Skip to main content
ফেব্রুয়ারি ২, ২০২৩  //  বৃহস্পতিবার
E-paper English
T
আজকের সংবাদ
জব্দ যানবাহনও পায় বিআরটিএর ফিটনেস সনদ মনে হয় ইউএনও-ডিসি তারাই দেশটার মালিক: এমপি দবিরুল বেরোবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, আহত ৪ মালয়েশিয়ায় বৈধ হতে ৫ দিনে ৫০ হাজার অভিবাসী কর্মীর আবেদন মরণোত্তর দেহদান: নন্দিতার কর্নিয়ায় চোখের আলো ফিরল ২ জনের জুট মিলের গুদামে মিলল ২০ হাজার মেট্রিকটন চাল ৪ মাস পর জামিনে মুক্ত রাজবাড়ীর সেই বিএনপি নেত্রী সোনিয়া ভাষা আন্দোলনের গণজোয়ার ছড়িয়ে পড়ে ফরিদপুরের মাটিতেও নাটোরে নিপাহ ভাইরাসে স্কুলশিক্ষার্থীর মৃত্যু অধ্যাপকেরা নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে চান না: শিক্ষামন্ত্রী সারাহ ইসলামকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা দেওয়ার দাবি হানিফের আইএমএফের ঋণের প্রথম কিস্তিতে ৪৭৬ মিলিয়ন ডলার পেল বাংলাদেশ ১০১ টাকায় ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক চবি চারুকলার শিক্ষার্থীদের রাত ১০টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ গাড়ির ভেতর ৫ ঘণ্টা, সিডনিতে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শিশুর মৃত্যু
The Daily Star Bangla
সাহসিকতা • সততা • সাংবাদিকতা
  • E-paper
  • English
আজকের সংবাদ
জব্দ যানবাহনও পায় বিআরটিএর ফিটনেস সনদ মনে হয় ইউএনও-ডিসি তারাই দেশটার মালিক: এমপি দবিরুল বেরোবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, আহত ৪ মালয়েশিয়ায় বৈধ হতে ৫ দিনে ৫০ হাজার অভিবাসী কর্মীর আবেদন মরণোত্তর দেহদান: নন্দিতার কর্নিয়ায় চোখের আলো ফিরল ২ জনের জুট মিলের গুদামে মিলল ২০ হাজার মেট্রিকটন চাল ৪ মাস পর জামিনে মুক্ত রাজবাড়ীর সেই বিএনপি নেত্রী সোনিয়া ভাষা আন্দোলনের গণজোয়ার ছড়িয়ে পড়ে ফরিদপুরের মাটিতেও নাটোরে নিপাহ ভাইরাসে স্কুলশিক্ষার্থীর মৃত্যু অধ্যাপকেরা নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে চান না: শিক্ষামন্ত্রী সারাহ ইসলামকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা দেওয়ার দাবি হানিফের আইএমএফের ঋণের প্রথম কিস্তিতে ৪৭৬ মিলিয়ন ডলার পেল বাংলাদেশ ১০১ টাকায় ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক চবি চারুকলার শিক্ষার্থীদের রাত ১০টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ গাড়ির ভেতর ৫ ঘণ্টা, সিডনিতে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শিশুর মৃত্যু
The Daily Star Bangla
বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারি ২, ২০২৩ | সাহসিকতা • সততা • সাংবাদিকতা
  • হোম
  • বাংলাদেশ
    • ঢাকা
    • সারাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
    • এশিয়া
    • বিশ্ব
  • মতামত
    • সম্পাদকীয়
    • অভিমত
    • সংবাদ বিশ্লেষণ
  • স্বাস্থ্য
  • খেলা
    • ক্রিকেট
    • ফুটবল
    • অন্যান্য খেলা
  • বাণিজ্য
    • অর্থনীতি
    • বিশ্ব অর্থনীতি
    • স্টার্টআপ
  • বিনোদন
    • টিভি ও সিনেমা
    • মঞ্চ ও সংগীত
    • অন্যান্য
  • জীবনযাপন
    • ফ্যাশন ও সৌন্দর্য
    • খাদ্য ও সুস্থতা
    • ভ্রমণ
  • সাহিত্য
    • সংস্কৃতি
    • শিল্প
    • ইতিহাস-ঐতিহ্য
  • শিক্ষা
  • প্রযুক্তি
    • বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, গেজেটস
    • অটোমোবাইল
  • প্রবাসে
    • অভিবাসন
    • পরবাস
    • যাওয়া-আসা
English T
  • হোম
  • বাংলাদেশ
    • ঢাকা
    • সারাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
    • এশিয়া
    • বিশ্ব
  • মতামত
    • সম্পাদকীয়
    • অভিমত
    • সংবাদ বিশ্লেষণ
  • স্বাস্থ্য
  • খেলা
    • ক্রিকেট
    • ফুটবল
    • অন্যান্য খেলা
  • বাণিজ্য
    • অর্থনীতি
    • বিশ্ব অর্থনীতি
    • স্টার্টআপ
  • বিনোদন
    • টিভি ও সিনেমা
    • মঞ্চ ও সংগীত
    • অন্যান্য
  • জীবনযাপন
    • ফ্যাশন ও সৌন্দর্য
    • খাদ্য ও সুস্থতা
    • ভ্রমণ
  • সাহিত্য
    • সংস্কৃতি
    • শিল্প
    • ইতিহাস-ঐতিহ্য
  • শিক্ষা
  • প্রযুক্তি
    • বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, গেজেটস
    • অটোমোবাইল
  • প্রবাসে
    • অভিবাসন
    • পরবাস
    • যাওয়া-আসা

