বাম লাগান। ফাউন্ডেশন অনেক সময় লিপ কালারের রং একটু হালকা করে দেয়, তাই ফাউন্ডেশনের সঙ্গে মানানসই হবে এমন লিপ কালার নিতে হবে।

লিপ লাইনার

যে রঙের লিপস্টিক ব্যবহার করছেন সেই রঙের লিপ লাইনার ব্যবহার করুন। ন্যুড শেডের লিপ লাইনারও ব্যবহার করতে পারেন। ঠোঁটের শেপ বড় দেখাতে চাইলে লিপ লাইনার ভালো কাজ করবে। আবার ঠোঁট পাতলা হলে লাইনার দিয়ে ঠোঁটের শেপ ঠিক করতে পারেন। তবে খেয়াল রাখবেন লিপ লাইন যেন খুব আর্টিফিশিয়াল মনে না হয়।

সরু ও পাতলা ঠোঁটে আউটলাইনের জন্য ঠোঁটের ভিতরের দিকে হালকা টোনের লিপ কালার লাগান। বাইরের অংশ আউটলাইন করতে ডার্ক কালার ব্যবহার করুন। তারপর ভালো করে দুই ধরনের কালার ব্লেন্ড করুন। ক্রিমসমৃদ্ধ গ্লসি কালার বেছে নিন, ঠোঁটে ফোলাভাব তৈরি হবে। আর ঠোঁট মোটা হলে ম্যাট কালারের লিপ কালার ব্যবহার করুন। নিচের ঠোঁট বেশি মোটা হলে ডার্ক শেডের লিপ কালার ব্যবহার করুন ও ওপরের ঠোঁটে হালকা লিপ কালার ব্যবহার করুন।

বিশেষ সমস্যায়

যাদের ঠোঁটের ত্বক বেশি সংবেদনশীল, তাদের সহজে ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তবে, এ ধরনের ঠোঁটে ঘন ঘন জিভ লাগাবেন না। তাহলে এলার্জি থেকে ঠোঁট ফুলে যেতে পারে এবং ঠোঁটের চারপাশে ঘা হতে পারে। মেয়াদোত্তীর্ণ কসমেটিকসের ব্যবহার, অতিরিক্ত ক্লোরিনের সংস্পর্শ বা বেশি চুইংগাম চিবালে অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে। আবার ফল খাওয়ার আগে অবশ্যই ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। কারণ, ফলে কোনো ক্যামিক্যাল থাকলে ঠোঁটে অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে।

লিপস্টিক ভালো রাখতে

গরমের সময়ে লিপস্টিক রেফ্রিজারেটরে রাখতে পারেন। তবে, অবশ্যই প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরে তারপর রাখতে হবে। অতিরিক্ত গরম বা আর্দ্রতার সমস্যা না থাকলে ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ারে রাখতে পারেন। লিপ পেনসিল নিয়মিত শার্পনার দিয়ে কেটে রাখুন। পেনসিলের মুখ ক্যাপ দিয়ে আটকে রাখুন। কারণ ধুলা লাগলে লিপ পেনসিল নষ্ট হয়ে যায়। অন্যান্য ব্রাশের মতো লিপ ব্রাশও মাসে ২-৩ বার পরিষ্কার করুন। হালকা গরম পানিতে সাবান ও অ্যান্টিসেপ্টিক লোশন মিশিয়ে সেই পানিতে ব্রাশ ধুয়ে নিন। তারপর শুকিয়ে বক্সে ভরে তুলে রাখুন।

Comments

The Daily Star  | English

Food inflation above 10% for half a year, why?

Experts say raising policy rate would have little impact on lowering food prices

2h ago