এই ঈদে পাঞ্জাবির ট্রেন্ড
উৎসবে পাঞ্জাবি পুরুষদের প্রিয় পোশাক। উৎসব যখন গ্রীষ্মে, তখন পাঞ্জাবি আরও অপরিহার্য হয়ে যায়। এই পোশাক যেমন আরামদায়ক, তেমনি ফ্যাশন অনুষঙ্গ হিসেবেও জনপ্রিয়।
বিশেষ করে ঈদের নামাজ পাঞ্জাবি ছাড়া যেন চলেই না। তাই পুরুষদের কেনাকাটায় যতই অনীহা থাকুক না কেন, ঈদের সকালের নামাজের জন্য একটা নতুন পাঞ্জাবি কিন্তু না হলেই নয়।
বর্তমানে পুরুষরা অনেক ফ্যাশন সচেতন। তাই তাদের চাহিদাকে মূল্য দিয়ে প্রতি বছরই নতুন ডিজাইনের পাঞ্জাবি আসছে,বছর বছর বদলাচ্ছে ট্রেন্ড। চলুন জেনে নেওয়া যাক এই বছর কেমন ট্রেন্ড চলছে পাঞ্জাবিতে।
ফ্যাশন ব্র্যান্ড 'জেন্টল পার্কের' সিনিয়র ডিজাইনার শফিক রেহমান বলেন, 'এবার যেহেতু ঈদ গরমে, তাই আরামদায়ক কাপড়ে হালকা কাজকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। পাঞ্জাবির গলায় ও কাফে এমব্রয়ডারি নকশা করা হয়েছে। সারা পাঞ্জাবিতে কাজ করা থাকলেও সেখানেও ছোট ছোট নকশাই প্রাধান্য পেয়েছে।'
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সিল্ক, লিলেন, রেমি কটন, ফাইন কটন, কটনের পাঞ্জাবির চাহিদা বেশি। গত বছরের মতো এবারও ডিজিটাল প্রিন্টের পাঞ্জাবি চাহিদা রয়েছে। পাঞ্জাবির বুকের কাছটায় এমব্রয়ডারি, সুই-সুতার ভারী কাজের দেখা মিলছে বেশি। তাছাড়া এবার জমকালো কাজের পাঞ্জাবিও রয়েছে অনেক। পাঞ্জাবির সামনের অংশটায় ঘন কাজ করা হয়েছে।
শীত না থাকলেও পাঞ্জাবির সঙ্গে ম্যাচ করে হালকা কাপড়ের কটিও এবার বেশ জনপ্রিয়।
ডিজাইনার শফিক রেহমান বলেন, 'এবারে আলাদা করে কটি ডিজাইনের পাশাপাশি পাঞ্জাবির সঙ্গে সমন্বয় করে পাঞ্জাবি ও কটি সেট তৈরি করা হয়েছে। গত কয়েক বছর ধরেই পুরুষদের কাছে কাবলি সেট বেশ জনপ্রিয়। এবারও তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি। এবার চাইলে গাঢ় রং যেমন বোটল গ্রিন, মাস্টার্ড ইয়ালো, নেভি ব্লু , মেরুন কাবলি সেট ঈদের স্টাইল করতে পারেন। সিল্কের ওপর ভারী কাজের এমব্রয়ডারি বা ঘন হাতের কাজের পাঞ্জাবি রাতের জন্য নির্বাচন করতে পারেন। তাছাড়া পাঞ্জাবিতে এবার জারদৌসি, চুমকি ,কারচুপি, লখনৌ স্টিচের কাজ দেখা যাচ্ছে। এবার এক রংয়ের পাঞ্জাবি ওপর কনট্রাস্ট সুতার কাজ প্রাধান্য পেয়েছে।'
পাঞ্জাবির আকর্ষণের একটি বড় অংশ জুড়ে আছে বোতামের নকশা। পাঞ্জাবি কিনতে গেলে কাপড়ের সঙ্গে বোতামের ডিজাইন, বাটন প্লেট খেয়াল করতে ভুলবেন না।
এবার ঈদে প্রিয় মানুষের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করতে নিতে পারেন ম্যাচিং পাঞ্জাবি। এই সময়ে কাপল ড্রেস সেট বেশ জনপ্রিয়। অনলাইন-অফলাইনে জনপ্রিয় বুটিক হাউজগুলো শাড়ি বা সালোয়ার কামিজের সঙ্গে ম্যাচিং করে পাঞ্জাবি তৈরি করছে।
ফ্যাশন হাউজ ভারমিলিয়নের ডিজাইনার ফেরদৌসী আরা বলেন, 'চেষ্টা থাকে প্রতি উৎসব-পার্বণে ম্যাচিং করে নারী-পুরুষের পোশাক ডিজাইনের। আমরা সাড়া পাচ্ছি বেশ। এবার যেহেতু ঈদ ও পহেলা বৈশাখ কাছাকাছি সময়ে তাই হালকা রঙের পাশাপাশি রঙিন ও উজ্জ্বল রংও প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।'
ঈদের সকালের পরতে পারেন হালকা রঙের পাঞ্জাবি। সাদা, অফ হোয়াইট, আকাশি, হালকা বেগুনি, পাউডার পিংকের মতো হালকা রংগুলো সকালে স্নিগ্ধতা ছড়াবে। রাতের পাঞ্জাবি হোক গাঢ় রঙের। নির্বাচন করতে পারেন ভারী কাজের পাঞ্জাবি।
এ তো গেল ডিজাইনার পাঞ্জাবির কথা। চাইলে নিজের পছন্দমতো ফেব্রিক আর ডিজাইন দিয়ে বানিয়েও নিতে পারেন পাঞ্জাবি। অনেক সময় দেখা যায় ফেব্রিক পছন্দ হলেও ডিজাইন পছন্দ হয় না, আবার ডিজাইন পছন্দ হলে ফেব্রিক পছন্দ হয় না। যারা শৌখিন আর নিজেদের একদমই আলাদাভাবে উপস্থাপন করতে চান, তারা পছন্দ মাফিক ফেব্রিক দিয়ে বানিয়ে নিতে পারেন পছন্দের পাঞ্জাবিটি।
মোহাম্মদপুরে সাতমসজিদ রোডের পাঞ্জাবি কারিগর ইখলাস উদ্দিন বলেন, 'অনেকেই আছেন নিজেদের গায়ের মাপে পাঞ্জাবি পরতে পছন্দ করেন। দেশি-বিদেশি উন্নতমানের কাপড়ের ওপর এমব্রয়ডারি, কারচুপি, জারদৌসি কাজ করিয়ে আমাদের কাছ থেকে পাঞ্জাবি বানিয়ে নেন অনেকে।'
তবে এ রকম পরিকল্পনা থাকলে আপনাকে রোজার আগেই দর্জিবাড়ি যেতে হবে। এবার না হলেও পরের বারের জন্য পরিকল্পনা করে রাখতেই পারেন!
Comments