  • ABOUT US
  • CONTACT US
  • SMS SUBSCRIPTION
  • ADVERTISEMENT
  • APPS
  • NEWSLETTER
ইতিহাস
মুক্তিযুদ্ধ

শাহজাহান সিদ্দিকী, বীর বিক্রম: মুক্তিযুদ্ধের অদম্য এক নৌ কমান্ডো

আহমাদ ইশতিয়াক
রোববার, নভেম্বর ২৭, ২০২২ ১০:১২ অপরাহ্ন
শাহজাহান সিদ্দিকী, বীর বিক্রম। ছবি: সংগৃহীত

সরকারের জ্যেষ্ঠ সচিব, বিনিয়োগ বোর্ডের চেয়ারম্যান, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গভর্নর, ডেসকোর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড নির্বাচনের নির্বাচন কমিশনার— কর্মজীবনে অজস্র গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। তবে শাহজাহান সিদ্দিকী, বীর বিক্রমের পরিচয় কেবল উচ্চপদস্থ সফল আমলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। তার সবচেয়ে বড় পরিচয়, তিনি এক অদম্য বীর মুক্তিযোদ্ধা।

তিনি বলতেন, 'আমার জীবনের সবচেয়ে সোনালি অধ্যায় মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ। দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য কিছুটা হলেও ভূমিকা রাখা।'

সর্বশেষ খবর দ্য ডেইলি স্টার বাংলার গুগল নিউজ চ্যানেলে।

১৯৭১ সালে শাহজাহান সিদ্দিকী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্র। ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনে ভীষণ উদ্বুদ্ধ হন তিনি। পরদিনই ঢাকা ছেড়ে চলে যান ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাড়িতে। বছর তিনেক আগে সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। সেই জ্ঞান কাজে লাগিয়ে স্থানীয় তরুণদের প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করেন।

২৫ মার্চ গণহত্যার রাতে ছিলেন তিনি ফুফুর বাড়িতে। পরদিন বাড়ি ফেরার পথে জানতে পারলেন গণহত্যার কথা। বাড়িতে এসে শুনলেন যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। ওই রাতেই স্থানীয় তরুণদের নিয়ে বাড়ি ছাড়লেন তিনি। এপ্রিলের শুরুতে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে হাজির হলেন ত্রিপুরায়। পথে পেলেন ক্যাপ্টেন হায়দারকে।

তাকে বললেন, 'আমি মিলিটারি ট্রেনিং নিয়েছি।' শুনে ক্যাপ্টেন হায়দার একটি মিলিটারি ম্যাপ দেখিয়ে বললেন, 'এতে কী লেখা আছে বলো তো।' ঠিকঠাক জবাব দেন শাহজাহান সিদ্দিকী। ক্যাপ্টেন হায়দারই তাকে নিয়ে গেলেন শালবন বিহারে। সেখানে শাহজাহান সিদ্দিকী রপ্ত করলেন যুদ্ধের নানা কৌশল।

