ডিটক্স পানি পানের আগে যা জানা দরকার

ছবি: সংগৃহীত

শরীরের বাড়তি ওজন কমাতে এবং শরীর থেকে বাড়তি টক্সিন বা দূষিত উপাদান বের করে দেওয়ার জন্য ডিটক্স পানি পান করার একটা প্রবণতা বর্তমানে অনেকের মধ্যেই তৈরি হয়েছে। সাধারণত শরীরের ভেতর জমে থাকা দূষিত উপাদান বের করে দেওয়ার জন্য অনেকেই ডিটক্স পানি নিয়মিত পান করেন।

দেহের টক্সিন দূর করতে ডিটক্স পানির তুলনা নেই। অনেকেই সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে ডিটক্স পানি পান করেন।

ডিটক্স পানি নিয়ে দ্য ডেইলি স্টার কথা বলেছে নিউট্রিশন অ্যান্ড পাবলিক হেলথ স্পেশালিষ্ট নওরিন মাহফুজের সঙ্গে।

নওরিন মাহফুজের মতে, ডিটক্স পানি হিসেবে অনেকেই আদা পানি, জিরা পানি, আপেল সিডার ভিনেগার, হলুদ-আদাসহ গরম পানি, আদা-গোলমরিচসহ গরম পানি, দারুচিনিসহ গরম পানি পান করেন। তবে তাদের জন্য এসব ডিটক্স পানি এসিডিটি, পেটে জ্বালাপোড়া, শরীরের তাপমাত্রা বাড়ানোসহ খাবারের রুচি নষ্ট (ক্ষুধা মন্দা) করতে পারে।

তিনি জানান, অনেকেই আবার ডিটক্স পানি তৈরি করতে বেশ খরচ করে ফেলেন। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো নরমাল পানি সবচেয়ে ভালো টক্সিন দূর করে। পানি সব সময় ডিটক্সিফাইড করে দেহকে, তবে খালি পেটে পানি খুব সহজে টক্সিন দূর করে। কারণ তখন টক্সিন ও পানির মধ্যে কোনো খাবার ডিটক্সফাইড করতে বাঁধা দেয়না। তাছাড়া, খালি পেটে পানি পানে কোষে শ্বেত রক্ত কনিকা অর্থাৎ সাদা রক্ত প্রবাহে সাহায্য করে। যা দেহকে রোগ সংক্রমণের বিরুদ্ধে কাজ করতে সাহায্য করে। খালি পেটে পানি মাইগ্রেন প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হিসেবে কাজ করে দেহ হাইড্রেট রাখার মাধ্যমে।

পানির কোনো বিকল্প নেই। তাই ২-৩ গ্লাস পানি সকালে খালি পেটে পান করে দেহের বাওল সিস্টেমের উন্নতি করা যায়। অবশ্যই পানি ঘুম থেকে উঠে ওয়াশরুম যাওয়ার পূর্বে এবং বসে পান করতে হবে।

কেউ কেউ শুধু পানি পান করতে পছন্দ করেন না কিংবা পানির ফ্লেভার নিতে পারেন না। তাই তাদের সারা দিনে শারীরিক চাহিদা অনুযায়ী পরিমিত পানি খাওয়া হয় না। ফলে তাদের বডি ডিটক্সিফাইড তো হচ্ছেই না বরং তারা ডিহাইড্রেশনের সমস্যায় ভুগছেন।

 যারা একদমই নরমাল পানি খেতে চান না তাদের জন্য—

১. ফলের তৈরি ডিটক্স পানি (আপেল, কমলা, তরমুজ, আঙ্গুর অন্যান্য)

২. লেবুর ডিটক্স পানি,

৩. লেবু+মধু ডিটক্স পানি (যাদের এসিডিটির সমস্যা আছে),

৪. কালোজিরা ডিটক্স পানি,

৫. মেথি ডিটক্স পানি,

৬. পুদিনা পাতা, ধনে পাতার ডিটক্স পানি

৭. কিসমিস ডিটক্স পানি (যাদের কোলেস্ট্ররল মাত্রা বেশি) পান করা সবচেয়ে উত্তম উপায়।

 ৮. পানিতে শসা ব্যবহারসহ অন্যান্য মৌসুমি ফল ব্যবহার করে পানি পান করবেন। এতে পানি পান করা সহজ হবে এবং পানি পানে কোনো অনিহা থাকবে না। তবে পানিতে ফল ভিজিয়ে রেখে তা পান করতে চাইলে ৩-৪ ঘণ্টার মধ্যে পান করতে হবে।

প্রতিদিন এসব ডিটক্স পানি ঘুম থেক উঠে খালি পেটে কিংবা রাতের খাবারের ১ ঘণ্টা পর এবং দিনে ১-২ বার পান করা যায়। এর ফলে শরীরের ইমিউনিটি বাড়বে, রক্তে কোলেস্ট্ররলের মাত্রা কমবে এবং ফলের ডিটক্স পানির মাধ্যমে ভিটামিন-সি গ্রহণ করা হবে।

পরিমিত পরিমাণ নরমাল পানি আপনার ডিহাইড্রেশন কমানোর পাশাপাশি আপনার অরগানগুলোর কার্যক্ষমতা সচল রেখে ইউরিন ইনফেকশনের ঝুঁকি কমাবে এবং আপনার ইন্সট্যান্ট ফ্যাটের বিপরীতে কাজ করবে।

তবে সারারাত পানিতে ফল ভিজিয়ে পান করবেন না এতে পানিতে ব্যাকটেরিয়া জন্ম নেওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

Comments

The Daily Star  | English

Iran threatens response if US crosses 'red line': ambassador

Israel army says struck Iran centrifuge production, weapons manufacturing sites

19h ago