রাতে ঘুমানোর আগে ত্বকের যত্ন নেবেন যেভাবে

রাতে ত্বকের যত্ন
ছবি: সংগৃহীত

সারাদিন ত্বকের যত্ন নেওয়া হলেও রাতের যত্নে অনেকেই অবহেলা করে থাকেন। তাই দিনে অত্যন্ত দামি এবং ভালো মানের সামগ্রী ব্যবহার করেও স্বাস্থ্যকর ত্বক পাওয়া যায় না। রাতে ঘুমের সময় শুধু শরীরই বিশ্রাম পায় না, ত্বকও বিশ্রাম নিয়ে থাকে। এ কারণে ঘুমের আগে ত্বকের যত্ন নেওয়া খুবই জরুরি।

অনেকেই আছেন, যারা রাতে ত্বকের যত্ন নিলেও ত্বকের অবনতি হতে থাকে। এর একটিই কারণ, আর তা হচ্ছে ত্বকের ধরন অনুযায়ী সঠিক উপায়ে যত্ন না নেওয়া। ভুল পদ্ধতিতে যত্ন নিলে ত্বকের উন্নতি হওয়ার চেয়ে অবনতিটাই হয়ে থাকে বেশি। তাই রাতে কোন ত্বকে কীভাবে যত্ন নিতে হয় তা জেনে নিতে হবে।    

রাতে শুষ্ক ত্বকের যত্ন

যাদের শুষ্ক ত্বক তাদের খুব জলদি বয়সের ছাপ পড়ার ঝুঁকি থাকে। নিয়ম মেনে যত্ন নিলে এ ধরনের সমস্যার কিছুটা হলেও সমাধান পাওয়া যাবে। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে সবসময় এবং সবার আগে ত্বক ভালো করে পরিষ্কার করে নিতে হবে। দিনের বেলা যদি কোনো প্রকার প্রসাধনী সামগ্রী বা সানস্ক্রিন ব্যবহার করা হয় তাহলে অবশ্যই রাতে ডাবল ক্লিনজিং করে নিতে হবে। ডাবল ক্লিনজিং করতে প্রথমেই ওয়েল বেজড ক্লিনজার কটন প্যাডে নিয়ে পুরো মুখ পরিষ্কার করে নিতে হবে, তারপর ফোম বা ওয়াটার বেজড ক্লিনজার দিয়ে মুখ আরও একবার পরিষ্কার করে নিতে হবে।

সোডিয়াম সালফেট, স্যালিসাইলিক এসিড, গ্লাইকোলিক এসিড, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল (যেমন- ট্রাইক্লোজান), প্যারাবেন, অ্যালকোহল জাতীয় উপাদানগুলো ত্বক শুষ্ক করে দেয়। তাই যে ক্লিনজারে এসব উপাদান আছে সেগুলো এড়িয়ে চলাই ভালো।

হায়ালুরোনিক অ্যাসিড, গ্লিসারিন, সিরামাইড, অ্যালোভেরা, হানি, রাইস এক্সট্র্যাক্টের মতো উপাদানগুলো আছে কি না দেখে ক্লিনজার বাছাই করলে ভালো হয়। কারণ এই উপাদানগুলো ত্বককে হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে।

এভাবে পরিষ্কার করার পর টোনিংয়ের ধাপ আসে। ভালো মানের হাইড্রেটেড টোনার ব্যবহার করতে হবে।

এর পরের ধাপ খুব গুরুত্বপূর্ণ, আর তা হলো ময়েশ্চারাইজিং। শুষ্ক ত্বকে অবশ্যই ভারী ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে।

রাতে তৈলাক্ত ত্বকের যত্ন

তৈলাক্ত ত্বকের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো ত্বক সবসময় তৈলাক্ত থাকে, চিটচিটে ভাব থাকে এবং বাইরের ধুলোবালি খুব সহজেই ত্বক শুষে নিয়ে ত্বকের লোমকূপগুলো বন্ধ করে দেয়। তাই তৈলাক্ত ত্বক সবসময় পরিষ্কার রাখা খুব জরুরি। এ ধরনের ত্বকের ক্ষেত্রেও ডাবল ক্লিনজিং আবশ্যক।

তৈলাক্ত ত্বকে অনেকেরই অয়েল বেজড ক্লিনজার স্যুট করে না। এ ধরনের ত্বকের জন্য একটি নিরাপদ বিকল্প হচ্ছে মাইসেলার ওয়াটার। প্রথমে মাইসেলার ওয়াটার দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করে পরে ওয়াটার বেসড ক্লিনজার দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে হবে। আর তৈলাক্ত ত্বকে যেহেতু ব্রনের সমস্যা বেশি হয়ে থাকে তাই স্যালিসাইলিক এসিডযুক্ত ক্লিনজার ভালো।

টোনিং ত্বকের পিএইচ ভারসাম্য ঠিক রাখতে সাহায্য করে। তাই সংবেদনশীল ত্বক ছাড়া সবরকম ত্বকে টোনিং করাটা জরুরি।

এরপর আসে ময়েশ্চারাইজিং। আমরা অনেকেই ভেবে থাকি, তৈলাক্ত ত্বকে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হয় না। কিন্তু এটি ভুল ধারণা। ক্লিনজিং এবং টোনিংয়ের পর ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার সব রকম ত্বকের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। তবে তৈলাক্ত ত্বকে ওয়াটার বেজড এবং হালকা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। বেশি ভারী বা হাইড্রেট করে এমন ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারে ত্বকে ব্রনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।  

কম্বিনেশন ত্বকের যত্ন

কম্বিনেশন ত্বক নিয়ে সবচেয়ে বেশি ঝামেলার সম্মুখীন হতে হয়ে। কারণ এ ধরনের ত্বকে কিছু অংশে শুষ্কতা এবং কিছু অংশে তৈলাক্ত ভাব অনুভূত হয়ে। সেক্ষেত্রে এ ধরনের ত্বকের জন্য সামগ্রী বুঝে-শুনে কেনা উচিত।

প্রথমেই কম্বিনেশন ত্বকে ডাবল ক্লিনজিং করে নিতে হবে। টোনিং করার জন্য প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি টোনার ব্যবহার করা যেতে পারে, যেমন গোলাপ জল বা জিঞ্জার মিন্ট টোনার। ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে অ্যালোভেরা জেল। এটি কম্বিনেশন ত্বকের জন্য উপকারী। তবে অ্যালোভেরাতে অ্যালার্জি থাকলে এর বদলে অ্যান্টি অক্সিডেন্টযুক্ত হালকা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করলে কম্বিনেশন ত্বকের রাতের যত্ন শেষ।

রাতে নিয়মিত ক্লিনজার, টোনার আর ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের পরে ত্বকের প্রয়োজন অনুযায়ী সিরাম বা নাইট ক্রিমও ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন: ব্রনের জন্য বা পিগমেন্টেশনের জন্য নির্দিষ্ট কোনো সিরাম বা ক্রিম।

  

Comments

The Daily Star  | English

Tribute to July uprising: Drone show lights up Dhaka's sky

In 12 vivid motifs, the July uprising came alive, tracing the heroism of Abu Sayed and the stirring role of women in the movement

7h ago