মুক্তিযুদ্ধে মে মাসের প্রথম সপ্তাহে দেশজুড়ে নৌ অপারেশন চালানোর জন্য দেশের সীমান্তবর্তী বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে তরুণ মুক্তিযোদ্ধা বাছাই কার্যক্রম শুরু হয়। এই বাছাইয়ে অংশ নেন শাহজাহান সিদ্দিকী। উত্তীর্ণ হওয়ার পর তিনিসহ অন্য তরুণদের নৌ কমান্ডো হিসেবে গড়ে তোলার জন্য ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পলাশীতে নিয়ে যাওয়া হয়।

পলাশীতে প্রশিক্ষণ শুরুর আগে শাহজাহান সিদ্দিকীদের বলা হয়, অপারেশন সফল করার প্রয়োজনে প্রাণ উৎসর্গ করা লাগতে পারে।  নির্দ্বিধায় 'দেশের স্বাধীনতার জন্য জীবন বিসর্জন দিতে সম্মত হয়েই এই প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছি, যুদ্ধে আমার মৃত্যু ঘটলে কেউ দায়ী থাকবে না' লেখায় সম্মতিসূচক সই করেন শাহজাহান সিদ্দিকী।

টানা ৩ মাস কঠোর প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রস্তুত করা হয় তাদের। প্রশিক্ষণে এ থেকে এইচ পর্যন্ত ৮টি গ্রেডে শাহজাহান সিদ্দিকী পেয়েছিলেন এ গ্রেড। এ গ্রেড প্রাপ্তদের দায়িত্ব দেওয়া হয় পাকিস্তানি জাহাজে লিমপেট মাইন লাগানোর।

সিদ্ধান্ত হয় ২টি সমুদ্র বন্দর ও ২টি নদী বন্দরসহ বেশকিছু স্থাপনায় নৌ অপারেশন চালানোর। এর সাংকেতিক নাম দেওয়া হয় অপারেশন জ্যাকপট।

তখন ভারতের একটি ক্যাম্পে অবস্থান করছিলেন শাহজাহান সিদ্দিকী। একদিন ক্যাপ্টেন দাশ নামের এক ভারতীয় ক্যাপ্টেন তাকে ডাকলেন। তিনি 'আমি তোমায় যত শুনিয়েছিলেম গান' এবং 'আমার পুতুল আজকে যাবে শ্বশুরবাড়ি' এ ২টি গান শুনিয়ে শাহজাহান সিদ্দিকীকে বললেন, 'আপনি এই ২টি গান মুখস্ত করার চেষ্টা করুন।' শাহজাহান সিদ্দিকী আশ্চর্য হয়ে কারণ জানতে চাইলে ভারতীয় ক্যাপ্টেন বললেন, 'আপনাদের একটি অপারেশনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে। কুমিল্লার দাউদকান্দি ফেরিঘাট ধ্বংস করতে হবে।' সেখানেই কাজে লাগবে এই গান।

দাউদকান্দি ফেরিঘাট ছিল ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। এই ফেরিঘাট দিয়েই পাকিস্তানি পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ড পশ্চিমাঞ্চল কমান্ডের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ রাখত। ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাতায়াতের এটিই ছিল একমাত্র পথ।

লিমপেট মাইনের প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন নৌ কমান্ডোরা। ছবি: সংগৃহীত

 শাহজাহান সিদ্দিকী প্রথমে জানতেন না তাকে দলনায়ক নির্বাচিত করা হয়েছে। তিনি ভেবেছিলেন, হয়তো ফ্রান্স থেকে পালিয়ে আসা বাঙালি সাবমেরিনারদের কাউকে দলনায়কের দায়িত্ব দেওয়া হবে। কিন্তু পলাশীতে প্রশিক্ষণের সময় অসামান্য ফলাফলের জন্য এই অপারেশনের দলনায়ক নির্বাচন করা হয় শাহজাহান সিদ্দিকীকেই।

