ক্র্যাক প্লাটুনের গেরিলা লিনু বিল্লাহ ও আবুল বারক আলভীর সাক্ষাৎকার

‘টর্চার সেল থেকে ফিরতে পারলেও এখনও ট্রমার ভেতর বেঁচে আছি’

৩০ আগস্ট ভোর পৌনে ৬টা। রাজারবাগের ৩৭০ আউটার সার্কুলার রোডের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ধরে নিয়ে যায় সঙ্গীতশিল্পী আলতাফ মাহমুদ, লিনু বিল্লাহ, আবুল বারক আলভীসহ মোট ১২ জনকে। ক্র্যাক প্লাটুনের গেরিলাদের ধরতে এটিই ছিল হানাদার বাহিনীর সবশেষ অপারেশন। আগের দিন থেকে চলমান পাকিস্তানি বাহিনীর সেই চিরুনি অভিযানে একে একে ধরা পড়েছিলেন বদি, রুমি, আজাদ, জুয়েল, সৈয়দ হাফিজুর রহমান, আবু বকরসহ ৩০-৩৫ জন গেরিলা ও স্বজনরা। এরপর তাদের নাখালপাড়ার এমপি হোস্টেলের টর্চার সেলে নিয়ে চালানো হয়েছিল পৈশাচিক নির্যাতন। নির্মম সেই টর্চার সেল থেকে ভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে ফিরেছিলেন ক্র্যাক প্লাটুনের গেরিলা সঙ্গীতশিল্পী লিনু বিল্লাহ ও চিত্রশিল্পী আবুল বারক আলভী।  
লিনু বিল্লাহ ও আবুল বারক আলভী। ছবি: স্টার

৩০ আগস্ট ভোর পৌনে ৬টা। রাজারবাগের ৩৭০ আউটার সার্কুলার রোডের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ধরে নিয়ে যায় সঙ্গীতশিল্পী আলতাফ মাহমুদ, লিনু বিল্লাহ, আবুল বারক আলভীসহ মোট ১২ জনকে। ক্র্যাক প্লাটুনের গেরিলাদের ধরতে এটিই ছিল হানাদার বাহিনীর সবশেষ অপারেশন। আগের দিন থেকে চলমান পাকিস্তানি বাহিনীর সেই চিরুনি অভিযানে একে একে ধরা পড়েছিলেন বদি, রুমি, আজাদ, জুয়েল, সৈয়দ হাফিজুর রহমান, আবু বকরসহ ৩০-৩৫ জন গেরিলা ও স্বজনরা। এরপর তাদের নাখালপাড়ার এমপি হোস্টেলের টর্চার সেলে নিয়ে চালানো হয়েছিল পৈশাচিক নির্যাতন। নির্মম সেই টর্চার সেল থেকে ভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে ফিরেছিলেন ক্র্যাক প্লাটুনের গেরিলা সঙ্গীতশিল্পী লিনু বিল্লাহ ও চিত্রশিল্পী আবুল বারক আলভী।  

সম্প্রতি দ্য ডেইলি স্টারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই ২ মুক্তিযোদ্ধা জানান টর্চার সেলে তাদের ওপর চালানো লোমহর্ষক নির্যাতনের কথা।

দ্য ডেইলি স্টার: বাসা থেকে কি আপনাদের সরাসরি টর্চার সেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল নাকি থানায়?

লিনু বিল্লাহ: বাসা থেকে সরাসরি নিয়ে গেল মিলিটারি টর্চার সেলে। টর্চার সেলটা ছিল ৪ ফিট বাই ৭ ফিটের একটি কক্ষ। মোট ৩টা বিল্ডিংয়ে একটি করে টর্চার সেল। আমাদেরসহ মোট ১৮ জনকে রাখা হলো দ্বিতীয় বিল্ডিংয়ের টর্চার সেলে।

ডেইলি স্টার: টর্চার সেলের জিজ্ঞাসাবাদ এবং নির্যাতনের ধরন কেমন ছিল?

