রাজশাহীর কালাইরুটি-ভর্তার স্বাদ নিয়েছেন কি

রাজশাহীর কালাইরুটি
ছবি: সাজেদুর আবেদীন শান্ত

কালাইরুটির আদি নিবাস চাঁপাইনবাবগঞ্জ হলেও এখন এটি ছড়িয়ে পড়েছে পুরো রাজশাহী বিভাগজুড়েই। রাজশাহী শহরেও তুমুল জনপ্রিয়তা এই রুটির। শীতের রাজশাহী মানেই যেন কালাইরুটি, রকমারি ভর্তা আর হাঁসের মাংসের সুঘ্রাণ।

শুধু রাজশাহীর উপশহরেই পাশাপাশি তিনটি কালাইরুটির বড় রেস্টুরেন্ট রয়েছে। উপশহর নিউমার্কেট, রূপালী ব্যাংকের সামনে এগুলোর অবস্থান। এগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে কালাই বাড়ি রেস্টুরেন্ট। এক সন্ধ্যায় সেখানে গিয়ে যায়, ভোজনরসিক মানুষের উপচে পড়া ভিড়। কোনো জায়গা ফাঁকা নেই। চাপ সামলাতে দোকানের সামনেও টেবিল-চেয়ার পেতে দেওয়া হয়েছে বসার জায়গা।

এ রেস্টুরেন্ট এবং পাশেরগুলোতেও গরম গরম কালাইরুটির সঙ্গে পাওয়া যায় নানা পদের ভর্তা ও মাংস। কালাইরুটির দাম পড়ে ৩০ টাকা পিস। তবে স্পেশাল কালাইরুটি নিলে দাম ৫০ টাকা। স্পেশাল রুটির সঙ্গে যোগ হয় আরও কিছু উপাদান। তাই দাম বেশি। তবে রুটির সঙ্গে মরিচ ও বেগুন ভর্তা ফ্রি। সঙ্গে আরও পাওয়া যায় আলু ভর্তা, শুঁটকি ভর্তা, ধনিয়া ভর্তা। হাঁসের মাংসের সঙ্গেও দারুণ মানায় কালাইরুটি। দাম ১২০ টাকা বাটি। এ ছাড়াও গরুর মাংস ১৪০ টাকা ও গরুর বট বা ভুঁড়ি ১০০ টাকা বাটি।

রাজশাহীর কালাইরুটি
ছবি: সাজেদুর আবেদীন শান্ত

কালাই বাড়ির স্বত্বাধিকারী আব্দুস সাত্তার বলেন, 'প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে এই কালাইরুটির দোকান দিয়েছি। যদিও ফুটপাতেই এ রুটি অনেকেই খায়। তবে রেস্টুরেন্টেও বিক্রি খারাপ না। দিনে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকার কালাইরুটি বিক্রি হয়।'

কী উপকরণে কীভাবে তৈরি হয় এ রুটি জানার আগ্রহ জন্মেছে নিশ্চয়ই? এর উত্তর দিয়েছেন রুটি তৈরির কারিগর লোকমান হোসেন।

তিনি বলেন, 'কালাইরুটি বানাতে প্রয়োজন মাষকলাইয়ের গুঁড়া ও আতপ চালের আটা। এরপর স্বাদমতো লবণ ও পরিমাণমতো পানি মিশিয়ে খামির তৈরি করতে হয়। তারপর খামি থেকে ছোট ছোট খণ্ডে ভাগ করা হয়। এরপর আটা নিয়ে গোলাকার করা হয়।

তারপর দুই হাতের তালুতে রেখে বিশেষ কায়দায় ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বড় রুটি বানানো হয়। এরপর রুটিটিকে মাটির তাওয়াতে সেঁকে গরম করা হয়। রুটির রং বাদামী হলে নামিয়ে পরিবেশন করা হয়।  

অনেকের মতো স্থানীয় সেলিনা আক্তারও দোকানে এসেছিলেন কালাইরুটির স্বাদ নিতে।

রাজশাহীর কালাইরুটি
ছবি: সাজেদুর আবেদীন শান্ত

তিনি বলেন, 'কালাইরুটি সাধারণত গমের রুটির চেয়ে অনেক পুরু ও বড় হয়। একটা খেলেই পেট ভরে যায়। মেশিনে তৈরি আটা দিয়েও কালাই রুটি বানানো গেলেও শিল পাটা বা যাঁতায় পিষ্ট আটা দিয়ে কালাই রুটি বানালে স্বাদ বেশি হয়।'

রেস্টুরেন্ট ছাড়াও রাজশাহীতে শীতের সময় রাস্তার ধারে অস্থায়ীভাবে অনেক কালাইরুটির দোকান বসে। কারণ এই মৌসুমেই কালাইরুটি বেশি খায় মানুষ। সন্ধ্যার নাস্তা কিংবা রাতের খাবার হিসেবেও চলে এটি।

যদিও রেস্টুরেন্ট মালিকরা জানান, শীতের সময় বেশি বিক্রি হলেও রেস্টুরেন্টগুলোতে সারা বছর কালাইরুটির চাহিদা থাকে।

 

Comments

The Daily Star  | English

ShopUp, Sary to merge, raise $110m

The merged outfit will be called the Silq Group and the strategic merger is backed by a $110 million (about Tk 1,300 crore) funding round

45m ago