নতুন কাজ না পেয়েও চাকরি ছাড়তে পারেন যে ৫ ক্ষেত্রে

চাকরি ছাড়া
ছবি: সংগৃহীত

অনেক সময় দেখা যায় নতুন চাকরির নিশ্চয়তা নেই, তারপরেও কেউ চাকরি ছেড়ে দিতে চাচ্ছেন। নতুন কোনো চাকরির ব্যবস্থা না করেই চাকরি ছেড়ে দেওয়াটা কতটুকু যুক্তিসংগত এই বিষয়টি নিয়ে আমরা অনেকেই দ্বিধায় থাকি। কেউ এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিলে তাকে নির্বুদ্ধিতার তকমা পেতে হয়। কিন্তু আসলেই কি বিষয়টি তাই?

সত্যি বলতে, সবসময় বিষয়টা এমনটা নয়। কোনো ক্ষেত্রে নতুন চাকরির ব্যবস্থা না করেই চাকরি ছাড়তে পারেন বা ছেড়ে দেওয়া উচিত। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নতুন চাকরিতে না ঢুকেই চাকরি ছাড়তে হলে আগে আপনার যথেষ্ট সঞ্চয় থাকতে হবে অথবা অন্য কোন আয়ের ব্যবস্থা থাকতে হবে।

অফিসের টক্সিক পরিবেশ

অফিসের পরিবেশ যদি আপনার মানসিক চাপ ও অবসাদের কারণ হয়, তাহলে বুঝতে হবে আপনি একটি টক্সিক পরিবেশে আছেন। দীর্ঘদিন এমন পরিবেশে কাজ করলে শারীরিক নানা অসুস্থতাও তৈরি হতে পারে।

এ ধরনের পরিবেশে দীর্ঘদিন কাজ করা আপনার মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যে নেতিবাচক  প্রভাব ফেলবে। তাই কোনো কিছু না ভেবে দ্রুত এখান থেকে বের হয়ে আসা উচিত। এ ছাড়া আপনি যদি কর্মক্ষেত্রে বুলিংয়ের শিকার হন এবং কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে কোনো প্রতিকার না পান তাহলে সেখান থেকে দ্রুত বেরিয়ে আসুন।

বিরতি নেওয়া

মনে করুন, আপনি ভীষণ ভ্রমণপ্রিয় একজন মানুষ। পৃথিবী ঘুরে দেখার শখ আপনার কিন্তু অফিসের চাপে দেশের মধ্যেই কোথাও ঘুরতে যাওয়ার সুযোগ হয়ে ওঠে না। নিজের এই শখ পূরণে অফিস থেকে কিন্তু কিছুটা বিরতি নিতে পারেন। আর্থিক দিক থেকে চিন্তা করলে অনেকের এই সুযোগ থাকে না। তবে যদি সম্ভব হয় তাহলে নিজের ইচ্ছা পূরণ করা উচিত। আবার অনেকেই নতুন বাবা-মা হওয়ার পর বাচ্চার শৈশবে বেশি সময় দিতে চান। সেক্ষেত্রে চাকরি ছেড়ে একটি বিরতি নিতে পারেন অথবা 'ওয়ার্ক ফ্রম হোম' এর সুযোগ খুঁজতে পারেন।

ক্যারিয়ার গ্যাপ সামলাতে সক্ষম

ক্যারিয়ারে দীর্ঘ বিরতি সাধারণত নেতিবাচকভাবে নেওয়া হয়। তবে আপনি যদি এটি সামলাতে প্রস্তুত থাকেন তবে বিরতি নিতে পারেন। যদি আপনার পরবর্তী ধাপ নিয়ে স্পষ্ট ধারণা থাকে অর্থাৎ আপনি জানেন কীভাবে পছন্দের চাকরি খুঁজে পেতে হবে, কিছুদিন কনসালটেন্সির কাজ করতে চান বা কোনো ব্যক্তিগত প্রজেক্টে সময় দিতে চান তাহলে আপনার হয়তো চাকরির বিরতির ব্যাপারটা ব্যাখ্যা করতেও খুব একটা বেগ পেতে হবে না। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার আর্থিক সঞ্চয় বা চাকরির বাইরেও আয়ের উৎস থাকতে হবে।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আত্মবিশ্বাসী

যদি আপনি নিশ্চিত হন যে সামনে যেটা করতে যাচ্ছেন সেটা আপনার জন্য বেশি সন্তোষজনক বা উপযুক্ত, তাহলে বর্তমান চাকরি ছেড়ে দিয়ে সেই নতুন পথেই সময়, শক্তি ও মনোযোগ দেওয়া হতে পারে আপনার সময়ের সবচেয়ে ভালো ব্যবহার। হয়তো আপনি এমন কোনো কাজ বা ব্যবসা শুরু করতে চান যা আপনার বর্তমান চাকরির সঙ্গে মিলিয়ে করা সম্ভব নয়। ভবিষ্যতে আপনি কোন পথে কীভাবে আগাবেন তার একটি স্পষ্ট ধারণা এবং সেটিতে ব্যর্থ হলে কী করবেন সবকিছু চিন্তা করে চাকরি ছাড়া উচিত।

মানসিকভাবে প্রস্তুত

এমন হতে পারে একসময় আপনি আপনার চাকরি খুব পছন্দ করতেন। কিন্তু ধীরে ধীরে আপনার মধ্যে পরিবর্তন এসেছে, আপনার চাওয়া-পাওয়া, চিন্তাভাবনা ও জীবনের লক্ষ্য ভিন্ন হয়ে উঠেছে। আপনি এখন নতুন কিছুর জন্য প্রস্তুত। আপনি যদি আপনার দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা নিয়ে আত্মবিশ্বাসী হন তাহলে আপনি নিশ্চয়ই ভালো জায়গায় যাবেন। তবে যদি আপনার মনে হয় বর্তমান চাকরিতে আপনি জীবনের মূল্যবান সময় হারাচ্ছেন তাহলে সেটিকে বিদায় জানান। আপনার কাছে সত্যিকারের অর্থবহ এমন কিছুতে নিজের মূল্যবান সময় কাজে লাগান। এরকম মানসিক দৃঢ়তা নিয়ে আগালে সহজেই হতাশ হয়ে পড়বেন না। কারণ যাই হোক, দীর্ঘদিনের একটি চাকরি ছাড়ার জন্য আপনার যথেষ্ট মানসিক শক্তি প্রয়োজন।

তথ্যসূত্র: ফোর্বস

 

Comments

The Daily Star  | English
us tariff rates by country

Higher US tariffs take effect on dozens of economies

US duties rose from 10 percent to levels between 15 percent and 41 percent for a list of trading partners

1h ago