লিনু বিল্লাহ: এটা তো আসলে অবর্ণনীয়। একজন করে ডাকছে, প্রতিজনের জন্য সময় নির্ধারিত ১৫-২০ মিনিট। এর মধ্যে তারা যা যা জিজ্ঞেস করবে তার পুরোপুরি জবাব দিতে হবে। প্রথমেই সহযোদ্ধাদের নাম, আর্মসের সন্ধান জানতে চাইল। যতবার অস্বীকার করা হবে, নির্যাতনের মাত্রা ততটাই বাড়বে। আমাদের ৪ ভাইয়ের ওপর ভয়াবহ নির্যাতন চালাল। প্রথমে ৫ জন মিলে শরীরের পেছন দিকে গজারি লাঠি দিয়ে পেটাত। ওটার আঘাত যে কতটা তীব্র ছিল তা একটু বলি। ছাড়া পাওয়ার ২ বছর পর্যন্ত আমি উঠতে পারতাম না। এক প্রকার অবশ ছিলাম। শরীর নিস্তেজ হয়ে এলে নখের মধ্যে কাঁচি ঢুকিয়ে দিত। রশি ছিল, রশিতে ২ হাত উঁচু করে বেঁধে পেটাত। প্লাস দিয়ে নখ উপড়ে ফেলে হাতের ওপর অবিশ্রান্ত বেতের বাড়ি চলত। যখন পালা শেষ হয়ে যেত, তখন আবার একজন একজন করে টর্চার সেলে ঢোকানো হতো।

আবুল বারক আলভী: বাকের নির্যাতন সহ্য না করতে পেরে বলে ফেলেছিল। আমি আর বাকের তো একসঙ্গেই মেলাঘর থেকে এসেছিলাম। ও ভেবেছিল আমি ধরা পড়িনি। পরে যখন আমার সামনে ওকে নিয়ে এল, তখন আমাকে দেখে ওদের সামনে সম্মতিসূচক মাথা নেড়েছিল। ওর উপর আমার বিন্দুমাত্র রাগ বা ক্ষোভ নেই। কারণ নির্যাতনের মাত্রা এতটাই ভয়াবহ ছিল যে কেউ দাঁতে দাঁত চেপেও সহ্য করতে পারেনি। যেমন সামাদও একই। মার খেতে খেতে একটা পর্যায়ে আমার এমন হয়েছিল যে, ওরা পেটাচ্ছিল কিন্তু আর অনুভুতি কাজ করছিল না। ২ হাতসহ পুরো শরীরেই রক্ত জমাট বেঁধে গেছে। ২ হাত দিয়ে টপটপ করে রক্ত ঝরছে। 

ডেইলি স্টার: রাতে কি আপনাদের মিলিটারি টর্চার সেলে রাখা হতো নাকি অন্য কোথাও?

লিনু বিল্লাহ: রাতে আমাদের নিয়ে যাওয়া হতো রমনা থানায়। আমাদের স্টেটমেন্ট নিয়ে রাত ১০টার দিকে রমনা থানায় নিয়ে যেত। আবার পরদিন সকালে নিয়ে আসত।

ডেইলি স্টার: রাতে মিলিটারি টর্চার সেলে না রাখার কারণ কী ছিল?

আবুল বারক আলভী: এমপি হোস্টেলে না রাখার কারণ হচ্ছে, মুক্তিবাহিনী যে কোনো মুহূর্তে এখানে আক্রমণ করতে পারে। ওদের এই ভয়টা ছিল, যেহেতু এটা ক্যান্টনমেন্টের বাইরে। রমনা থানা নিয়ে একটু বলি। আমরা যাদের চোর-ছ্যাঁচড় বলি, তাদের মানবতা দেখেছিলাম রমনা থানায়। রাতে ওরা আমাদের সেবা করত। কোথা থেকে যেন বিভিন্ন ব্যথানাশক ট্যাবলেট, মলম এনে দিয়েছিল। পুরো শরীরে ওরা মলম মাখিয়ে দিয়েছিল। এই এক অনন্য মানবতা দেখলাম।

লিনু বিল্লাহ ও আবুল বারক আলভী। ছবি: স্টার

লিনু বিল্লাহ: ওরা আমাদের বলছিল, 'আপনারা কিন্তু কোনোভাবেই স্বীকার করবেন না। যদি স্বীকার করেন তবে আপনারা নিজেরাও বাঁচতে পারবেন না, অন্য গেরিলারাও ধরা পড়বেন।' আরেকটা টেকনিক ওরা শিখিয়ে দিয়েছিল, 'আপনাদের যখন প্রচণ্ড মারবে তখন অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার ভান করবেন। তাহলে মার কম খাবেন। আপনাদের জন্য আমরা সবসময় দোয়া করি।' 

ডেইলি স্টার: যারা নিখোঁজ হয়েছিলেন তাদেরকে আপনারা সবশেষ কবে দেখেছিলেন?     

