মুখের গড়ন বুঝে যেভাবে চুল কাটবেন

কোন গড়নে কোন হেয়ারকাট মানাবে তা অনেকেই জানেন না। অনেকে নিজের মুখের গড়নও বুঝতে পারেন না। এ কারণে পার্লার বা স্যালনে গিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে পড়তে হয়।
ছবি: সংগৃহীত

নিজের ব্যক্তিত্বকে ফুটিয়ে তুলতে সঠিক হেয়ারস্টাইল খুব জরুরি। আর সঠিক হেয়ারস্টাইলের জন্য দরকার সঠিক হেয়ারকাট। এই কাজটি যদি ঠিকঠাকভাবে করতে চান তবে জানতে হবে মুখের অবয়বের সঙ্গে কোন হেয়ারকাটটি মানানসই হবে।

কিন্তু কোন গড়নে কোন হেয়ারকাট মানাবে তা অনেকেই জানেন না। অনেকে নিজের মুখের গড়নও বুঝতে পারেন না। এ কারণে পার্লার বা স্যালনে গিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে পড়তে হয়। আজ তাই জেনে নেব মুখের গড়ন অনুসারে চুলের কাট সম্পর্কে।

মুখের গড়ন বোঝার উপায়

চলমান ফ্যাশনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বা ট্রেন্ড দেখে নিজেকে উপস্থাপন করতে যা-ই করুন না কেন, তা হওয়া উচিত আপনার মুখের আকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। কারণ চেহারা অনুযায়ী হেয়ারকাটিং এবং সেটিং ঠিক না থাকলে দেখতে ভালো না লাগার আশঙ্কাই বেশি।

আপনার মুখের আকৃতি বা গড়ন কেমন তা বুঝতে প্রথমে পুরো মাথার চুল মুখের ওপর থেকে সরিয়ে আঁচড়িয়ে উঁচু করে বেঁধে নিন। তারপর আয়নার সামনে সোজা হয়ে দাঁড়ান এবং খেয়াল করুন আপনার মুখের গড়ন লম্বাটে, গোলাকৃতি নাকি ডিম্বাকৃতির। এ ছাড়া, পনিটেল করলে আপনি সহজেই চুলের ঘনত্ব এবং দৈর্ঘ্য বুঝতে পারবেন। চুলের ঘনত্ব এবং দৈর্ঘ্যর ওপরও অনেকাংশে আপনার হেয়ারকাট স্টাইল নির্ভর করে।

মুখের কোন গড়নে কোন হেয়ারকাট

গোলাকৃতি বা রাউন্ড শেপ

নারীদের ক্ষেত্রে গোলাকৃতি চেহারার সঙ্গে ফ্রন্ট লেয়ার, লং বব, লং ব্যাংগস কাট ভালো মানিয়ে যাবে। এমন হেয়ারকাট দিতে হবে যাতে করে চেহারার দুই পাশের ফোলা ভাব কম বোঝা যায়। পুরো চুলটা মিডিয়াম টু লং রাখলে হেয়ারকাট খুব সুন্দর মানিয়ে যাবে। পুরুষদের ক্ষেত্রে জ্যাগড স্পাইক, বাজ কাট, পলিশড ফ্রেঞ্চ ক্রপ, ক্লাসিক পম্পাডুর বা লং হেয়ার রেখে সামুরাই বান করলেও ভালো লাগবে।

চৌকো বা স্কয়ার শেপ

স্কয়ার শেপের চেহারার জন্য এমন কাট ঠিক করতে হবে যাতে করে চেহারার বেশি চওড়া ভাবটা যতটুকু সম্ভব কম বোঝা যায়। সেক্ষেত্রে চুল একেবারে ছোট করে ফেললে চেহারা আরও বড় দেখাবে। এরকম শেপের ফেইসের জন্য চুল কাঁধ পর্যন্ত লম্বা রেখে ফ্রন্ট লেয়ার বা সাইড ব্যাংস কাট দিলে ভালো লাগবে। এতে করে চেহারার জ লাইনটা সহজেই ঢেকে যাবে এবং চেহারা হাল্কা রাউন্ড শেপ দেখাবে।

ছেলেদের ক্ষেত্রে চুল ছোট রেখে যেকোনো কাট ভালো লাগবে। সেক্ষেত্রে আইভি লিগ, স্লিক ব্যাক আন্ডারকাট, ক্রিউ কাট, টপ নট কাটগুলো বেশ মানিয়ে যাবে।

ডিম্বাকৃতি বা ওভাল শেপের জন্য হেয়ারকাট

ওভাল শেইপ বা ডিম্বাকৃতি ফেস শেপের ক্ষেত্রে প্রায় সব ধরনের হেয়ারকাট খুব মানানসই হয়। তবে ব্যাংগস এবং ফ্রিঞ্জ হেয়ারকাট এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। কারণ এই কাটগুলোতে কপাল ঢেকে গিয়ে ফেসের শেপ নষ্ট হয়ে যায়। চেহারায় গোলাকার একটি ভাব তৈরি হয়। তাই চুল যদি স্ট্রেট হয়ে তাহলে ফেদার কাট, বব কাট, ভলিউম লেয়ার,ফুল হেয়ার লেয়ার কাট দিতে পারেন। আর চুল যদি কোঁকড়া হয়ে থাকে তাহলে স্টেপ কাট, ইউ কাট ভালো লাগবে।

পুরুষরা ওভাল শেপের চেহারার জন্য সাইড পার্ট, স্লিক ব্যাক, ফক্স হক স্টাইল করে নিতে পারেন।

বরফি বা ডায়মন্ড শেপ

ডায়মন্ড শেপের চেহারায় চোয়াল দৃঢ় হয়ে থাকে। নারীরা এক্ষেত্রে ফ্রেঞ্চ বব, সাইড ব্যাংগস মেসি কাট, ওলফ কাট, লং লেয়ার, ব্লান্ট বব কাটগুলো দিলে সুন্দর মানিয়ে যাবে। ফক্স হক বা টেক্সচারড ক্রপ কাটও দারুণ মানিয়ে যায়।

পুরুষরা বেছে নিতে পারেন ক্লাসিক সাইড পার্ট, পম্পাডুর, মেসি ফ্রিঞ্জ কাট। তাছাড়া ব্যাকব্রাশ করে রাখলেও ভালো লাগবে।

ত্রিভুজাকৃতি বা ট্রায়াঙ্গেল শেপ

ট্রায়াঙ্গেল শেপ বা ত্রিভুজাকৃতির চেহারার মানুষ সচরাচর কমই হয়ে থাকে। এতে কপালের জায়গাটা একটু চাপানো হয়ে থাকে। জ লাইন দৃঢ় হয়ে থাকে এবং থুতনি হয়ে থাকে চোখা। এ ধরনের ফেসের জন্য সুন্দর হবে কাট ব্যাংগস, লেয়ার,ডিপ সাইড পার্ট উইথ স্ট্রেইট কাট।

ছেলেরা বেছে নিতে পারেন কুইফ হেয়ারকাট, ক্রিউ কাট, বাজ কাট।

হেয়ারকাট নেওয়ার সময় আরও কিছু বিষয় বিবেচনায় রাখুন। যেমন আপনার বয়স, পোশাকের স্টাইল এবং পরিবেশ।

 

Comments