ঈদে পাঞ্জাবি কেনার সময় যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন
ছেলেদের ঈদের পোশাক মানেই যেন পাঞ্জাবি। কিন্তু এই উৎসবকে কেন্দ্র করে দোকানে পণ্যের সমারোহ ও বাছাইয়ের সুযোগ এত বেশি থাকে যে, পছন্দের পাঞ্জাবি বেছে নেওয়া বেশ কঠিনই হয়ে পড়ে।
পছন্দসই পাঞ্জাবি কেনার ক্ষেত্রে ৩টি বিষয়ে ভাবতে হয়- এটি ঠিকঠাকভাবে ফিট করছে কিনা, কাপড় যথেষ্ট আরামদায়ক কি না এবং রং ও ডিজাইন ক্রেতার পছন্দ কি না। তবে চাহিদামতো পাঞ্জাবির সাইজ আর পছন্দ মিললেও ক্রেতারা মূলত নির্ভর করেন নিজেদের বাজেটের ওপর।
অনেকেই দেশের শীর্ষ পোশাক ব্র্যান্ডগুলো থেকে পাঞ্জাবি কিনতে পছন্দ করেন, আবার অনেকেই অন্যান্য জায়গায় স্বকীয় ডিজাইন আর তুলনামূলক স্বল্পমূল্যের পণ্য খোঁজেন। আবার কেউ কেউ কাপড় কিনে নিজেদের মাপে পাঞ্জাবি সেলাই করিয়ে নিতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।
উৎসবের সময় দেশের শীর্ষস্থানীয় ফ্যাশন হাউজগুলো বিপুল পরিমাণ পাঞ্জাবি আনে। এগুলো থেকে পাঞ্জাবি কেনার সুবিধা হলো, তাদের শোরুম শপিং মলসহ সুবিধামতো অনেক স্থানেই খুঁজে পাবেন এবং পাঞ্জাবি সেলাই করাই থাকবে। বাড়তি ঝামেলা নিতে হবে না। নজরকাড়া ধরন এবং সূচিকর্মে সাজানো দেশের প্রথিতযশা ফ্যাশন ডিজাইনারদের নকশায় করা এই পাঞ্জাবিগুলো এক ধরনের নান্দনিক তৃপ্তি দেয়। এই ব্র্যান্ডগুলোর অনলাইনেও রয়েছে সরব উপস্থিতি, তাই পাওয়া যায় ঘরে বসেই পণ্য পাওয়ার সুবিধাও।
বিভিন্ন ফ্যাশন হাউজের এসব পাঞ্জাবির নেতিবাচক দিকও আছে। যেমন এগুলো কিছুটা ব্যয়বহুল। আবার পরিচিত কারো সঙ্গে নিজের শখের পাঞ্জাবিটি মিলে যাওয়ার আশঙ্কা নেহাৎ কম নয়! রাস্তায় দেখা মিলতে পারে একই পাঞ্জাবি পরা কোনো অপরিচিত জনেরও। যেহেতু এই পাঞ্জাবিগুলোর অনেকগুলো পিস তৈরি করা হয় এবং তারমধ্যে সুন্দরগুলোই দ্রুত ও বেশি বিক্রি হয়, তাই কারো না কারো সঙ্গে পাঞ্জাবি মিলে যেতেই পারে।
ব্র্যান্ড হাউজগুলো ফ্যাশন চলতি ডিজাইন এবং নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে কেন্দ্র করে পণ্য ডিজাইন করে থাকে। তাই স্রোতের বিপরীতে চলতে যারা পছন্দ করেন, নিজেকে একটু স্বকীয়ভাবে উপস্থাপন করতে চান, তাদের এসব পণ্য পছন্দ নাও হতে পারে।
এদিকে নন ব্র্যান্ডের খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে পাঞ্জাবি কেনার সুবিধা হলো অনন্য ডিজাইন এবং দাম কিছুটা কম। রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোড, বদরুদ্দোজা সুপার মার্কেট, নূর জাহান সুপার মার্কেট এবং পুরান ঢাকার শরীফ মার্কেটে পাওয়া যাবে এসব। তবে এক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে, কাপড়ের উপাদান ও মানের ব্যাপারে। আর বিক্রয়কর্মীর সঙ্গে দরদামেও হতে হবে পটু।
এ ছাড়া, শৈল্পিক ডিজাইন আর মনমতো ফিটিংয়ের জন্য বিশেষভাবে সেলাই করা পাঞ্জাবি রাখতে পারেন বিকল্প বিবেচনায়। এতে চাইলেই কোনো ডিজাইন এবং সূচিকর্ম নির্ধারণ করে দেওয়া যায় দর্জিকে। এতে ফ্যাব্রিকের মানের উপরও ক্রেতার নিয়ন্ত্রণ থাকে। মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডের পাশে আল্লাহ করিম জামে মসজিদ সুপার মার্কেট এবং মিরপুর-১১ মোহাম্মদিয়া মার্কেটে এমন পাঞ্জাবি বানিয়ে নেওয়া যায়। এক্ষেত্রেও রয়েছে কিছু অসুবিধা। একে তো কাপড় আর সেলাইয়ের খরচ, তারপর উৎসবের কয়েক সপ্তাহ আগেই অর্ডার করতে হয়। এরপর পণ্য হাতে পেয়ে যে রকম হবে কল্পনা করেছিলেন সেরকমটা না হলেও কিছু করার থাকে না।
সবচেয়ে বড় কথা, এখন যেহেতু ঈদ প্রায় চলে এসেছে, পাঞ্জাবি বানাতে দিলে তা সময়মতো হাতে না পাওয়ার আশঙ্কাই বেশি!
আরেকটি জিনিস পাঞ্জাবি কেনার সময় খেয়াল রাখবেন। টেকসই, ফেব্রিকের মান এবং আরাম অন্যান্য বিষয়ের থেকেও বড় বিষয় হচ্ছে উৎসব শেষ হওয়ার পর পাঞ্জাবিটির উপযোগিতা কেমন। কেনার সময়ই তা ভেবে নিন।
অনুবাদ করেছেন তানজিনা আলম
Comments