লিনু বিল্লাহ: আলতাফ ভাই আর জুয়েলকে আমি ১ তারিখ পর্যন্ত দেখেছি। বদি আর হাফিজ ভাইকে ৩০ তারিখের পর আর দেখিনি। হাফিজ ভাই বোধহয় সেদিনই শহীদ হলেন। বাকের, আজাদ, রুমিসহ যারা নিখোঁজ হলো তাদের ৩১ তারিখের পর আর দেখিনি। একটা ঘটনা মনে পড়ছে। ৩০ তারিখের কথা। টর্চার সেলে বদিকে এতটাই টর্চার করেছিলো যে বদির পুরো শরীর রক্তে ভেজা। হঠাৎ বদি দৌড় দিলো যেন ওকে পেছন থেকে গুলি করে মেরে ফেলে। কিন্তু তা হয়নি। কিছুটা গিয়েই বদি পড়ে গেল।তখন বদিকে ধরে নিয়ে এসে আমাদের রুমে রাখল। তখন ওরা বদিকে বলছিল, 'তুমি ভাগতে চাও? তোমাকে তো গুলি করে মারব না, টর্চার করেই মারব।'

আবুল বারক আলভী: বাকেরকে আমি ধরা পড়ার পর প্রথমদিনই দেখলাম। বাকের আর হাফিজ ভাইকে প্রথমদিনের পর আর দেখিনি। রুমির অবস্থা তখনই খুব খারাপ হয়ে গেছে। যেদিন আমি ছাড়া পেলাম সেদিন কেবল জুয়েল আর আলতাফ ভাইকে দেখেছিলাম। বাকিদের কাউকে দেখিনি।

শহীদ বদিউল আলম। ছবি: সংগৃহীত

ডেইলি স্টার: আপনারা কীভাবে ছাড়া পেলেন?

লিনু বিল্লাহ: সেপ্টেম্বরের ১ তারিখে ছিল ফাইনাল জাজমেন্ট অর্থাৎ রায়ের দিন। সেদিন আমাদের বিরাট একটা এজলাসের মতো জায়গায় হাজির করা হলো। বিচারের জন্য একজন করে কর্নেল, মেজর ও এক ক্যাপ্টেন বসা। এদের মধ্যে বিচারক হলো কর্নেল। আমি সেদিনই ক্যাপ্টেনটাকে চিনে ফেলেছিলাম। আমি তখন পিটিভিতে পার্টটাইম তবলাবাদক হিসেবে চাকরি নিয়েছিলাম। চাকরির থেকেও বড় বিষয় ছিলো অনেকটা গুপ্তচর হিসেবে কাজ করেছিলাম। তখন ওই ক্যাপ্টেন নিয়মিত পিটিভিতে আসত। আমাকে যখন ডাকা হলো, তখন আমি গিয়েই সাহসের সঙ্গে শেষ চেষ্টা হিসেবে বললাম, আমি তো আপনাকে চিনি। তখন ক্যাপ্টেন বলল, 'কীভাবে?' আমি বললাম, আপনাকে আমি পিটিভিতে দেখেছি। আমি সেখানে তবলা বাজাই।

ওই ক্যাপ্টেন স্বীকার করল সেখানে তার যাতায়াত আছে। তখন ক্যাপ্টেন কর্নেলের দিকে তাকালে কর্নেল তবলা বাজিয়ে গান গাওয়ার নির্দেশ দিলো। আমি মেহেদী হাসানের একটা গান গাইলাম। গান শেষে কর্নেল আমাকে ডেকে নিয়ে কোরআন শরীফ ছুঁইয়ে প্রতিজ্ঞা করিয়ে ছেড়ে দিলো। আমাদেরকে ছেড়ে দিয়ে চলে যেতে বলল। আমার ভাইরাও ওভাবে ছাড়া পেয়ে গেল। কেবল আলতাফ ভাই ছাড়া। আমি সেই কর্নেলকে উর্দুতে বলেছিলাম আলতাফ ভাইকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য। কর্নেল বলল, 'বাদ মে ছোড় দেঙ্গে।' অর্থাৎ পরে ছেড়ে দেবে। কিন্তু আলতাফ ভাই শুরুতেই সবার দায় নিজের কাঁধে নিয়ে আত্মত্যাগ করলেন।

শহীদ আলতাফ মাহমুদ। ছবি: সংগৃহীত

আবুল বারক আলভী: প্রথম ২দিন নির্যাতনের পর্যায়ে তারা বারবার জিজ্ঞেস করছিল, 'তোমার নাম কী?' আমি বারবার বলছিলাম, আমার নাম আবুল বারক। কোনো কারণে রিপোর্টে আবুল বারক নামটি ছিল না। আমার এটাও খেয়াল আছে, যখন আমাকে অত্যাচার করার জন্য পাশের রুমে পাঠানো হচ্ছিল, তখনও আমি অস্বীকার করেছি। আমি সবসময় বলেছি, আমি ওদের চিনি না। আমি কখনো বর্ডারের কাছে যাইনি। সে সময় কিছু একটা আমার নামে লিখেছিল আর্মিরা। কিন্তু আমি বারবার অস্বীকার করার কারণে কাগজটি ছুঁড়ে ফেলে দিলো। তখন আমাকে জিজ্ঞেস করা হলো, 'তোমার পুরো নাম কী?' আমি বললাম, আমার নাম সৈয়দ আবুল বারক। আলভীটা আমি বললাম না। কারন আলভী নামেই তো সবাই আমাকে চিনত। তাই আমি এটা বাদ দিলাম।