ক্যাপ্টেন দাশ তাকে বললেন, 'গান ২টি আবার শুনুন। কিন্তু কোথাও লিখে রাখতে পারবেন না। যখন আপনারা অপারেশনে যাবেন তখন আপনার সঙ্গে একটি ট্রানজিস্টর থাকবে। অপারেশনের সংকেত হবে গান ২টি।'

১১ আগস্ট শাহজাহান সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ৯ জন কমান্ডোর দলটিকে নামিয়ে দেওয়া হয় কুমিল্লার কংশনগর সীমান্তে। সেখান থেকে তারা হেঁটে ও নৌকায় করে পৌঁছান কুমিল্লার দাউদকান্দির বন্ধরামপুর গ্রামে।

বন্ধরামপুরের পীর আল্লাম কামাল সাহেবের বাড়িতে অস্থায়ী ক্যাম্পে আশ্রয় নেন তারা। ১৩ আগস্ট রাতে রেডিওতে বেজে উঠে পঙ্কজ মল্লিকের কণ্ঠে 'আমি তোমায় যত শুনিয়েছিলাম' গানটি। অপারেশনের প্রথম সংকেত পাওয়া মাত্রই সঙ্গীদের প্রস্তুতি নিতে বলেন শাহজাহান সিদ্দিকী।

১৪ আগস্ট গ্রামের ব্যাপারি সেজে দাউদকান্দি ফেরিঘাট ও ওই অঞ্চল রেকি করতে বের হন তিনি। সঙ্গী চটের বস্তায় লুকনো একটি স্টেনগান।

রেকিতে দেখতে পান, ২টি ফেরি নদীতে। সিদ্ধান্ত নিলেন, প্রতিটি ফেরিতে ৩টি করে মাইন স্থাপন করা হবে। আর তিনি নিজে পন্টুন উড়িয়ে দিবেন। নদীতে নেমে স্রোতও পর্যবেক্ষণ করেন শাহজাহান সিদ্দিকী। দেখলেন, স্রোত তেমন বেশি না। এই অবস্থায় তারা যদি ধানখেত দিয়ে নৌকা নিয়ে এসে আক্রমণ করেন তাহলে উদ্ধারকারী দল শুকনো অবস্থান না থাকায় পজিশন নিতে পারবে না। আর নৌ কমান্ডোদের ফিরে আসাটাও চরম ঝুঁকিপূর্ণ হবে।

তাই শাহজাহান সিদ্দিকী সিদ্ধান্ত নিলেন, অপারেশনের পর কমান্ডোরা স্রোতের অনুকূলে সাঁতার কেটে ভাটির দিকে আশ্রয় না নিয়ে স্রোতের বিপরীতে সাঁতার কেটে উত্তর দিকে নৌকায় ফিরে আসবেন।

অপারেশনের শুরুর আগে আরও দূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছিলেন শাহজাহান সিদ্দিকী। দেখা গেল একজন নৌ কমান্ডো কথা বলেন পাবনার আঞ্চলিক ভাষায়। ফলে রাজাকার বা হানাদাররা তার উচ্চারণ শুনে সন্দেহ করতে পারে। তাই তাকে বাদ দেওয়া হলো মূল অপারেশন থেকে।

অপারেশনের সময় নির্ধারণ করা হয় ১৫ আগস্ট দিবাগত রাতে। এদিন রাতে রেডিও আকাশবাণীতে বেজে উঠে 'আমার পুতুল আজকে যাবে শ্বশুরবাড়ি।' শাহজাহান সিদ্দিকী হিসেব করে দেখলেন, আজ রাত ১টা-২টার মধ্যেই আঘাত করতে হবে।

সন্ধ্যায় রওনা হলেন তারা। নৌ কমান্ডোদের পরনে সুইমিং কস্টিউম, সঙ্গে কমান্ডো নাইফ, লিমপেট মাইন ও একটি করে স্টেনগান। সঙ্গে নৌকার মাঝি এবং কাশেম ও মান্নান নামের ২ জন গাইড।

