বদরুদ্দীন উমরের ৯২তম জন্মদিন
ইতিহাসবিদ, লেখক, শিক্ষাবিদ ও বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমরের ৯২তম জন্মদিন। ১৯৩১ সালে ২০ ডিসেম্বর ভারতের বর্ধমানে জন্মগ্রহণ করেন।
তিন খণ্ডে উমর রচিত পূর্ব বাঙলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি (১৯৭০, ১৯৭৬ ও ১৯৮১) বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস রচনায় পথিকৃৎ হিসেবে বিবেচিত তিনি।
গাছের ডালপালার মতোই সবুজ আর বিস্তৃত তার পরিবার। তার বাবা আবুল হাশিম ভারতীয় উপমহাদেশের একজন মুসলিম জাতীয়তাবাদী রাজনীতিবিদ। একজন সাম্যবাদী হিসেবে— পাকিস্তান সৃষ্টির বিরোধী ছিলেন, তবুও পূর্ব পাকিস্তানে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন ১৯৫০ সাল থেকে। তার আগে বর্ধমান থেকে উচ্চমাধ্যমিক পড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে স্নাতকোত্তর করেন উমর। উচ্চতর ডিগ্রি নেন যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড থেকে।
বাবা আবুল হাশিম ছিলেন বঙ্গীয় মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক। পণ্ডিত পিতার সাহচর্য পেয়েছেন বদরুদ্দীন উমর। সেই সঙ্গে বংশের সবাই কমবেশি বিভিন্ন দলের রাজনীতি করতেন। বিশেষত, কমিউনিস্ট পার্টিতে ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ও ছিল অনেক। এইভাবে জ্ঞানে গুণে সুবিস্তৃত ছিলো তার পরিবার। মেধা মনন, প্রজ্ঞার সঙ্গে তৈরি হয় উন্নত রুচিবোধ।
ফলে বহুমুখী প্রশংসার দেশে বুদ্ধিজীবীদের একটা বড় অংশ যখন গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়েছেন, তখন বদরুদ্দীন উমর স্রোতের বিপরীতেই থেকেছেন। কাটিয়েছেন বাংলা ও বাঙালি সমাজ চিন্তা নিয়ে। এমন নিজস্ব জায়গায় থাকতে ভূমিকা রেখেছে তার সংগ্রামী জীবনের মূল্যবোধ। শুধু তাই নয়, সমৃদ্ধ পরিবার ও দীর্ঘ পঠন-পাঠন থেকে ধীরে ধীরে তাত্ত্বিক, রাজনৈতিক, সক্রিয়তাবাদী, ইতিহাসবিদ, বুদ্ধিজীবী এবং বাংলাদেশের একজন শক্তিশালী কমিউনিস্ট পার্টির নেতা হয়ে ওঠেন।
তিনি শিক্ষকতা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেই সময়ে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা পাওয়ার আগে অর্থাৎ, ষাটের দশকে বদরুদ্দীন উমর সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে যে সাহসী ও যৌক্তিক লেখা লিখেছেন সেগুলো এখনো প্রাসঙ্গিক।
বদরুদ্দীন উমরকে বলা হয় বাংলাদেশের বাম রাজনীতির অন্যতম দীক্ষাগুরু। উল্লেখিত চিত্র পাওয়া যায় তার বাঙলাদেশে বুর্জোয়া রাজনীতির দুইরূপ; বাঙলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিসহ আরও অনেক গ্রন্থে।
Comments