ফ্যাশন ও সৌন্দর্য

অকালে চুল পাকা রোধে করণীয়

কোনো রোগের কারণে চুল পাকতে শুরু করলে সেই রোগের চিকিৎসার মাধ্যমে চুল পাকা প্রতিরোধ করা যেতে পারে।
প্রতীকী ছবি | সংগৃহীত

অল্প বয়সে চুল পেকে গেলে মনোকষ্টে ভোগেন অনেকে। চুল পেকে যাওয়া মানুষের জীবনচক্রের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। জাতি-গোষ্ঠীর ভিন্নতায় বিভিন্ন বয়সে চুল পাকা শুরু হয়। যেমন: ককেশীয়দের ক্ষেত্রে ২০ থেকে ২৫ বছর বয়সেই চুল পাকতে শুরু করে। আবার ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের সাধারণত ৩০ বছর বয়সের পর এটি শুরু হয়। এই বয়সের আগে চুল পাকলে তাকে অকালপক্ব চুল (প্রিমেচিউর গ্রে হেয়ার) বলা হয়।

ত্বকের মেলানোসাইট নামক কোষ থেকে মেলানিন নামে রঞ্জকের ঘনত্বের ওপর ত্বকের রঙ নির্ধারিত হয়ে থাকে। মেলানিনের ঘনত্ব বেশি হলে কালো এবং কম হলে সেই অনুযায়ী গায়ের রঙ অপেক্ষাকৃত ফর্সা হয়ে থাকে। চুল যেখান থেকে গজিয়ে থাকে, ত্বকের সেই গোড়ার জায়গার মেলানিন উৎপাদন ক্ষমতার ওপর চুলের রঙ নির্ধারিত হয়ে থাকে। কোনো কারণে মেলানিন উৎপাদন ক্ষমতা কমে বা নষ্ট হয়ে গেলে চুল পাকতে শুরু করে। সাধারণত যেসব কারণে চুল পাকে, সেগুলো হলো—

১। বংশগত

চুল পাকার সঙ্গে জেনেটিক বা বংশগত সম্পর্ক রয়েছে। সেজন্যই কারো কারো ক্ষেত্রে চুল অন্যদের তুলনায় আগে পাকা শুরু করে।

২। রোগজনিত

থাইরয়েডের সমস্যা, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাজনিত রোগ, শ্বেতি, আ্যলার্জি, পরিপাকতন্ত্রের রোগ, রক্ত শূন্যতা, প্রোজেরিয়া ও প্যানজেরিয়া ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত হলে কম বয়সে চুল পাকতে শুরু করে।

৩। খাবার উপাদানের ঘাটতিজনিত

শরীরে ভিটামিন বি-১২, বি-৬, বায়োটিন, ভিটামিন ডি-৩, ভিটামিন ই, আয়রন ও কপারের ঘাটতির কারণে অকালে চুল পাকতে পারে।

৪। ওষুধ

কিছু ওষুধ যেমন: ক্যানসার চিকিৎসায় কেমোথেরাপিতে ব্যবহার করা ওষুধ, ম্যালেরিয়ার ওষুধ ইত্যাদির কারণে সাময়িকভাবে চুল পেকে যায়।

৫। দুশ্চিন্তা

অতিরিক্ত চিন্তা চুলের বৃদ্ধি ও গঠন প্রক্রিয়ার ওপর প্রভাব ফেলে বলে গবেষণায় বলা হয়েছে। এ ছাড়া, অতিরিক্ত মদ্যপান ও ধূমপানও অকালে চুল পাকার কারণ হতে পারে।

সমাধান

কোনো রোগের কারণে চুল পাকতে শুরু করলে সেই রোগের চিকিৎসার মাধ্যমে চুল পাকা প্রতিরোধ করা যেতে পারে। খাবার উপাদানের ঘাটতি পূরণের জন্য সুষম খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। ফল ও শাক-সবজি খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। পর্যাপ্ত ঘুম এবং মদ্যপান ও ধূমপান নিয়ন্ত্রণ বা পরিত্যাগ করতে হবে। তবে, বংশজনিত কারণে চুল পাকার প্রক্রিয়া প্রতিরোধ করা যায় না।

চিকিৎসা

চুল পড়ে যাওয়ার কারণ নির্ণয় করে চিকিৎসা দেওয়া হয়। সরাসরি চুলের গোড়ায় স্টেম সেল, গ্রোথ ফ্যাক্টর বা পিআরপি চিকিৎসা চুল পাকা রোধ করার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখে অনেক সময়‌।

ডা. এম আর করিম রেজা, ত্বক ও সৌন্দর্য বিশেষজ্ঞ

Comments