আনন্দের বইমেলায় বিদায়ের সুর, পর্দা নামছে আজ

ছবি: স্টার

লেখক প্রকাশক পাঠকদের অনেক আশার বইমেলায় বেজে উঠছে বিদায়ের সুর। আজই পর্দা নামছে এ বছরের অমর একুশে বইমেলার। তবে অন্য যে কোনো মেলার তুলনায় এবার শুরু থেকেই জমজমাট উপস্থিতি ছিল পাঠক-দর্শনার্থীদের।

শুক্রবার মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, পাঠকরা ক্যাটালগ দেখে সংগ্রহ করে নিচ্ছেন পছন্দের বই। বিক্রি হচ্ছে অনেক নতুন লেখকের বইও। বেচাকেনা বেড়ে যাওয়ায় সব অভিযোগ ভুলে প্রকাশকদের মুখেও ফুটেছে হাসির ঝলক।

স্টলকর্মীরা জানান, মেলার শেষ দিকে প্রতিদিন বিক্রি ভালো হয়। এখনো প্রতিদিন শতাধিক বই আসছে মেলায়। এটি শেষ দিন পর্যন্ত চলতে থাকে। ডেইলি স্টার বুকসের জাহিদুল ইসলাম জানান, মেলার শুরুতে দর্শনার্থীর সংখ্যা ছিল বেশি। তবে বিক্রি তেমন হয়নি। এখন যারাই মেলায় আসছেন, তারা সাধারণত বই কিনতেই আসছেন।

শেষ দিকে এসে কেউ মেলা থেকে খালি হাতে ফিরছেন না বলে জানান তিনি।

এদিকে চাপা ক্ষোভ দেখা গেছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্টলের ধূলাবালি ও লিটলম্যাগের বিন্যাস নিয়ে। এই প্রসঙ্গে লেখক ও গবেষক কাজল রশীদ শাহীন বলেন, 'মেলাকে ঘিরে আয়োজক কর্তৃপক্ষের বাণিজ্য কিন্তু কম হয় না। কিন্তু মান ও সেবা উন্নতকরণে তাদের কোনো আন্তরিক প্রচেষ্টা দৃশ্যমান নয়। মেলা হবে সকল মানুষের মিলিত হওয়ার আরামদায়ক একটা জায়গা। অথচ মেলার চরিত্রের ভেতরে আমরা মানুষের ভোগান্তি-অস্বস্তি ও কষ্টকে অনিবার্য করে তুলেছি।'

তবে মেলার শুরু থেকেই, অতিরিক্ত বইয়ের দাম ও মানহীন বা সম্পাদনা ছাড়া বই নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করতে দেখা গেছে অনেক লেখকদের। তারা নিজ নিজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

লেখক ও সাহস প্রকাশনীর প্রকাশক নাজমুল হুদা রতন জানান, কিছু কিছু প্রকাশক কারণ ছাড়াই দাম বেশি রাখে। যে বই প্রকাশের পেছনে অনেক খরচ তা পাঠক কিছুটা ধারণা করতে পারেন। যারা কারণ ছাড়া অহেতুক বইয়ের দাম বাড়ান, তারা যে দীর্ঘস্থায়ীভাবে প্রকাশনায় ব্যবসায় থাকবে না তা তাদের কাজেই বুঝা যাচ্ছে।

ছবি যুবায়ের ইবনে কামাল

পলাশ প্রকাশনীর খোরশেদ জসীমউদ্দিন বলেন, এবারের বইমেলায় মিশ্র অভিজ্ঞতা। বিক্রি মোটামুটি ভালো কিন্তু নতুন চিন্তার ইউনিক কন্টেন্ট বলতে যা বুঝায় তা একেবারে কম। আগেও খুব ভালো ছিল তা না, এবারে আরও ভয়াবহ। ভাইরাল হওয়া ব্যক্তিদের বই পাঠকদের বিভ্রান্ত করেছে বেশ।

কথাপ্রকাশের জসীম উদ্দিন বলেন, আমরা বেশ কিছু ভালো বই প্রকাশ করেছি এবং বিক্রিও আশাব্যঞ্জক। কথাপ্রকাশ সব সময় পাঠকদের ভালোবাসা ও শুভকামনা পেয়ে আসছে। এবারের বইমেলাও ব্যতিক্রম নয়, এইভাবে আমাদের বইমেলা আনন্দের হয়।

কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বইমেলার নিয়মিত আসার চেষ্টা করি এবারে কম হয়েছে। আমার বহু পাঠকদের সঙ্গে দেখা হয়, ভালো লাগে।'

'কিন্তু মেলার বিদায়ের সময় খুব খারাপ লাগে। এটা অন্যরকম খারাপ লাগা, বলে বুঝানো যাবে না,' যোগ করেন তিনি।

বইমেলার সমাপনী

আজ বিকেল ৫টায় সমাপনী অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা ভাষণ প্রদান করবেন একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। প্রতিবেদন উপস্থাপন করবেন 'অমর একুশে বইমেলা ২০২৪' এর সদস্য-সচিব ডা. কে এম মুজাহিদুল ইসলাম।

প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ। সভাপতিত্ব করবেন বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। অনুষ্ঠানে চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার, মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার, রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার এবং শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার প্রদান করা হবে।

Comments

The Daily Star  | English

Opening aid corridors, leasing out ports not this govt’s job

Making decisions on a “humanitarian corridor” to Rakhine and leasing out container terminal of Chittagong Port to foreign companies are not the interim government’s job, said BNP acting chairman Tarique Rahman last night.

2h ago