অনলাইন কেনাকাটার আসক্তি কমানোর উপায়

মাঝেমাঝে অনলাইন কেনাকাটা করা যেতেই পারে। তবে যদি প্রতিবার কিছু কেনার পরই তা নিয়ে অনুশোচনা হয়, তাহলে হয়তো এই শখের ব্যাপারটা পুনর্বিবেচনা করা করা দরকার।
ছবি: সংগৃহীত

অনলাইন কেনাকাটার চল কোভিড-১৯ মহামারির আগে থেকে থাকলেও এখন তা মানুষের কাছে আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা পেয়েছে। সাধারণ কেনাকাটার তুলনায় অনলাইন কেনাকাটায় আসক্তি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা বেশি। কারণ এক্ষেত্রে পণ্য সার্চ করে কয়েক ক্লিকে অল্প সময়ের মধ্যেই কিনে ফেলা যায় যেকোনো কিছু।

মাঝেমাঝে অনলাইন কেনাকাটা করা যেতেই পারে। তবে যদি প্রতিবার কিছু কেনার পরই তা নিয়ে অনুশোচনা হয়, তাহলে হয়তো এই শখের ব্যাপারটা পুনর্বিবেচনা করা দরকার।

অনলাইনে অতিরিক্ত কেনাকাটার আসক্তি কাটাতে যা করা যেতে পারে—

কারণ খুঁজে বের করা

এ ধরনের আসক্তির পেছনে সাধারণত কোনো কারণ থাকে। সেই কারণটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন। কেউ একঘেয়েমি কাটাতে কেনাকাটা করতে পারেন, কেউ কেনাকাটা করে সাময়িক সময়ের জন্য খুব উত্তেজনা বোধ করতে পারেন, কেউ শুধুই আনন্দের জন্য কেনাকাটা করে থাকেন। কারণ যাই হোক, তা খুঁজে বের করতে পারলে সেই ব্যাপারে সচেতন থাকা সম্ভব হবে।

অভিভাবক বা বন্ধুদের সহায়তা নেওয়া

টেবিলে রাখার জন্য যে আসলে অনলাইনে দেখা 'ওই ল্যাম্পটি' কেনার প্রয়োজন নেই, তা আপনাকে বোঝাতে পারবে হয়তো আপনার মা কিংবা কোনো বন্ধু। কেনাকাটার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে এমন কারও সহায়তা নিন।

খরচযোগ্য টাকা কম রাখুন

জরুরি প্রয়োজনের টাকা বাদে বাকি টাকা এমনভাবে রাখুন যেন সহজেই খরচ করে ফেলা না যায়। যেমন ব্যাংকের সেভিংস অ্যাকাউন্টে টাকা রাখতে পারেন। এভাবে কেনাকাটার তাড়না থেকে বের হওয়া যেতে পারে।

পার্সোনালাইজড বিজ্ঞাপন থেকে দূরে থাকুন

অ্যান্ড্রয়েড ও আইওএস উভয় ডিভাইসেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের টার্গেটেড বিজ্ঞাপন বন্ধ রাখার সুযোগ রয়েছে সেটিংসে। ল্যাপটপ ব্যবহারের ক্ষেত্রে কুকিজ মুছে ফেলে পার্সোনালাইজড বিজ্ঞাপন রোধ করা যাবে। প্রয়োজনে ফেসবুকের শপিং গ্রুপ থেকেও লিভ নিতে পারেন।

নিজের বাজেট তৈরি করুন

নিজের খরচের জন্য বাস্তবসম্মত একটি বাজেট তৈরি করুন। টাকা-পয়সা ঠিকমতো ব্যবস্থাপনার পূর্বশর্ত হলো ভালো বাজেট তৈরি করা। প্রতি মাসে শখের কেনাকাটার জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা রাখুন। তা শেষ হয়ে গেলে কেনাকাটা বন্ধ করুন নতুন মাস শুরুর আগ পর্যন্ত।

খরচের হিসাব রাখুন

সবরকম কেনাকাটার হিসাব রাখুন দামসহ। ডায়েরিতে লিখে রাখতে অসুবিধা হলে অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন। অ্যাপে সহজেই খরচের হিসাব রাখতে পারবেন। এ ধরনের হিসাব রাখার মাধ্যমে সবসময়ই নিজের খরচ নিয়ে একটা ধারণা রাখতে পারবেন।

হুজুগে কেনাকাটা করবেন না

 'সেল! আগামী ৩ দিনের মধ্যে কিনলে ৪০ শতাংশ ছাড়!'  '২ দিনের মধ্যে অর্ডার করলেই ফ্রি ডেলিভারি!'

এ ধরনের বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় কেনাকাটায় মানুষকে আরও আকৃষ্ট করতে। জিনিসটি আসলেই আপনার প্রয়োজন কি না তা চিন্তা-ভাবনা করার জন্য অন্তত ২ দিন সময় নিন। এই সময়ের মধ্যেই হয়তো বুঝে যাবেন, আপনি একটি হয়তো অপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে যাচ্ছিলেন শুধু ফ্রি ডেলিভারি পাওয়ার জন্য!

চ্যালেঞ্জ নিন

হঠাৎ করে কেনাকাটা একদম বন্ধ করে দিতে চাইলে তেমন কোনো লাভ নাও হতে পারে। তারচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি অভ্যাস তৈরি করা ভালো। যেমন ১৫ দিনের জন্য অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটা থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করুন। এরপর ধীরে ধীরে সময়টা ১৫ দিন থেকে বাড়তে থাকুন।

এই অভ্যাসগুলো তৈরি করা শুরুতে কঠিন হতে পারে। তবে এসব অভ্যাস আপনাকে একসময় টাকা-পয়সা খরচের ব্যাপারে দায়িত্বশীল করে তুলবে।

অনুবাদ করেছেন আনজিলা জেরিন আনজুম

 

Comments