পুষ্টিগুণের রাজা ইলিশ

বাঙালির প্রিয় মাছ ইলিশ। খেতে যেমন সুস্বাদু, তেমনি পুষ্টিগুণেও অনন্য। অনেকগুলো খাদ্য উপাদানের এক বিরাট পুষ্টি ভাণ্ডার এ মাছ।
স্টার ফাইল ফটো

বাঙালির প্রিয় মাছ ইলিশ। খেতে যেমন সুস্বাদু, তেমনি পুষ্টিগুণেও অনন্য। অনেকগুলো খাদ্য উপাদানের এক বিরাট পুষ্টি ভাণ্ডার এ মাছ।

১০০ গ্রাম ইলিশ মাছে আনুমানিক ৩১০ ক্যালরি, ২২ গ্রাম প্রোটিন ও ১৯ দশমিক ৫ গ্রাম ফ্যাট থাকে। একইসঙ্গে মাছের তেলে থাকে পলিআনস্যাচুরেটেড ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড, ইপিএ ও ডিএইচএ, যেগুলো হৃদরোগ, স্ট্রোক, উচ্চ রক্তচাপ, অ্যারিথেমিয়া, ডায়াবেটিস, আথ্রাইটিসসহ ব্রেন ডেভেলপমেন্ট ও ক্যানসার প্রতিরোধে বিশেষভাবে কার্যকরী বলে কিছু গবেষণা নিবন্ধে দেখা গেছে।

এ ছাড়াও, মানবদেহের জন্য প্রতিদিনের দরকারি ২৭ ভাগ ভিটামিন সি, ২ ভাগ আয়রন ও ২০৪ ভাগ ক্যালসিয়াম ইলিশ মাছ থেকে পাওয়া যায়।

ইলিশের অধিক পরিমাণ ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড হার্টের ট্রাইগ্লিসারাইডের পরিমাণ ও উচ্চ রক্তচাপ কমিয়ে আনে। একইসঙ্গে রক্ত জমাট বাধাও প্রতিরোধ করে। ইলিশ মাছ মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায় এবং ইনসুলিন নিয়ন্ত্রণ রাখতে সহায়তা করে।

ইলিশে বিদ্যমান ভিটামিন এ ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড চোখের জন্য উপকারী। ইলিশ রক্ত কোষের জন্যও বিশেষভাবে উপকারী। এপিএ ও ডিএইচএ নামক ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড থাকে বলেই ইলিশ মাছ দেহের রক্ত সঞ্চালনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

ইলিশ মাছে আরও থাকে ভিটামিন এ, ডি ও ই। খুব কম খাবারের মধ্যেই ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। ভিটামিন এ রাতকানা রোগ ও ভিটামিন ডি শিশুদের রিকেট রোগ প্রতিরোধ করে।

ইলিশে আয়োডিন, সোডিয়াম, জিংক ও পটাশিয়ামের মতো প্রচুর পরিমাণ মিনারেল রয়েছে। আয়োডিন থাইরয়েড গ্ল্যান্ডকে সুরক্ষিত রাখে ও বিভিন্ন এনজাইম নির্গত হতে সহায়তা করে, যা ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়ক।

ইলিশ থেকে প্রাপ্ত মিনারেল ফসফরাস ও ক্যালসিয়াম হাড় গঠনে সহায়তা করে। সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও আয়রন দেহ গঠনে ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নে কাজ করে।

ওমেগা-৩ আমাদের ত্বকের জন্য বিশেষভাবে উপকারী। এর প্রোটিন আমাদের ত্বকে কোলাজেন তৈরিতে সহায়তা করে। ফলে ত্বক থাকে সজীব ও প্রাণবন্ত।

ইলিশ রান্না করা যায় অসংখ্য পদ্ধতিতে। ইলিশ রান্না করতে খুব কম তেল প্রয়োজন হয়, কেননা ইলিশের মধ্যেই অনেক তেল থাকে।

সতর্কতা: অনেকেই আছেন যাদের ইলিশ মাছ খেলে অ্যালার্জির সমস্যা হয়। এমন হলে তাদের ইলিশ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

লেখক: চৌধুরী তাসনিম হাসিন, ইউনাইটেড হাসপাতালের চিফ ক্লিনিক্যাল ডাইটেশিয়ান ও এইচওডি এবং বাংলাদেশ নিউট্রিশন অ্যান্ড ডায়েটেটিকস ফোরামের (বিএনডিএফ) সহ সাধারণ সম্পাদক (এজিএস)

অনুবাদ করেছেন আরউইন আহমেদ মিতু

Comments