অপারেশন জ্যাকপটে ক্ষতিগ্রস্ত একটি জাহাজ। ছবি: সংগৃহীত

কিছুদুর এগোনোর পরই শুরু হলো প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টি। বৃষ্টির কারণে নৌকা আর সামনে যেতে পারছে না। মাঝি ও গাইডরা ভুল পথে চলে গেলেন। ভুলে রাজাকার অধ্যুষিত এক গ্রামে নৌকা ভিড়াতেই ডাকাত সন্দেহে চেঁচামেচি শুরু করল গ্রামবাসী।

এক পর্যায়ে দাউদকান্দি শহরের বৈদ্যুতিক আলোকরেখা দেখে সামনে এগিয়ে গেলেন তারা। বৃষ্টিতে ভিজে জ্বর বাঁধিয়ে ফেললেন গাইড মান্নান। কিছু দূরে একটি বড় নৌকা দেখতে পেলেন শাহজাহান সিদ্দিকী। নৌকাটি দাঁড় করাতেই গাইড মান্নান তাকে নামিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন। শাহজাহান সিদ্দিকী দেখলেন, এই অসুস্থ গাইডকে সঙ্গী করে নিলে পুরো অপারেশনই বানচাল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তখন তার সামনে খোলা ছিল ২টি পথ। প্রথমটি হলো অপারেশনের স্বার্থে গাইড মান্নানকে হত্যা করা। দ্বিতীয়টি হলো অপারেশন সেদিনের মতো স্থগিত করা।

এমন পরিস্থিতিতে যে কোনো অধিনায়কই গাইডকে হত্যা করতে বাধ্য হতেন। কারণ এর সঙ্গে জড়িয়ে আছেন গোটা দলের নিরাপত্তা। অসুস্থ গাইড যদি হানাদারদের হাতে ধরা পড়েন তাহলে নৌ কমান্ডোদের পুরো অপারেশন সম্পর্কে জেনে যাবে হানাদার বাহিনী। অন্যদিকে এদিনই যে কোনো মূল্যে এই অপারেশন বাস্তবায়ন করা লাগত তাদের। কারণ নৌ কমান্ডোদের সঙ্গে ওয়্যারলেস সেট ছিল না। আকাশবাণী থেকে গাওয়া ২টি গানকেই অপারেশনের সংকেত হিসেবে বেছে নিতে হয়েছিল তাদের।

এমন ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতেও মানবিকতার পরিচয় দিলেন শাহজাহান সিদ্দিকী। তিনি গাইডকে হত্যা না করে সেদিনের মতো অপারেশন স্থগিত করলেন।

পরদিন ১৬ আগস্ট সন্ধ্যায় রাতের খাবার খেয়েই সুইমিং কস্টিউম পরে ২টি নৌকায় চেপে বন্ধরামপুর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে দাউদকান্দি ফেরিঘাটের উদ্দেশে রওনা হলেন শাহজাহান সিদ্দিকীরা। রাত আনুমানিক ১টার দিকে দাউদকান্দি ফেরিঘাট থেকে ১ মাইল দূরে ধানখেতের মধ্যে বড় নৌকাটি রেখে ছোট নৌকায় ৩ জন করে মোট ৬ জন কমান্ডোকে টার্গেটের কাছে পাঠান শাহজাহান সিদ্দিকী। শেষ ট্রিপটিতে ছিলেন তিনি। এরপর নৌকা ফেরত নিয়ে যাওয়া হয়।

লিমপেট মাইন। ছবি: সংগৃহীত

তখন শাহজাহান সিদ্দিকীসহ ৬ জন কমান্ডো ফেরিঘাট থেকে সাঁতার কেটে ৩টি করে লিমপেট মাইন স্থাপন করেন। তারা যখন বড় নৌকায় ফিরে আসেন তখন রাত পৌনে ৩টা। এরপর দ্রুত বন্ধরামপুরের দিকে যাত্রা শুরু করেন। তারা রওনা হওয়ার ৫ মিনিট পরেই বিকট শব্দে একে একে ৯টি লিমপেট মাইন বিস্ফোরিত হতে শুরু করে। একটু পরেই পাকিস্তানি বাহিনী দাউদকান্দি ফেরিঘাট থেকে পশ্চিম দিকে নদীতে ও চরের দিকে টানা মেশিনগানের গুলি ও মর্টারের গোলাবর্ষণ শুরু করে। নৌ কমান্ডোরা যখন বন্ধরামপুরের দিকে যাচ্ছেন তখন দেখতে পান ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট থেকে কয়েকটি মিলিটারি লরি ও জিপ দাউদকান্দির দিকে ছুটে যাচ্ছে। তবে ততক্ষণে তারা রওনা হয়ে গেছেন বন্ধরামপুর শাহ কামাল পীরের বাড়ির উদ্দেশে। যখন তারা পীরের বাড়িতে এসে পৌঁছলেন তখন পীর উঠানে পায়চারি করছেন।