নির্যাতনের এক পর্যায়ে আর দাঁড়াতে পারছিলাম না। বসে পড়েছিলাম। পুরো শরীরে রক্ত জমে গেছে। আমাকে জিজ্ঞেস করল, 'তুমি কোথায় কাজ কর?' আমি বললাম, 'ফিল্ম অ্যান্ড পাবলিকেশনে চাকরি করি।' ওরা ফোন দেবে দেবে করেও আর দেয়নি। আমি মার খাওয়ার সময়ই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, প্রয়োজনে মারা যাব তবু কিছু প্রকাশ করব না। ওরা যখন দেখল, আমি কিছুই বলছি না, কেবল হ্যাঁ না করছি তখন মারের মাত্রা দ্বিগুণ বাড়ল। এমনভাবে মারত যেন আমরা না মারা যাই, কিন্তু স্বীকার করতে বাধ্য হই।

আমি স্বীকার না করায় তারা টোপ ফেলতে লাগল। বলল, 'যদি বল তো তোমাকে ছেড়ে দেবো'। এক পর্যায়ে মার খেতে খেতে ভীষণ জেদ চেপে গিয়েছিল। চিন্তা করলাম, মরতে তো একদিন হবেই, আজ হোক বা কাল হোক। কিন্তু যতক্ষণ বেঁচে থাকব, ততক্ষণ অস্বীকার করেই যাব। মূলত আবুল বারক নামটাই আমাকে বাঁচিয়ে দিলো। আর আলতাফ ভাই সবকিছু নিজের কাঁধে নিয়ে নিয়েছিলেন। তিনি জিজ্ঞাসাবাদে বলেছিলেন, ওরা ইনোসেন্ট, ওদের কোনো দোষ নেই। সেটাও বেশ কাজে লাগল।

ডেইলি স্টার: টর্চার সেলের সব স্মৃতিই ভয়াবহ। তারপরও আলাদা করে কি এমন কোনো স্মৃতি মনে পড়ে, যাতে আজও শিউরে উঠেন?

লিনু বিল্লাহ: ৩০ আগস্ট সকাল সাড়ে ৮টা কি ৯টা বাজে। আমাদের তো সকাল সকালই নিয়ে গেছে। আমাদের জিজ্ঞাসাবাদ তখনও শুরু হয়নি। একটি গলা আমার পরিচিত লাগছিল। দরজাটা বন্ধ করা ছিল, যদিও একটু ফাঁকা ছিল। শুনলাম পাকা উর্দুতে একটি কণ্ঠ,  'মুঝে মাত মারো, মুঝে গুলি মারদো' শুধু একটি কথাই বলছিল বারবার। ইকবাল মামা তখন আমাকে বলল, 'দেখ তো, গলাটা পরিচিত লাগছে।' আমি দরজার ফাঁক দিয়ে দেখলাম হাফিজ ভাই। ক্র্যাক প্লাটুনের সাহসী গেরিলা সৈয়দ হাফিজুর রহমান। উনি আলতাফ ভাইয়ের সহকারী ছিলেন। দারুণ গিটার বাজাতেন। উনি আলতাফ ভাইয়ের সব গানের অ্যারেঞ্জমেন্ট করে দিতেন। উনার চোখ ২টো বের হয়ে গেছে। আমি দেখেই চমকে উঠে কালেমা পড়লাম। তখন ইনু বলল, 'কী হয়েছে?' আমি বললাম, 'না, বলা যাবে না।' তখন তার একবারেই শেষ অবস্থা। আমার মনে হয় তিনি আর আধা ঘণ্টা বেঁচেছিলেন।

শহীদ হাফিজুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

 ডেইলি স্টার:  টর্চার সেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পরের অনুভূতিটা কেমন ছিল?

আবুল বারক আলভী: প্রথমে আমার মায়ের কথা ভীষণভাবে মনে হলো। আমরা যেন আবার পুনর্জন্ম লাভ করলাম।

লিনু বিল্লাহ: বেঁচে ফেরাটা ছিল অলৌকিক। কীভাবে যে বেঁচে ফিরলাম, আজও ভাবি। আমি এখনও মাঝেমাঝে ঘুমের মধ্যে লাফ দিয়ে উঠি। এখনও এক ট্রমার ভেতর দিয়ে বেঁচে আছি।

 

Comments