শাহজাহান সিদ্দিকী লিখেছিলেন পরের অংশ, 'ফজরের আজান হয়ে যাওয়ার একটু পরে আমরা শাহ কামাল হুজুরের বাড়ির ঘাটে এসে পৌঁছলাম। ঘাটে নেমেই দেখি হুজুর পায়চারি করছেন। আমাদের দেখেই বললেন, ''পুত (ছেলে) তোরা আইছস! গজবের মতো আওয়াজ শুইনা তো আমি মনে করছিলাম, পুতগোরে পাডাইলাম যুদ্ধ করতে। না জানি ওরা কী বিপদে পড়ছে! আল্লাহ! ওদের রহম কইরো।' আমি হুজুরের কথা শুনে হেসে বললাম, এই গজবের মতো আওয়াজ তো আফনের পুতেরাই কইরা আইছে।'

এই অবিস্মরণীয় দুর্ধর্ষ নৌ অপারেশনটি ছাড়াও আরও একাধিক অপারেশনে অংশ নিয়েছিলেন শাহজাহান সিদ্দিকী, বীর বিক্রম।

মুক্তিযুদ্ধ শেষে ফের বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনায় ফিরে যান তিনি। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী বিসিএস প্রথম ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পান। কর্মজীবনের পুরোটা সময় দেশকে সেবা দিয়ে গেছেন তিনি। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের সময়কার বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্র শাহজাহান সিদ্দিকীর কীর্তি সবকিছুর চেয়ে ব্যতিক্রম। সেই শাহজাহান সিদ্দিকী ছিলেন রূপকথার বীরের মতো। মুক্তিযুদ্ধে তার সাহসী নেতৃত্ব, দূরদর্শিতা, অসীম বীরত্ব তাকে চিরস্মরণীয় করে রাখবে।

সম্প্রতি প্রয়াণের মধ্য দিয়ে শারীরিকভাবে হয়তো শাহজাহান সিদ্দিকী চলে গেছেন, কিন্তু তার ত্যাগ আর বীরত্ব স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে দেশের ইতিহাসের পাতায়।

তথ্যসূত্র:

 ৭১ বীরত্ব বীরগাথা বিজয় প্রথম খণ্ড  

Related topic
মুক্তিযুদ্ধ / শাহজাহান সিদ্দিকী
Apple Google
Click to comment

Comments

Comments Policy

Related News

২ মাস আগে | সাহিত্য

সায়ীদ আহমেদ বীর প্রতীকের নেতৃত্বে মুকুন্দপুর বিজয়

১ মাস আগে | বাংলাদেশ

মুক্তিযুদ্ধে এক বিদেশি বন্ধুর অবিস্মরণীয় কীর্তি 

৩ দিন আগে | ইতিহাস

মিরপুর: মুক্তিযুদ্ধের শেষ রণাঙ্গন

মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ২ আসামি গ্রেপ্তার
২ দিন আগে | অপরাধ ও বিচার

মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ২ আসামি গ্রেপ্তার

১ মাস আগে | বাংলাদেশ

গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দাবি সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম ও স্বজনের

The Daily Star  | English
1h ago|Politics

UNOs, DCs, not MPs, running the country

Ruling Awami League lawmaker M Dabirul Islam today in parliament said UNOs and DCs, not the people's representatives, are running the country.

4h ago|Business

Bangladesh Bank sells US dollar at Tk 101 for first time

The Daily Star
Follow Us
  • ABOUT US
  • CONTACT US
  • SMS SUBSCRIPTION
  • ADVERTISEMENT
  • APPS
  • NEWSLETTER
© 2023 thedailystar.net | Powered by: RSI LAB
Copyright: Any unauthorized use or reproduction of The Daily Star content for commercial purposes is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action.